বেঁচে আছেন শিনা বোরা! সিবিআইকে চিঠি দিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি ইন্দ্রাণীর
কেটে গিয়েছে ৯ বছর। কিন্তু এখনও কাটেনি গত দশকের অন্যতম সারা জাগানো হত্যাকাণ্ডের জট। ২০১২ সালে শিনা বোরা হত্যা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত ইন্দ্রাণী মুখার্জি বর্তমানে রয়েছেন জেলে। কিন্তু বরাবরই নিজের মেয়েকে হত্যা করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। বরং শিনা যে মৃত প্রথম থেকে সেই ঘটনাই মানতে নারাজ তিনি। এর আগে একাধিক বার তিনি দাবি করেছেন শিনা দিব্যি বেঁচে আছেন এবং আমেরিকায় আছেন। কিন্তু তাঁর এই দাবি ধোপে টেকেনি। আর এবার এতদিন পর ফের তাঁর নতুন দাবি নিয়ে শোরগোল শুরু হল।
সিবিআইকে ইন্দ্রাণীর চিঠি
একটি সর্বভারতীয় খবর মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইকে ইন্দ্রাণী জানিয়েছেন, আদৌ খুন হননি তাঁর মেয়ে শিনা। বরং শিনা গোপনে রয়েছেন কাশ্মীরে। আর তাঁর খুনের মামলায় জেলে পচছেন ইন্দ্রাণী। আর এই দাবির পর ফের খবরের শিরোনামে ইন্দ্রাণী মুখার্জি ও শিনা বোরা হত্যা মামলা।
অভিযুক্ত ইন্দ্রাণীর ইতিহাস
শিনা বোরার মা হিসাবে নন, ইন্দ্রাণী মূলত পরিচিত ছিলেন মিডিয়া ব্যারন পিটার মুখার্জির স্ত্রী হিসেবে। এছাড়া তিনিও মিডিয়া ব্যবসার সঙ্গেই জড়িত ছিলেন। তবে স্মার্ট সুন্দরী ইন্দ্রাণী পিটারের আগেও ঘর বেঁধেছিলেন আসামের সিদ্ধার্থ দাসের সঙ্গে। তবে অনেকে বলেন প্রথাগত বিয়ে হয়নি তাঁদের। ইন্দ্রাণী ও সিদ্ধার্থের দুই ছেলে মেয়ে শিনা মিখাইলকে মা বাবার কাছে ফেলে রেখে মুম্বই চলে যান ইন্দ্রাণী। আর সেখানেই তিনি হয়ে ওঠেন পিটার মুখার্জির ঘরণী। পরবর্তীতে সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন, ১৯৮৭ সালে জন্ম হয় শিনার, মিখাইলের জন্ম ১৯৮৮ সালে। যদিও, শিনার বার্থ সার্টিফিকেটে তার জন্ম ১৯৮৯ সালে বলে উল্লেখ রয়েছে। সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন, দুই সন্তানের জন্মের কিছুদিন পর ১৯৮৯ সালে ইন্দ্রাণী তাঁকে ছেড়ে চলে যান।
শিনার মৃত্যু রহস্য
২০১২ সালের ২৪ এপ্রিল একটি গাড়ির মধ্যে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় ২৫ বছরের শিনাকে। এর কয়েকদিন পর উদ্ধার হয় শিনার দেহের অংশ। কিন্তু কেন মুম্বই এসেছিলেন শিনা? তদন্তকারী অফিসাররা জানান ইন্দ্রাণীর ছবি দেখে নিজের মা কে চিনতে পারেন শিনা। আর তাঁকে খুজতেই মুম্বই আসেন তিনি। তবে সেখানে শিনা ও মিখাইলকে নিজের ভাই বোন বলে পরিচয় দিয়েছিলেন ইন্দ্রাণী। কিন্তু সেখানেই হয় বিপত্তি। পিটারের ছেলে রাহুলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল শিনার। যা কোনও মতেই পছন্দ ছিল না ইন্দ্রাণীর। নিজের পূর্ব জীবনের রহস্য ফাঁসের ভয় আর টাকার লোভ, এই দুই কারনেই নিজের মেয়েকে খুন করেছিলেন ইন্দ্রাণী, সিবিআই-এর তথ্যে তুলে ধরা হয় এই তথ্য। এমনকি শিনাকে খুনের আগে ২০১২ সালের কোনও একসময় ইন্দ্রাণী সিডেটিভ কিনেছিলেন। আর হত্যার আগে শিনাকে ওই ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করা হয়েছিল। এর পর তাঁকে হত্যা করে লাশ 'ঠিকানা' করেন ইন্দ্রানীর গাড়ির চালক শ্যাম রাই। চার্জ শিটে উল্লেখ করা হয় এই তথ্যও।
শিনা বোরা হত্যার অভিযুক্তরা
শিনার খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে ২০১৫ সালে ভিন্ন একটি মামলায় ইন্দ্রানীর গাড়ির চালক শ্যাম রাইয়ের গ্রেপ্তারির পরে। ইন্দ্রানী ছাড়া শিনা বোরা হত্যাকাণ্ডে আরও দুই অভিযুক্ত ইন্দ্রানীর প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীব খান্না এবং চালক শ্যাম রাই। বর্তমানে মুম্বই এর জেলে রয়েছেন ইন্দ্রাণী।
ইন্দ্রাণীর দাবি
শিনা বোরা হত্যা কাণ্ডের পরতে পরতে জড়িয়েছে রহস্যের জাল। যা হার মানাবে যে কোনও থ্রিলার সিনেমাকেও। এই মামলায় বাকি অভিযুক্তরা খুনের ঘটনা স্বীকার করে নিলেও প্রথম থেকেই তা কোনও ভাবে স্বীকার করেননি ইন্দ্রাণী। বার বার দাবি করেছেন শিনা জীবিত। আর এবার এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার ৯ বছর পর ফের শিনার বেঁচে থাকার দাবি জানালেন ইন্দ্রাণী। সিবিআইকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি সিবিআই ডিরেক্টরকে চিঠি লেখার পাশাপাশি বিশেষ সিবিআই আদালতে কাশ্মীরে গিয়ে তদন্ত করার আর্জিও জানিয়েছেন ইন্দ্রানী।