বঙ্গ বিধানসভা ভোট থেকে কৃষি আইন প্রত্যাহার, ঘটনাবহুল চলতি বছরের রাজনীতি
বঙ্গ বিধানসভা ভোট থেকে কৃষি আইন প্রত্যাহার, ঘটনাবহুল চলতি বছরের রাজনীতি
২০২০তে কোভিড আছড়ে পড়ার পরের বছর। আস্ত একটা মহামারির দ্বিতীয় বছর ২০২১। মহামারি পেরিয়ে নিউ নর্ম্যালে ফেরস্র বছরও বটে। এই বছর যতই কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ুক না কেন। রাজনৈতিক দিক দিয়ে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ ছিল গোটা বছরটি৷ বর্ষশেষে দেখে নেওয়া যাক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক চড়াই-উতরাইগুলি।
এই বছর ভারতীয় রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে শুরু করলে প্রথমেই বলতে হয় পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের কথা। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ১৮টি আসন পেয়ে অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী ছিল বিজেপি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসকে শাসকের আসন থেকে সরাতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল তারা। মার্চ-এপ্রিলে কোভিডের ভ্রুকুটি এড়িয়েই চলেছিল প্রচার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেকেই একাধিক জনসভা করেছিলেন রাজ্যজুড়ে। একটা নির্বাচন জিততে যা যা প্রয়োজন হয়, প্রত্যেকটা চাল দিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলি।
২০২১ বঙ্গ-বিধানসভা নির্বাচন
মুসলিম তোষণ থেকে শুরু করে তোলাবাজি, দুর্নীতি একাধিক অস্ত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধেছিলেন গেরুয়া নেতারা। তবে এতে লাভের লাভ হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমাণ করে ছেড়েছেন, 'বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়'। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য নবান্নের চোদ্দতলায় বসেছেন মমতা৷ তবে শুধুই বিজয় নয়, এই নির্বাচনে তৃণমূল সার্বিকভাবে জিতলেও নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর কাছে হেরেছেন মমতা৷ তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অন্যতম কালো দাগ বলাই যায় এই ঘটনাকে। পরে ভবানীপুরে রেকর্ড মার্জিনে বিজেপি প্রার্থীকে হারালেও বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দাগ মোছার নয়।
পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া কেরলেও মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। সেখানেও দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় বসেছেন পিনারাই বিজয়ন৷ তামিলনাড়ু আবার পরিবর্তনের মেলা দেখেছে। ডিএমকে দলের এম কে স্টালিন গদিচ্যুত হয়েছেন। অন্যদিকে অসাম এবং পদুচেরিতে জিতেছে বিজেপি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সভায় রদবদল
রাজ্যগুলিতে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঠিক যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিসভার রদবদল। রেলওয়ে, স্বাস্থ্য, আইনবিভাগ, প্রযুক্তি সহ একাধিক বিভাগে নতুন মন্ত্রীরা দায়িত্ব পেয়েছেন। অতিমারি চলাকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছেন মনসুখ মাণ্ডব্য। রেলওয়ে এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছেন অশ্বিনী বৈষ্ণব। অনুরাগ ঠাকুর দায়িত্ব পেয়েছেন তথ্য এবং সম্প্রসারণ বিভাগের। নতুনভাবে তৈরি সহায়তা মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
পাঞ্জাবে মুখ্যমন্ত্রী বদল
এই বছরের রাজনৈতিক ঘটনাবলির কথা বলতে শুরু করলে পঞ্জাবের কথা না বললেই নয়৷ আগামী বছরেই পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই পঞ্জাব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পান নভজ্যোত সিং সিধু। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংকে সরিয়ে দলিত নেতা চরঞ্জিত সিং চান্নিকে সেই পদে বসায় কংগ্রেস শিবির। কংগ্রেস ত্যাগ করেন অমরিন্দর। এই মুহূর্তে পঞ্জাব লোক কংগ্রেস দল প্রতিষ্ঠা করে আগামী নির্বাচনে লড়তে চলেছেন তিনি।
কৃষি আইন প্রত্যাহার
বছরের একেবারে শেষে ষোলোকলা পূর্ণ হয় কৃষক আন্দোলনের। ২০২০ র শেষের দিকে শুরু হওয়া কৃষক আন্দোলনের ফল মেলে এই বছরের নভেম্বরে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের৷ সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে এই বিল প্রত্যাহারও করা হয়৷