ফের বাবরি মসজিদ-রাম মন্দির ইস্যুতে বিতর্কের আভাস, রাজীব গান্ধীকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি তাঁর বন্ধুর
রামমন্দির বিবাদ ইস্যুতে অনেকেরই ধারণা যে ১৯৮৬ সালে বাবরি মসজিদের দরজার তালা খোলার নেপথ্যে ছিলেন রাজীব গান্ধী। তবে এবার রাজীব গান্ধীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসাবে পরিচিত ওয়াজাহাত হাবিবুল্লাহ তাঁর বইতে দাবি করেন যে রাজীব এই বিষয়ে কিছু জানতেন না।
রাজীব গান্ধী রামমন্দির নির্মাণের পক্ষে ছিলেন?
হাবিবুল্লাহ জম্মু ও কাশ্মীর ক্যাডারের একজন আইএএস অফিসার। রামমন্দির অধ্যায়ের যেই পর্বের উল্লেখ করা হচ্ছে, সেই সময় প্রধানমন্ত্রীর দফতরে কাজ করছিলেন হাবিবুল্লাহ। গতবছর অযোধ্যার জমি বিবাদ মামলার নিষ্পত্তি ঘটিয়ে শীর্ষ আদালত জমিটি রামলালা বিরাজমানকে দেওয়ার রায় ঘোষণা করেন। এদিকে রামমন্দির নিয়ে বিজেপির পালের হাওয়া কাড়তে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল যে রাজীব গান্ধী রামমন্দির নির্মাণের পক্ষে ছিলেন।
রাম মন্দিরের তালা খোলা নিয়ে কী বলেছিলেন রাজীব
তবে কংগ্রেসের এহেন দাবিকে নস্যাৎ করে হাজিবুল্লাহ নিজের বইতে লেখেন, 'আমি প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম মন্দিরের তালা খোলার বিষয়ে তিনি জানতেন কিনা। তাতে তিনি আমাকে জবাব দিয়েছিলেন, কোনও সরকারেরই উপাসনার জায়গা নিয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। আমি এই বিষয়ে বীর বাহাদুর সিংকে (তৎকালীন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী) জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তবে আমার মনে হয় এর পিছনে ছিলেন অরুণ নেহরু এবং মাখল লাল ফতেদার। যদি তা সত্যি হয়, তবে আমাক কোনও একটি পদক্ষেপ নিতে হবে।'
১৯৮৬ সালের রায়ের দীন কোথায় ছিলেন রাজীব?
১৯৮৬ সালে ফৈজাবাদের আদালত রাম জন্মভূমির তালা খোলার এবং সেখানে হিন্দুদের প্রার্থনা করার অধিকার প্রদান করে রায় দিয়েছিল৷ তবে যেদিন এই রায়দান করা হয়, সেদিন নাকি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী খরা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।
পরবর্তীতে রাম মন্দির নিয়ে কী নির্দেশ দেন রাজীব?
তবে পরবর্তীতে ১৯৮৯ সালের ১৪ অগাস্ট অযোধ্যার বিতর্কিত জমিটিতে যেভাবে পুজো চলছে তা চালু রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। এর পরেই রাজীব গান্ধী শাসিত কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় সরকার ভিএইচপি-কে রামমন্দিরের শিলান্যাসের অনুমতি দেয়। রামমন্দিরের প্রথম ইঁটটি স্থাপন করা হয়।
রামমন্দিরের ভূমিপুজো
এদিকে সম্প্রতি রামমন্দিরের ভূমিপুজোয় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। কিন্তু করোনা আবহে এই ভূমিপুজো আয়োজন নিয়ে নানা বিতর্কও তৈরি হয়েছে। বিরোধীদের অনেকেই দাবি করেছিলেন, দেশের এমন সঙ্কটকালে মোদীর এই সিদ্ধান্ত কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তবে সেসব তোয়াক্কা না করেই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মোদী।
রামকে নিয়ে রাজনীতি জারি
মোদীর অযোধ্যা যাত্রা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল কংগ্রেস। তবে পরে সুর পাল্টে কংগ্রেস চেয়েছিল এই রাম পুজোয় অংশ নিতে। এই নিয়ে কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সালমান খুরশিদ বলেছিলেন, 'আদালতের রায়ের পর রামমন্দির নিয়ে সমস্ত বিবাদ আমরা পিছনে ফেলে এসেছি। তবে আমাদের মনে হয়, মন্দির নির্মাতাদের ভূমি পূজায় সকল রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো উচিৎ।'