সিএএ–এনআরসি নিয়ে গত একমাসে ৮২টি প্রতিবাদ–বিক্ষোভের সাক্ষী এই শহর
সিএএ–এনআরসি নিয়ে গত একমাসে ৮২টি প্রতিবাদ–বিক্ষোভের সাক্ষী এই শহর
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন হোক বা নাগরিকপঞ্জী, দেশজুড়ে এই দুই ইস্যু নিয়ে বিগত বেশ কয়েকমাস ধরে প্রতিবাদ-আন্দোলনে মুখর হয়েছে সাধারণ মানুষ। তবে এই দুই বিষয়কে ঘিরে সবচেয়ে বেশি উত্তাল দিল্লি। যদিও দিল্লির পাশাপাশি বেঙ্গালুরুতেও দেখা গিয়েছে অগণিত বিক্ষোভ আন্দোলন। জানা যাচ্ছে, অন্যান্য তকমার পাশাপাশি খুব শীঘ্রই বেঙ্গালুরু 'প্রতিবাদ শহর'-এর তকমাও পাবে। তার কারণ এই শহর সাক্ষী রয়েছে গত একমাসে ব্যাপক হারে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়েছে, যা ইতিহাস গড়েছে।
একমাসে ৮২টি প্রতিবাদ–বিক্ষোভ
১২ ডিসেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত বেঙ্গালুরুতে ৮২টি প্রতিবাদ হয়েছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) নিয়ে প্রথম প্রতিবাদ শুরু করে কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি। সিটি পুলিশ কমিশনার ভাস্কর রাও জানান যে, দিল্লিতেও অনুরূপ বিক্ষোভ হয়েছে। প্রসঙ্গত, ১৫ ডিসেম্বর দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সিএএ-বিরোধী ও এনআরসি নিয়ে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের সময়ই পুলিশ সেখানে ঢুকে তাঁদের মারধর করে এবং গ্রেফতার করার অভিযোগ ওঠে। এরপরই উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা দেশ। এরপর থেকেই বেঙ্গালুরুতেও আন্দোলনের আঁচ এসে পড়ে। প্রায় প্রতিদিনই সিটি পুলিশ কমিশনারের আটটি অফিসের কাছে ২০টি করে মঞ্চ বেধে প্রতিবাদ করার অনুমতি চেয়ে আবেদন আসতে থাকে। অধিকাংশ আবেদনকেই মঞ্জুরি দেওয়া হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
অধিকাংশই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ
১৫ ডিসেম্বরের পর থেকে শুরু করে বেঙ্গালুরুতে প্রত্যেক সপ্তাহেই ২ থেকে ৪টি করে প্রতিবাদ-আন্দোলন হত। কিন্তু এরপর থেকে সিটি পুলিশ প্রতিবাদ-আন্দোলনকে কমাতে, তার আবেদনগুলিকে মঞ্জুরি দেওয়া বন্ধ করল। বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ চেতন সিং রাঠোর সবচেয়ে বেশি প্রতিবাদের সাক্ষী থেকেছেন। তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বরেই আমি ৪০টি প্রতিবাদ করার আবেদন পেয়েছি, যার মধ্যে ৩৫টি আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। বাকীগুলি বাতিল করতে হয়েছিল কারণ শহরে (১৮ ডিসেম্বর থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত) ১৪৪ ধারা চলাকালীন এই প্রতিবাদগুলি হওয়ার কথা ছিল।' সেন্ট্রাল ডিভিশনের অন্তর্গত টাউন হলে প্রতিবাদ সভায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক জমায়েত হয়েছিল, এরপরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জমায়েত হয় ওয়েস্ট ডিভিশনের ফ্রিডম পার্কে। বেঙ্গালুরুতে এই দু'টোই সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ ছিল। অতিরিক্ত কমিশনার অফ পুলিশ (ওয়েস্ট) উমেশ কুমার বলেন, ‘ভাগ্যবশত বেঙ্গালুরুতে বেশিরভাগ প্রতিবাদই ছিল শান্তিপূর্ণ এবং আমরা যখনই খবর পেয়েছি যে কোনও সংগঠন নিয়ম ভাঙছে আমরা সঙ্গে সঙ্গে সিআরপিসির অন্তর্গত মামলা করেছি।'
পুলিশ সামলেছে গোটা শহরের প্রতিবাদ কর্মসূচী
পুলিশ কমিশনার ভাস্কর রাও বলেন, ‘এটা খুবই পরিশ্রম ও বিধ্বস্তের কাজ, কিন্তু আমরা ক্রমাগত সংগঠনদের সঙ্গে থাকতাম এবং আইন-শৃঙ্খলাকে বজায় রাখতাম। প্রতিবাদ করার গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে সকলের, তবে সেটা ততক্ষণই যতক্ষণ না তা অন্যকে প্রভাবিত করছে। সম্প্রতি আমরা শহরে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছি যাতে পুরো শহর পুলিশের নজরে থাকে। যারা আইন ও আমাদের বিশ্বাস ভাঙবে তাদের শাস্তি পেতে হবে। আমরা খুব ধৈয্যের সঙ্গে আমাদের দায়িত্ব পালন করছি।' ১৮ থেকে ২১ ডিসেম্বর ১৪৪ ধারা শহরে চলাকালীন ১২০ জনকে আটক করা হয়েছে এবং পরে সেইদিনই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
সুপ্রিমকোর্টে ওদের আবেদন খারিজ হবে, বললেন নির্ভয়ার মা