জলবায়ু পরিবর্তন রোধ ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করতে পারে শতাব্দী প্রাচীন গাছগুলো, সংরক্ষণের দাবি বিজ্ঞানীদের
জলবায়ু পরিবর্তন রোধ ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করতে পারে শতাব্দী প্রাচীন গাছগুলো, সংরক্ষণের দাবি বিজ্ঞানীদের
সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, শত শত বছরের পুরনো গাছে পরিবেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে, বাস্তুতন্ত্রকে রক্ষা করতে সাহায্য। শুধু তাই নয়, গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পুরনো গাছগুলো জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ট্রেন্ডস ইন ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশন পত্রিকায় ইকোলজিস্টদের একটি দল ১৯ অক্টোবর এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনে পরিবেশের স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে এবং জীব জগৎকে বাঁচাতে শতাব্দী প্রাচীন পুরনো গাছগুলোকে রক্ষা করার উদ্যোগের আবেদন করা হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করতে পারে শতাব্দী প্রাচীন গাছগুলো
গিয়ানলুকা পিওভেসান, চার্লস এইচ. ক্যানন সহ অন্যান্য ইকোলজিস্টরা এই গবেষণায় লিখেছেন, শতাব্দী প্রাচীন বেশিরভাগ গাছ বর্তমানে হুমকির মুখে পড়ছে। এই গাছগুলোকে রক্ষা করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এই শতাব্দী প্রাচীন গাছগুলো একদিকে যেমন জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সাহায্য করে। তেমনি বিভিন্ন বাস্তুতন্ত্রকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। বিজ্ঞানীরা তাঁদের প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, যে গাছগুলো কয়েক শতাব্দী বাঁচে, তাদের ওপর বিশেষ যত্ন নিতে হবে। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা আমেরিকার হোয়াইট মাউন্টেনে ব্রিস্টেলকোন পাইনের উল্লেখ করেছেন। এই গাছগুলো পাঁচ হাজার বছর পর্যন্ত বাঁচে। ব্যাপক পরিমাণে কার্বন সঞ্চয় করতে পারে বলে গাছগুলো পরিচিত।
বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
বিজ্ঞানীরা তাঁদের গবেষণায় জানিয়েছেন, প্রাচীন গাছগুলি হল মাইকোরাইজাল সংযোগের উত্তম কেন্দ্র। বলা যেতে পারে প্রাচীন গাছগুলি হল মাইকোরাইজাল সংযোগের হটস্পট। ভূগর্ভস্থ ছত্রাকের সঙ্গে সিম্বিওটিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এর মাধ্যমে শতাব্দী প্রাচীন গাছ ভূগর্ভস্থ ছত্রাককে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় অনেক পুষ্টি সরবরাহ করে। ছত্রাকের সঙ্গে শতাব্দী প্রাচীন গাছের সিম্বিওটিক সম্পর্ক খরা কমাতে সাহায্য করে। বিজ্ঞানীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, এই শতাব্দী প্রাচীন গাছগুলোকে সংরক্ষণের জন্য কোনও ভূমিকা নেওয়া হচ্ছে না। যার ফলে পৃথিবীর বুক থেকে এই দীর্ঘজীবী গাছগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে।
দীর্ঘজীবী গাছ সংরক্ষণের আহ্বান
গবেষকরা এই দীর্ঘজীবী গাছগুলোকে রক্ষা করার জন্য একটি দ্বি-মুখী পদ্ধতির প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রথমত, এই প্রাচীন গাছগুলি থেকে জার্মপ্লাজম এবং মেরিস্টেম্যাটিক টিস্যুর সংরক্ষণের মাধ্যমে এই গাছগুলির সংরক্ষণ। তীয়, সম্পূর্ণ সুরক্ষা এবং বন পুনরুদ্ধারের একটি পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত। তাঁরা প্রতিবেদনে লিখেছেন, পুরাতন গাছগুলোর অনুকূল পরিবেশে নতুন করে লাগানো সঠিক সিদ্ধান্ত হবে। এরফলে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুতর সমস্যা রোধে কিছুটা সাহায্য হবে।
প্রাচীন গাছ রক্ষায় জাতীয় পরিকল্পনা
বর্তমানে, বন, বনভূমি, ঐতিহাসিক উদ্যান এবং শহুরে ও কৃষি এলাকায় প্রাচীন গাছ রক্ষা জাতীয় পরিকল্পনা সেভাবে গ্রহণ করা হয় না। জীব বৈচিত্র ও বনাঞ্চলের খণ্ডতা রক্ষা করতে এই গাছগুলোকে সংরক্ষণের একটি বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। এই বিষয়ে প্রথমে একটি গবেষণা, তারপর অনুকূল পরিবেশে এই বৃক্ষগুলোকে রোপনের প্রয়োজন। বিজ্ঞানীরা জীব বৈচিত্রের অখণ্ডতা ধরে রাখতে গাছগুলোকে সংরক্ষণ ও বনাঞ্চল বৃদ্ধি করার আহ্বান জানিয়েছেন।
Diwali Gift from PM Modi: ৭৫ হাজার বেকার যুবক-যুবতীদের জন্যে বড় খবর! রইল বিস্তারিত