প্রেমিকার এফআইআরে জেলে যুবক, হাতে হাতকড়া পরেই বিয়ে সারল প্রেমিকার সঙ্গে!
ফেসবুকে প্রথম আলাপ। সেখান থেকেই ছেলেটির প্রেমে পড়া মেয়েটির। কিন্তু ছেলেটি বিয়ে করতে অস্বীকার করে। আর সেই রাগেই ছেলেটির বিরুদ্ধে FIR করে বসল মেয়েটি। কিন্তু তারপর যা হল তা সিনেমার গল্পের চেয়ে কম নয়।
ধানবাদ, ২১ এপ্রিল : ফেসবুকে প্রথম আলাপ। সেখান থেকেই ছেলেটির প্রেমে পড়ে গিয়েছিল মেয়েটি। কিন্তু ছেলেটি বিয়ে করতে অস্বীকার করে। আর সেই রাগেই ছেলেটির বিরুদ্ধে এফআইআর করে বসল মেয়েটি। কিন্তু তারপর যা হল তা সিনেমার গল্পের চেয়ে কোনও কম নয়।
জেলে যাওয়ার পরই হৃদয়ের পরিবর্তন হয় ছেলেটির। ফেসবুকের বান্ধবীর সঙ্গেই বিয়েতে রাজি হয় সে। এরপর পুলিশ ভ্যানে করে হাতে হাতকড়া পরে বিয়ে করতে আসে ছেলেটি। আর মেয়েটি বাবা-মায়ের সঙ্গে গাড়িতে করে আসে। ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের সামনে সরকরি কাগজে সই করে বিয়ে করে দুজনে। এরপরই তাদের স্বামী-স্ত্রী ঘোষণা করা হয়। বৃহস্পতিবার ধানবাদে এই বিয়েটি হয়।
এই গল্পের দুই মুখ্য় চরিত্র বিহারের ২৮ বছরের ইঞ্জিনিয়ার রীতেশ কুমার। আর ২৩ বছরের সুদীপ্তী কুমারী। বিয়ের পর রীতেশ ফের ফিরে গেল জেলে আর সুদীপ্তী মা-বাবার সঙ্গে বাড়িতে। পাত্রীর বাবার কথায় দুজনের ভালবাসার আবেগকে সম্মান জানিয়েই এই বিয়েতে মত তাদের।
কিন্তু রীতেশ ও সুদীপ্তীর কাহিনীটা ঠিক কি? পরিবারের কথায়, ২০১২ সালে ফেসবুকে প্রথম আলাপ হয় দুজনের। প্রথমবার সামনাসামনি দেখা হওয়ার আগে দীর্ঘ সময় ঘরে চ্যাট করত দুজনে। এরপরে দুজনেই একে অপরের প্রেমে পড়ে যায়। রীতেশ মাঝেমধ্যেই ধানবাদে সুদীপ্তীর সঙ্গে দেখা করতে যেত।
তারা লুকিয়ে মন্দিরে বিয়েও করেছিল। কিন্তু সুদীপ্তী যখন রীতেশকে প্রথা মেনে বিয়ের কথা বলে তখন রীতেশ সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। রীতেশ বলে, বিয়ে করলে তার মা আত্মহত্যা করবে তাই সে বিয়ে করতে পারবে না।
প্রতারিত অনুভব করে সুদীপ্তি রীতেশের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ আনে ফেব্রুয়ারি মাসে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে কর্মক্ষেত্রে বিহারে কোহালগাঁও থেকে রীতেশকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কিন্তু এরপরও ভালবাসার টানে মাঝেমধ্যে জেলে রীতেশের সঙ্গে দেখায় করতে যেত সুদীপ্তী। কয়েক সপ্তাহ এভাবে কাটার পর রীতেশের হৃদয় পরিবর্তন হয় এবং সুদীপ্তীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সে। সুদীপ্তী তাতে রাজি হয়ে যায়। এক মাস আগেই জেল থেকেই বিয়ের জন্য আদালতে আবেদন জানায় রীতেশ। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৬ ও ৪৯৩ ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু হওয়ায় তার জামিনও নামঞ্জুর হয়েছে। ফলে আপাতত জেল থেকে বেরতে পারবে না সে। এই মামলায় সোমবার সুদীপ্তীর বয়ান রেকর্ড করা হবে।