ভারতের সীমায় ঢুকে পড়ছে চিন, কড়া বার্তা বিদেশ মন্ত্রীর
লাদাখে ভারতের সীমায় ঢুকে পড়ছে চিনা সেনা। তা নিয়ে চিনকে কড়া বার্তা দিলেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রী। মেলবোর্নে বিদেশ মন্ত্রীদের বৈঠকের পাশে একটি সংবাদ সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে, বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শনিবার উল্লেখ করেছেন যে 'প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) বর্তমান পরিস্থিতি চিনের লিখিত চুক্তি উপেক্ষা করার কারণে বেড়েছে। সীমান্তে সৈন্য সংগ্রহ করবেন না।'
ভারতীয় ও চিনা সৈন্যদের মধ্যে পূর্ব লাদাখ সীমান্ত স্থবিরতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এই মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, 'হ্যাঁ, আমরা ভারত-চিন সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা করেছি কারণ আমাদের প্রতিবেশী এলাকায় কী ঘটছে সে সম্পর্কে আমরা একে অপরকে কীভাবে অবহিত করেছি সেটা বলা দরকার এবং এটি এমন একটি সমস্যা যেখানে অনেক দেশ বৈধভাবে আগ্রহ নেয়, বিশেষ করে যদি তারা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে হয়'। তিনি যোগ করেছেন, 'যখন একটি বড় দেশ লিখিত প্রতিশ্রুতি উপেক্ষা করে, আমি মনে করি এটি সমগ্র আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে ওঠে।"
সম্প্রতি জানা যায়, যে চিনা সৈন্যরা লাদাখে ২৮ জানুয়ারী ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিল এবং স্থানীয় লোকদের এই অঞ্চলে তাদের পশু চরাতে বাধা দেওয়ার একদিন পরে এই খবরটি সামনে আসে। নিওমার ব্লক ডেভেলপমেন্ট চেয়ারপার্সন, উরগেইন চোডন বলেছেন, '২৮শে জানুয়ারী এই ঘটনা ঘটেছিল, যখন পিএলএ সৈন্যরা আমাদের ভূখণ্ডে এসেছিল, তারা আমাদের নিজেদের এলাকা থেকে চারণ পালকে তাড়িয়ে দিয়েছিল। তারা কাউকে নিয়ে যায়নি, কিন্তু যাযাবর এবং পশুপালকে তাড়িয়ে দিয়েছে'।
এর আগে চুশুলে ১৩ ঘণ্টা ধরে চলল সেনা পর্যায়ের বৈঠক হয় ভারত চিনের। লাদাখের হটস্প্রিং এলাকা থেকে সেনা সরানোর উপরেই বেশি জোর দিয়েছিল দিল্লি। চুশুল-মলডো এলাকায় সকাল সাড়ে নটায় বসেছিল বৈঠক। সেটা চলে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। ভারতের হয়ে সেই সেনা পর্যায়ের বৈঠকেলাদাখের হটস্প্রিং এলাকা থেকে সেনা সরানোর উপরেই বেশি জোর দিয়েছে দিল্লি। ভারতের হয়ে সেই সেনা পর্যায়ের বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিন্দ্য সেনগুপ্ত। প্রতিনিধিত্ব করেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিন্দ্য সেনগুপ্ত।
চুশুল নিয়ে ১৪ বার সেনা পর্যায়ের বৈঠকে মুখোমুখি হয় দুই দেশ। পর পর ১৩ বার বৈঠকে তেমন কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি। কয়েকটি মাত্র জায়গায় সেনা সরানো হলেও পরিস্থিতি উত্তেজনা পূর্ণ হয়েছিল প্রথম থেকেই। শীত পড়ার আগে পর্যন্ত লাদাখের একাধিক জায়গায় শক্তি বাড়িয়েছে বেজিং। সেদেশের সীমান্তে সেনা বাহিনী যাতে শীতে ভাল করে থাকতে পারে তার জন্য একাধিক পদক্ষেপ করেছে বেজিং।বছরের প্রথম দিনেই গালওয়ান উপত্যকায় চিনের পতাকা উড়তে দেখা গিয়েিছল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল সেই ভিডিও। তাতে দেখা গিয়েছিল গালওয়ান উপত্যকায় উড়ছে চিনের পতাকা আর তার নীচে দাঁড়িয়ে সেদেশের জাতীয় সঙ্গীত গাইছে চিনা ফৌজ। এই নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছিল ভারতে। তার পরেই চিনের মুখোমুখি হয় ভারত। ১৪ তম বৈঠকে দিল্লির মূল ইস্যু ছিল হটস্প্রিং এলাকা থেকে সেনা সরানো। তার উপরেই জোর দিয়েছে ভারত। তারপরে আবারও এই ঘটনা।