
পশ্চিম সীমান্তে লাফিয়ে বাড়ছে অন্য এক অনুপ্রবেশ! প্রযুক্তিই ভরসা বিএসএফ-এর
পাকিস্তান (Pakistan) ভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী থেকে চোরাকারবারি সবাই এখন ড্রোনের (drone) মাধ্যমে অস্ত্র-বিস্ফোরক আর মাদক সীমান্তের এপারে পাঠানোর চেষ্টা জোরদার করেছে। যে কারণে গত এক বছরে দেশের পশ্চি সীমান্তে ড্রোনের অনুপ্রবেশ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বিস্তীর্ণ সীমান্তে বিএসএফ (BSF) ও ড্রোন নিয়ে কার্যত নাকানি চোবানি খাচ্ছে।

ড্রোনের অনুপ্রবেশ দ্বিগুণ
আন্তর্জাতিক সীমান্ত পাহারা দেওয়া বিএসএফ-এর দেওয়া তথ্য অনুসারে যেখানে ২০২১ সালে ৯৭ টি ড্রোন দেখতে পেয়েছিল, সেখানে এই বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত প্রথম সাত মাসে দেখা গিয়েছে ১০৭ টি ড্রোন।
২০২১-এ পঞ্জাবের আন্তর্জাতি সীমান্তে ৬৪ টি ড্রোন পার হতে দেখা গিয়েছে। আর জম্মুতে ৩১২ টি ড্রোন পার হতে দেখা গিয়েছে। গত বছরে জম্মুর আন্তরাজ্তিক নিয়ন্ত্রণ রেখায় দুটি ড্রোনকে প্রবেশ করতে দেখা গেলেও, এবছরে এখন পর্যন্ত তা আর দেখা যায়নি।
এর মধ্যে বেশিরভাগ ড্রোনের অনুপ্রবেশ দেখা গিয়েছে পঞ্জাব থেকে। সেখানে এই বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৯৪ টি ড্রোন পার হতে দেখা গিয়েছে। এরপরেই রয়েছে জম্মু। সেখানে ১৪ টি ড্রোন পার হতে দেখা গিয়েছে।

শীতে বাড়ে তৎপরতা
এখনও এই বছর শেষ গতে পুরো পাঁচ মাস বাকি রয়েছে। সাধারণভাবে শীতের সময়ে সীমান্তের বিভিন্ন রুট দিয়ে অস্ত্র- বিস্ফোরক পাচারের তৎপরতা বাড়ে। এছাড়াও যে হিসেব দেওয়া হচ্ছে, তা সেই সব ড্রোন যা জওয়ানরা দেখেছেন কিংবা স্থানীয়রা জানিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএসএফ আধিকারিক জানিয়েছেন, বিস্তীর্ণ সীমান্তে সব ড্রোন আটকানো, থামানো কিংবা নিষ্ক্রিয় করা খুবই কঠিন কাজ।

অস্ত্র ও জাল টাকা ফেলতে ব্যবহার
সীমান্তে ড্রোনের মাধ্যমে রাইফেল, পিস্তল, বিস্ফোরক, ডিটোনেটর, জ্রেনেড, আইইডি, টিফিন বক্স বোমা, স্টিকি বোমা পাঠিয়ে থাকে জঙ্গিরা। অন্যদিকে চোরা কারবারিনা ড্রাগস ও জাল মুদ্রা পাঠিয়ে থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাউন্টার টেররিজমে যুক্ত থাকা এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আইএসআই-এপ মদত পুষ্ট লস্কর-ই-তৈবা, জম্মু ও কাশ্মীরে এর শাখা দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট, জৈশ এবং খালিস্তানি জঙ্গিরা অমৃতসর, জলন্ধর, গুরুদাসপুর, জম্মুর কাঠুয়া, আরএস পুরা এবং কানাচক এলাকায় অন্ত্র ও বিস্ফোরক পাঠাতে চিনা ড্রোনের ব্যবহার করছে।
এই ড্রোনের মাধ্যমে পাঠামো অস্ত্র এবং আইইডি মঝ্যে কিছু লুধিয়ানা, কাশ্মীর এবং অন্য জায়গায় ব্যবহারও হয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দা সংস্থাগুলির। জম্মুর এয়ারফোর্স স্টেশনে ড্রোন হামলা চালিয়েছিল টিআরএফ। যেখানে দুটি মানব বিহীন বিমান সীমান্তের ওপার থেকে দুটি ৩ ও ৫ কেজের আইইডি ফেলে। যেই ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে এনআইএ।

তদন্ত চালাচ্ছে বিএসএফ-পুলিশ
স্থানীয় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বিএসএফ কয়েকটি ড্রোন নামিয়ে, তাদের গন্তব্য চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে সীমান্তে অ্যান্টি ড্রোন বন্দু-সহ বেশ কিছু প্রযুক্তিও মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও ড্রোনগুলির জিপিএস এবং রেডিও লিঙ্কে বাধা দিতে জ্যামারও ব্যবহার করা হচ্ছে। এব্যাপারে বিএসএফ-এর এক আধিকারিক জানিয়েছে, সীমান্তে ড্রোনের অনুপ্রবেশ বন্ধের মতো কোন সমাধান প্রক্রিয়া তাদের কাছে নেই। তবে ডিআরজিও এবং বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে ড্রোনের মোকাবিলায় আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।