মন্দির ভাঙার অভিযোগ, এবার মিনা মসজিদ সরানোর আবেদন মথুরা আদালতে
মন্দির ভেঙে তৈরি হয়েছে, মথুরার একটি আদালতে মিনা মসজিদ সরিয়ে নেওয়ার আবেদন
উত্তর প্রদেশের মথুরা থেকে মিনা মসজিদ সরিয়ে নেওয়ার আবেদন করা হল। মথুরার আদালতে এই আবেদন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আবেদনকারীদের তরফে দাবি করা হয়েছে, শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি কমপ্লেক্সের পূর্ব দিকে ঠাকুর কেশব দেব জি মন্দিরের একটি অংশে মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল।
জানা গিয়েছে, মথুরা আদালতে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার (এবিএইচএম) জাতীয় কোষাধ্যক্ষ দীনেশ শর্মা এই আবেদনটি করেছেন। মথুরায় সিভিল বিচারক জ্যোতি সিংহের আদালতে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। শর্মা এর আগে ইদগাহ স্থানান্তরের মামলা করেছিলেন। নতুন আবেদনে দীনেশ শর্মা কেশব দেব জি মহারাজের একজন শিষ্য বলে নিজেকে দাবি করেছেন। আবেদনে তিনি বলেছেন, মামলার মূল উদ্দেশ্য হল ঠাকুর কেশব দেবজি মহারাজের সম্পত্তি রক্ষা করা। তিনি মথুরা শহরে ১৩.৩৭ একর জমির মালিক, যেখানে শ্রী কৃষ্ণ জন্মভূমি অবস্থিত। আমরা এখন মীনা মসজিদের নামে উত্থাপিত নির্মাণ অপসারণ চেয়েছি। দেবতার মালিকানাধীন জমিতে ডিগ গেটে বৃন্দাবন রেললাইনের কাছে। এই মামলার শুনানির জন্য ২৬ সেপ্টেম্বর ধার্য করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে শাহি মসজিদ ইদগাহ স্থানান্তরের জন্য মথুরা আদালতে বেশ কয়েকটি আবেজন জমা পড়েছে। আবেদনকারীদের তরফে জানানো হয়েছে, শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থানে মন্দির চত্বরে শাহী ইদগাহ মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। আবেদনকারীরা ১৯৬৮ সালের ১২ অক্টোবর শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান সেবাসংঘ ও শাহি মসজিদ ইদগাহের চুক্তির বিরোধিতা করেছেন। আবেদনকারীরা জানিয়েছেন, এটির কোন আইনি বৈধতা নেই কারণ শ্রী কৃষ্ণ জন্মভূমি ট্রাস্ট, মালিকানা এই চুক্তির পক্ষে ছিল না। আবেদনকারীরা আরও জানিয়েছেন, মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব যেখানে একটি মন্দির ভেঙে দিয়েছিলেন সেই জায়গায় মসজিদটি তৈরি হয়েছিল। যদিও আবেদনকারীদের দাবি অস্বীকার করেছেন শাহি ইদগাহ মসজিদের ব্যবস্থপনা কমিটি।
মথুরার বিতর্কের কেন্দ্র বিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছি শাহী ইদগাহ মসজিদটি। ১৯৬৮ সালের একটি চুক্তিপত্র অনুসারে এই ইদগাহের জমির ওপর শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি ট্রাস্টের কোনও অধিকার নেই। সেই জমির দখলের দাবিতেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি ট্রাস্ট ও অন্যান্য কয়েকটি সংগঠন। অন্যদিকে, মথুরার এক আইনজীবী মহেন্দ্র প্রতাপ সিং জুন মাসে অভিযোগ করেন, মথুরার একটি মন্দির থেকে ঔরাঙ্গজেব ভগবান কৃষ্ণের মূর্তি সরিয়ে জাহানারার মসজিদের সিঁড়ির নীচে চাপা দিয়ে রেখেছিলেন। বর্তমানে ওই মসজিদ জামা মসজিদ নামে পরিচিত।
প্রসঙ্গত, প্রায় দুই হাজার বছর ধরে মথুরায় শ্রীকৃষ্ণজন্মভূমিতে পুজো হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। বিদেশি পর্যটকদের পুঁথিতে এই মন্দিরের হদিশ পাওয়া যায়। মুঘল সম্রাট ঔরাঙ্গজেবের নির্দেশে মন্দিরটি ধ্বংস করে দেওয়ার ২০ বছর আগে ভারতে এসেছিলেন ফরাসি ব্যবসায়ী জ্যঁ ব্যপ্তিস্তে। তাঁর ভ্রমণ কাহিনীতে ভারতে তিনটি উল্লেখ যোগ্য মন্দিরের তালিকায় পুরীর জগন্নাথ, বারাণসীর বিশ্বনাথ মন্দিরের পাশাপাশি মথুরার মন্দিরের কথা উল্লেখ ছিল।