দেশের কোন কোন জায়গায় কত শতাংশ পুরুষ ও মহিলা তামাক ব্যবহার করেন, জানেন আপনি
দেশের কোন কোন জায়গায় কত শতাংশ পুরুষ ও মহিলা তামাক ব্যবহার করেন, জানেন আপনি
ছেলেরা তামাকজাত দ্রব্য সেবন করেন, তা আমাদের জানা। কিন্তু বর্তমানে কম যাচ্ছেন না মেয়েরাও। কিশোররাও এখন সেই তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। আর এর জন্য কিন্তু রোগের প্রবণতাও বাড়ছে। ১৫ বছরের বেশী বয়সী মহিলাদের মধ্যে ৯ শতাংশ মহিলা ও ৩৮ শতাংশ তামাকজাত দ্রব্য প্রতিনিয়ত ব্যবহার করেন। শুধু যে তাঁরা তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করেন, তা নয় আল্যকোহলও খান সেই সকল ব্যক্তি। ১৫ বছরের বেশী বয়সী পুরুষদের মধ্যে ১৯ শতাংশ পুরুষ তা পান করে থাকেন। আর মাত্র ১ শতাংশ মহিলা আল্যকোহল পান করে থাকেন। ২০১৯ শাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সমীক্ষা করে এমনটাই জানিয়েছে জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষা ৫ (National Family Health Survey 5) ।
সমীক্ষায় কী উঠে এল
সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ৭০৭ টি জেলাজুড়ে ৬.৩৭ লক্ষ পরিবারে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। যেখানে ২৮ টি রাজ্য ও ৮ টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আছে। তাঁদের মধ্যে কমপক্ষে ১.০৭ লক্ষ পুরুষ এবং ৭.২৪ লক্ষ মহিলার মধ্যে এই সমীক্ষাটি করা হচ্ছে।
কোন মহিলারা বেশী তামাক সেবন করেন
জানেন কোন মহিলাদের তামাক ব্যবহার করার প্রবণতা বেশি? ১৯ শতাংশ তফসিলি উপজাতির মহিলা ও ৫১ শতাংশ অন্যান্য জাতি/উপজাতি গোষ্ঠীর তামাক ব্যবহার করার সম্ভাবনা সবথকে বেশি। এমনটাই উঠে এসেছে সমীক্ষায়। আর জানা যায়, পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদের মধ্যে তামাকের ব্যবহার শহরের থেকে গ্রামে বেশি। প্রায় ১৫ % মহিলা যারা স্কুলে পড়াশুনা করেন না, বা মাত্র ৫ বছর স্কুলে পড়াশুনা করেছেন, তাঁদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের চাহিদা বেশী।
কোন জায়গার ছেলেরা বেশী তামাক ব্যবহার করেন
মিজোরামে ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সী পুরুষদের মধ্যে তামাকের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। সেখানে ৭৩% পুরুষই তামাক ব্যবহার করে থাকেন। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ৫৯ শতাংশ মানুষ তামাক সেবন করে থাকেন। মণিপুরে ৫৮ শতাংশ পুরুষ তামাক ব্যবহার করে থাকেন।
কত শতাংশ মহিলারা তামাক ব্যবহার করেন
তামাক ব্যবহার যে শুধু ছেলেরা ব্যবহার করে থাকেন, তা নয়। পিছিয়ে নেই নারীরাও। জেনে নিন তাঁদের শতাংশ। মহিলাদের মধ্যে তামাকের ব্যবহারও মিজোরামে সবচেয়ে বেশি, ৬২ শতাংশ মহিলাই সেখানে তামাক ব্যবহার করে থাকেন। তারপরেই আসে ত্রিপুরা, ৫১ শতাংশই মহিলা তামাক সেবন করে থাকেন।
মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ছত্তিশগড়, উত্তর-পূর্ব রাজ্য, মহারাষ্ট্রের উত্তর অংশ, পশ্চিম গুজরাট এবং দক্ষিণ রাজস্থানের বেশিরভাগ জায়গাতেই মহিলারা তামাক সেবন করে থাকেন। লাদাখ, উত্তরাখণ্ড, মহারাষ্ট্রের বেশিরভাগ অংশ, কর্ণাটক, রাজস্থানের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিম গুজরাতেরও তামাকের ব্যবহার বেশি, সেখানে ৩০-৪০ শতাংশ মহিলা তামাক ব্যবহার করেন। জনসংখ্যার প্রায় ৩০% নীচে তামাক ব্যবহার করে থাকেন পঞ্জাব ও দক্ষিণ রাজ্যে।
বাড়ছে অ্যালকোহলের চাহিদা
এখন
কিন্তু
মহিলাদের
অ্যালকোহল
খাওয়ার
বেশ
একটা
চাহিদা
আছে।
১৫
বছর
বা
তার
বেশি
বয়সী
মহিলাদের
মধ্যে
অ্যালকোহল
ব্যবহার
করার
চাহিদা
সবথেকে
বেশি
অরুণাচল
প্রদেশে।
যা
২৪
শতাংশ।
সিকিমে
১৬
শতাংশ
মহিলা
অ্যালকোহল
খান।
কোন জায়গার পুরুষরা বেশী অ্যালকোহল ব্যবহার করেন
পুরুষদের মধ্যে অ্যালকোহল ব্যবহার সবচেয়ে বেশি অরুণাচল প্রদেশে, ৫৩ শতাংশ ছেলে অ্যালকোহল খেয়ে থাকেন। তেলেঙ্গানায় ৪৩ শতাংশ পুরুষ এটি খান। তবে, এর চাহিদা কিন্তু লাক্ষাদ্বীপে অনেকটাই কম। তেলেঙ্গানা, অরুণাচল প্রদেশ, আসামের উপরের ব্রহ্মপুত্র অঞ্চল, ঝাড়খণ্ড, বস্তার কয়েকটি জেলায় পু
পুরুষদের মধ্যে ১৫ বছর বা তার বেশি অ্যালকোহল সেবনের অনুপাত ৪০ শতাংশ বা তার বেশি। ছত্তিশগড় ও ঝাড়খণ্ড, ওড়িশার ছোট নাগপুর অঞ্চলে অ্যালকোহলের চাহিদা আছে। ছত্তিশগড়, উত্তরাখণ্ড, মণিপুর, মেঘালয়, ত্রিপুরা ওড়িশার কয়েকটি জেলায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মানুষ অ্যালকোহল সেবন করে থাকেন। ভারতের বাকি রাজ্যগুলিতে অ্যালকোহল সেবনের মাত্রা একটু কম। তবে, তফসিলি উপজাতির প্রায় ৬ শতাংশ মহিলাই অ্যালকোহল পান করে থাকেন।
পঙ্কজ চতুর্বেদী কী জানালেন
সেন্টার ফর ক্যান্সার এপিডেমিওলজি, টাটা মেমোরিয়াল সেন্টারের ডেপুটি ডিরেক্টর পঙ্কজ চতুর্বেদী বলেন, তামাক প্রায় প্রতি বছর ১৩ লক্ষ মানুষের ক্ষতি করে। শুধু যারা সেবন করছেন, তাঁদের যে ক্ষতি হচ্ছে, তা কিন্তু নয়, আশেপাশের মানুষেরও কিন্তু অনেকটাই ক্ষতি হচ্ছে। তিনি আর বলেন, ভারতে মৃত্যু ও রোগের দ্বিতীয় বৃহত্তম কারণই হল অ্যালকোহল। বর্তমানে কিশোরদেরও মদ্যপান বাড়ছে। আমাদের রেস্তোরাঁর বাইরে বোর্ড দিয়ে সতর্ক করা দরকার। যে কম বয়সীদের মদ্যপান বেআইনি ও সেইসঙ্গে অপরাধীদের রিমান্ড হোমে পাঠানো।