লক্ষ্য ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন! ২০২৩-এর বাজেট কি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করবে বিজেপিকে
২০২৪ সালে দেশের সাধারণ নির্বাচনকে উপেক্ষা করার প্রশ্নই নেই। শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে যে কোনও শাসক দলই সেই দিকে লক্ষ্য রাখবে। বিজেপিও তা উপেক্ষা করতে পারেনি।
২০২৩-২৪ আর্থিক বছরের কেন্দ্রীয় বাজেট কি ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করতে সফল হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছে, যুক্তিসহ্গত রাজনীতি ও সুদক্ষ অর্থনীতির সহাবস্থানে বিজেপি উত্তরণের পথ খুঁজছে বাজেটে। ২০২৪-এর নির্বাচনের আগে শেষ পূর্ণ বাজেটকে বিজেপি তাই জনমুখী করার চেষ্টা করেছে।
আদতে ২০২৩-এর এই বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন রাজনৈতিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সবরকম চেষ্টা করেছেন। তিনি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে রাজস্ব শৃঙ্খলায় বাঁধতে চেয়েছেন দেশকে। প্রত্যক্ষ কর কমানোর পাশাপাশি ভবিষ্যতের প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ, পরিকাঠামো গড়ে তোলা, স্থানীয় উৎপাদনে উৎসাহিত করার প্রয়াস নিয়েছেন।
২০২৪ সালের নির্বাচনকে উপেক্ষা করার কোনও প্রশ্নই নেই। আগামী বছর দেশের সাধারণ নির্বাচন। ফলে যে কোনও শাসক দলই সেই দিকে লক্ষ্য রাখবে। বিজেপিও তা উপেক্ষা করতে পারেনি। রাজনৈতিক ভিত্তির উপরই ২০২৩-এর বাজেট করা হয়েছে এবং তা ২০২৪-কে টার্গেট করে। তা সত্ত্বেও যে দিশা দিয়েছে এই বাজেট তাতে রাজনৈতিক পরীক্ষায় পাস করিয়ে দিতে পারার মতো উপকরণ রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিজেপি দলয়ি শহুরে ধনী শ্রেণির উপর ভিত্তি করে জয়লাভ করলেও তাদের বহু শ্রেণির নাগরিক মহলে একটা ভিত্তি রয়েছে। শহরতলির বেতনভোগী মধ্যবিত্ত ভারতীয়দের বিশাল অংশ, অল্পবয়সী উদ্যোক্তারা বা নিম্ন মধ্যবিত্ত কর্মী, গ্রামীণ এলাকায় জমির মালিক বা ক্ষুদ্র কৃষক এবং ভূমিহীন শ্রমিকদের মধ্যেও বিজেপির ভিত্তি রয়েছে।
রাজনৈতিক
বিশেষজ্ঞরা
মনে
করেন,
এই
বৃহৎ
এবং
ভিন্নধর্মী
শ্রেণিগুলির
১০
জনের
মধ্যে
পাঁচজন
নরেন্দ্র
মোদীকে
সমর্থন
করেন।
তবে
সেই
পাঁচজনের
সবাই
আবার
তাঁর
দলকে
সমর্থন
করেন
না।
২০১৪
ও
২০১৯
সালের
লোকসভা
নির্বাচনে
তা
প্রমাণিত
হয়েছে।
সেই
নিরিখে
নিশ্চিতভাবে
বলা
যায়
কেন্দ্রের
এই
বাজেট
সকল
শ্রেণিকেই
ছুঁয়ে
গিয়েছে।
দেশব্যাপী
বিজেপির
যে
জনপ্রিয়তা
এখন
রয়েছে,
সেখানেও
হিন্দু
উচ্চ
বর্ণের
পাশাপাশি
অন্যান্য
অনগ্রসর
শ্রেণি,
দলিত
উপজাতি
এবং
উত্তর,
পশ্চিম,
মধ্য
এবং
পূর্ব
ভারতে
উপজাতিদের
মধ্যেকারও
বিশাল
একটা
অংশ
রয়েছে।
নির্মলা
সীতারামনের
বাজেট
২০২৪-এর
আগে
তাই
ছিল
একটা
পরীক্ষা
ক্ষেত্র।
সেখানে সমস্ত শ্রেণির মানুষেরই মন জয়ের চেষ্টা করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী যখন কারিগরদের জন্য হস্তশিল্পে বিনিয়োগ বাড়ানোর কথা বলেছেন, তিনি ওবিসি, দলিত, উপজাতি এবং মহিলাদের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। সরকার তাদের জীবিকার সমস্যাগুলি ভুলে যায়নি। ভৌগলিকভাবে যাঁরা অবহেলিতের দলের তাঁজের জন্য বার্তা দিয়েছেন যে, আর অবহেলিত থাকবে না। উপজাতীয় গোষ্ঠী উন্নয়ন মিশনের জন্য ১৫ হাজার কোটি বরাদ্দ করেছেন, ৭৪৮টি উপজাতীয় স্কুলের জন্য ৩৮ হাজারেরও বেশি শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ করার কথা বলেছেবন।
সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব এবং মধ্য ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে এ বছর নির্বাচন হতে চলেছে। সেখানে যথেষ্ট উপজাতীয় জনসংখ্যা রয়েছে৷ তাদের দিকে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে এই বাজেটে। কৃষি ত্বরণ তহবিলের কথা বলে বা কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি করে কৃষক সমাজকে আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছেন। ছোটো ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন। এমনভাবেই প্রতিটি ক্ষেত্রকে ছুঁয়ে বাজেট তৈরি করা হয়েছে। ফলে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে নির্মলার এই বাজেটকে পাস-মার্ক দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
Defence Budget 2023: চিন-পাকিস্তানকে চ্যালেঞ্জ! প্রতিরক্ষা বাজেট কয়েক গুণ বাড়াল মোদী সরকার