অনশনে বসার কয়েক ঘণ্টা আগেই ১৮০ ডিগ্রি বদল, কৃষি আইনকে সমর্থন আন্না হাজারের!
শনিবার মহারাষ্ট্রে নিজের শহর আহমেদনগর থেকে অনির্দিষ্টকালের অনশন শুরু করার কথা ছিল আন্না হাজারের। তবে সেখান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে এবার কৃষি আইনকে সমর্থন জানালেন আন্না হাজারে। এবং তিনি আর অনশনে বসছেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। এর আগে কৃষকদের দাবির বিষয়ে একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে পাঠিয়েছিলেন আন্না হাজারে। এর জবাবে কেন্দ্র তাঁকে জানায় যে কৃষকদের ইৎপাদনের উপর ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ৫০ শতাংশ বাড়িয়েছে তারা। এই কথা জানিয়েই অনশনে বসবেন না আন্না হাজারে। এদিন আন্না হাজারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। তাঁকে পাশে বসিয়েই অনশন বাতিলের কথা জানান আন্না।
কী বললেন আন্না হাজারে
তিনি বলেন, 'আমি বিভিন্ন ইশুতে আন্দোলন করেছি। শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করা অপরাধ নয়। কৃষকদের দাবি দাওয়া নিয়ে গত চার বছর ধরে আওয়াজ তুলেছি। তাঁরা ফসলের সঠিক দাম না পেয়ে আত্মহত্যা করছে। কেন্দ্রের তরফে চিঠি পেয়েছি, সরকার এমএসপি ৫০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমার ১৫ দফা দাবির উপর সরকার কাজ পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই আমি আগামীকাল অনশনে বসব না।'
এর আগে যা বলেছিলেন আন্না হাজারে
এর আগে প্রেস বিবৃতি দিয়ে ৮৪ বছরের এই সমাজকর্মী বলেছিলেন, 'গত চার বছর ধরে কৃষকদের হয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছি। কৃষকদের বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ করছে না সরকার। সরকার কৃষকদের প্রতি সহানুভূতিশীল নয়।' এছাড়া আন্না হাজারে আরও বলেছিলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকারের সামনে আবার আমরা আমাদের দাবি জানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীকে গত ৩ মাসে ৫ বার চিঠি লিখেছি। সরকারি প্রতিনিধিরা আলোচনা করছেন, তবে এই দাবিদাওয়া নিয়ে তাঁরা স্পষ্ট কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারছেন না।'
আন্নার দীর্ঘ আন্দোলনের ইতিহাস
উল্লেখ্য, লোকপাল বিলের দাবিতে গান্ধিবাদী অনশন আন্দোলনের জন্য পরিচিতি আন্না হাজারে দীর্ঘদিন অনশন করেছিলেন। সেই চাপে পড়েই নতি স্বীকার করেছিল সরকার। সংসদে পাশ হয় লোকপাল বিল। এবার তিনি কৃষকদের দাবির পক্ষে দাঁড়িয়ে আন্দোলন শুরু করলেন। শনিবার মহারাষ্ট্রে নিজের শহর আহমেদনগর থেকে অনির্দিষ্টকালের অনশন শুরু করার কথা ছিল আন্না হাজারের।
পিছু হটছেন না দিল্লি সীমান্তে থাকা কৃষকরা
এদিকে আন্না হাজারে পিছু হটলেও, পিছু হটছেন না দিল্লি সীমান্তে থাকা কৃষকরা। ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের নেতা নরেশ টিকাইত মহাপঞ্চায়েত ডেকেছিলেন৷ উত্তর প্রদেশের মুজফ্ফরনগরে এই মহাপঞ্চায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছিল৷ সেখানে প্রচুর সংখ্যায় কৃষক জমা হয়েছিলেন৷ এই নরেশ টিকাইতের ভাই রাকেশ টিকাইত ৷ যিনি কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত৷ শুক্রবার যে জায়গায় এই মহাপঞ্চায়েত অনুষ্ঠিত হয়, সেখান থেকে গাজিপুর সীমানার দূরত্ব প্রায় ১৫০ কিলোমিটার৷ কৃষকদের নিয়ে সেখানেই আন্দোলন করছেন রাকেশ৷
গাজিপুর সীমানায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশাল বাহিনী
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে গাজিপুর সীমানায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশাল বাহিনী হাজির হয়েছিল৷ খবর ছড়ায়, পুলিশের উদ্দেশ্য ছিল বিক্ষোভকারী কৃষকদের ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়া৷ তার পরই নরেশ টিকাইত এই মহাপঞ্চায়েতের ডাক দেন৷ সেখানেই দলে দলে মানুষ যোগদান করেন৷ কিন্তু সেখানে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি৷