ধর্ষণ নিয়ে সরব হলেন মোদি, কী বললেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন ধর্ষণ বিরোধী আইন সংশোধন, এই বিষয়ে পদক্ষেপ করতে তাঁর সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন। পাশাপাশি নারীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সামাজিক আন্দোলনের পক্ষে সওয়াল করেন তিনি।
জম্মু কাশ্মীরের কাঠুয়া, কিংবা উত্তরপ্রদেশের উন্নাও, একের পর এক ধর্ষণকান্ড প্রকাশ্যে এসে মুখ পুড়েছে বিজেপির। ধর্ষণকান্ডে নাম জড়িয়েছে একাধীক বিজেপি ও বিজেপি ঘনিষ্ঠ সংগঠনের নেতার। ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়ে ধর্ষণ বিরোধী আইনে বদল এনেছে কেন্দ্রীয় সরকার। মঙ্গলবার এই বিষয়ে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন ধর্ষণ বিরোধী আইন সংশোধন করাই বলে দিচ্ছে এই বিষয়ে পদ ক্ষেপ করতে তাঁর সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। পাশাপাশি নারীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এক সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার পক্ষে সওয়াল করেন তিনি।
এদিন মধ্যপ্রদেশে রাষ্ট্রীয় পঞ্চায়েতি রাজ দিবস উপলক্ষ্যে এক সভা ছিল। সেখানে মোদির আগে বক্তৃতা দেন মধ্য়প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ পাতিল। তিনি ১২ বছরের কমবয়সীদের ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড করার সংশোধনের কথা উল্লেখ করেন। উপস্থিত জনতাকে সেসময় উল্লাস করতে দেখা যায়। বক্তৃতার সময় সাই প্রসঙ্গ টেনে এনে প্রধাণমন্ত্রী বলেন, 'দিল্লির সরকার আপনাদের কথা শুনেই সিদ্ধান্ত নেয়। সেইমতোই কেন্দ্র ওই ভয়াবহ ইচ্ছের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ডের বিধান দিয়েছে'।
তবে তাঁর মতে শুধু ধর্ষকের সাজা বাড়ালেই নারীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হবে না। তিনি বলেন, 'সমাজে কন্যাদের সম্মান ও শ্রদ্ধা বাবাতে পরিবারগুলিকে এগিয়ে আসতে হবে। পুত্র সন্তানরা যাতে আরও দায়িত্বশীল হয়, সেদিকটা দেখতে হবে। এভাবে মেয়েদের নিরাপত্তা সুনিশ্চত করাটা খুব কঠিন কাজ হবে না। এভাবে আমাদের একটা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে'।
গত সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রী মোদির উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা ধর্ষণ বিরোধী আইন সংশোধনের প্রস্তাব পাস করেছে। তাতে ১২ বছরের কমবয়সীদের ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি ১৬ বছরের কম বয়সী মেয়েদের ধর্ষণে অপরাধীদের ন্যূনতম সাজা বাড়িয়ে ২০ বছর করা হয়েছে। তবে তার আগে জম্মু কাশ্মীরার উন্নাও, গুজরাতের সুরাত, বা উত্তর প্রদেশের উন্নাও-এর ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে উত্তাল হয়েছে সারা দেশ। এমনকি বিদেশ সফররত প্রধানমন্ত্রীর কাছে এনিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন বিশ্বব্যাঙ্কের প্রধান ক্রিসটাইন ল্যাগার্ডে-ও।
ধর্ষণ কান্ডের পাশাপাশি আদিবাসী ও কৃষকদের ক্ষোভ এই মুহূর্তে বিজেপির মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। গুজরাত বিধানসভায় খারাপ ফলের পর আরএসএস-এর অন্তর্তদন্তেও এই ক্ষোভের কথা উঠে এসেছিল। এদিন আদিবাসী ও কৃষক উন্নয়ন নিয়েও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। কৃষিক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা আনতে পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের কৃষকদের শিক্ষিত করার দায়িত্ব নিতে বলেছেন তিনি। এভাবেই '২০২২ সালে স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে মহাত্মা গান্ধীর স্বপ্নের ভারত গড়া'-র স্বপ্ন দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।