বাংলাদেশের মাটির নিচে তৈরি 'ফল্ট লাইন', ভূমিকম্পে নিশ্চিহ্ন হতে পারে পূর্ব ভারত
কলকাতা, ১২ জুলাই : শুধু সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধেই নয়, আগামিদিনে আরও অনেক কিছুর সঙ্গে লড়তে হবে ভারত ও বাংলাদেশকে। তার মধ্যে অন্যতম হল ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয়। বাংলাদেশের মাটির নিচে ভূমিকম্পের উৎস তৈরি হচ্ছে, যা বাংলাদেশ সহ পূর্ব ভারতকে কার্যত নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। এমনই সতর্কবাণী উঠে এসেছে নয়া সমীক্ষায়। ['গ্রেট হিমালয়ান ভূমিকম্প' আসা এখনও বাকি, বলছেন বিজ্ঞানীরা]
গবেষণা সংক্রান্ত বিখ্যাত জার্নাল জিওসায়েন্সে এই গবেষণার কথা প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, পৃথিবীর বৃহত্তম নদী ব-দ্বীপ অঞ্চল, যার পাশেই অবস্থিত ভারত-বাংলাদেশ। এছাড়া কিছুটা জুড়ে রয়েছে মায়ানমার-ও। সেখানে মাটির তলায় অবস্থিত টেকটনিক প্লেটের উপরে চাপ ক্রমশ বাড়ছে। আর এই ঘটনা চলছে প্রায় ৪০০ বছর ধরে। [চ্যুতি রেখার ঠিক উপরেই অবস্থান, ধ্বংসস্তুপে পরিণত হতে পারে কলকাতা]
এই চাপ বাড়তে বাড়তে ভূমিকম্পের রূপ নিলে এই অঞ্চলে বসবাসকারীদের জীবন ভয়ঙ্কর ক্ষতির মুখে পড়বে। শুধু ভূমিকম্পই নয়, সমুদ্রের তীরবর্তী এলাকা হওয়ায় আরও বড় বিপদ ধেয়ে আসবে।
নতুন সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, এই এলাকায় একটি টেকটনিক প্লেট ধীরে ধীরে অপরটির নিচে ঢুকে যাচ্ছে। এর ফল ভবিষ্যতে মারাত্মক হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ভারত মহাসাগর, যা এই এলাকা থেকে খুব অদূরে, সেখানেই ২০০৪ সালে হওয়া সুনামি লক্ষ লক্ষ লোকের প্রাণ নিয়েছে। এছাড়া ২০১১ সালে জাপানে ভূমিকম্প ও সুনামিও এই অঞ্চলেই হয়েছে। যাতে প্রাণ গিয়েছে ২০ হাজারের বেশি মানুষের।
এই অঞ্চলে ভূমিকম্পের মতো কোনও বিপর্যয় হলে তার মাত্রা কোনওভাবেই ৯ রিখটার স্কেলের কম হবে না বলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করেছেন। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে এই গবেষণা চলেছে এবং ভূপৃষ্ঠের নিচের এই 'ফল্ট লাইন' এর বিষয়টি ক্রমেই স্পষ্ট হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কবে গিয়ে এই ফল্ট লাইন ধ্বংসাত্মক রূপ নেবে তা এখনও বোঝা সম্ভব নয়। তা আজকেও হতে পারে অথবা ৫০০ বছরও লাগতে পারে। তবে মাটির নিচে প্রবল আলোড়নের সূচনা অনেক আগেই হয়ে গিয়েছে। কবে প্রলয় আসবে সেটা হলফ করে বলা সম্ভব নয়।
আপাতত গোটা এলাকার স্যাটেলাইট ম্যাপ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। ওই এলাকার ভৌগলিক গঠন থেকে শুরু করে ভূকম্পন ও সুনামির তথ্য এক জায়গায় করে গোটা বিষয়টি অনুধাবন ও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।