কমল নাথের অধিনায়কত্বে ম্রিয়মান দিগ্বিজয়, মধ্যপ্রদেশে আরও বড় ভাঙনের মুখে কংগ্রেস?
মধ্যপ্রদেশ রাজনীতিতে বর্তমানে টানটান উত্তেজনার আবহাওয়া। একদিকে যখন বিজেপি নিজেদের ক্ষমতার স্থায়িত্ব বাড়ানো নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। অপরদিকে কংগ্রেসও তাদের হারানো রাজ্যপাঠ ফিরে পেতে মরিয়া। আগামী ৩ নভেম্বর ভোট যুদ্ধে নামতে চলেছে মধ্যপ্রদেশ। সেদিন অনুষ্ঠিত হতে চলা ২৮ আসনের উপনির্বাচনের উপরই নির্ভর করবে শিবরাজ সিং চৌহানের সরকারের স্থায়িত্ব।
রাজ্যপাঠ ফিরে পেতে মরিয়া কংগ্রেস
মধ্যপ্রদেশে হারানো রাজ্যপাঠ ফিরে পেতে মরিয়া কংগ্রেস। এবং এর জন্য ২০১৮ সালের ফর্মুলার অনুসরণ করছেন কমল নাথ। এবং মধ্যপ্রদেশে হাত শিবিরের অধিনায়ক কমল নাথের নেতৃত্বে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংকে। তবে এই নিষ্কৃয়তা দুই নেতার দ্বন্দ্বের জেরে নয় বলেই মত রাজনৈকিক বিশেষজ্ঞদের। আদতে 'অপয়া' দিগ্বিজয়কে ভোটের ময়দান থেকে দূরে রেখেই বাজিমাত করতে চাইছেন কমল নাথ।
লড়াইতে পিছিয়ে নেই কংগ্রেস
চৌহানকে সরিয়ে ফের ক্ষমতা দখলের লড়াইতে পিছিয়ে নেই কংগ্রেস। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া৷ এবং তাঁর সঙ্গে দল ছাড়েন আরও ২২ জন বিধায়ক। মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের পতনের কারণ ছিল এই দল বদলের হিড়িক৷ তবে এরই মধ্যে সিন্ধিয়া ঘাঁটি বলে পরিচিত ১১টি জেলায় নয়া সভাপতি নিযুক্ত করেন কমল নাথ।
দিগ্বিজয় সিংয়ের খোঁজ নেই
তবে এত তোড়জোড়ের মধ্যেও দিগ্বিজয় সিংয়ের খোঁজ মেলা ভার মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক ময়দানে। আদতে ২০১৮ সালেও এই একই ভাবে প্রচারের আলো থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন দিগ্বিজয়। তবে তা কমল নাথের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে নয়। বরং তাঁর ভুলভাল কোনও ভাষণের জেরে যাতে দলের ক্ষতি না হয়, সেই কারণেই সরে দাঁড়িয়েছিলেন এই বর্ষীয়ান নেতা।
২০১৮ সালের থেকে বদল
অবশ্য ২০১৮ সালে কংগ্রেস শিবিরের অন্যতম কাণ্ডারী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবার বিরোধী শিরিবে। এনেকেই ভেবেছিলেন, সেই অনুপস্থিতি ঢাকতে দিগ্বিজয়কে ময়দানে নামানো হতে পারে। তবে না, কমল নাথ নিজের ফর্মুলাতে অনড়। এবং তাঁর এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন দিগ্বিজয় নিজেও। কমনাথ একাই এখনও পর্যন্ত ২৮টির মধ্যে ১০টি আচনে বিস্তর প্রচার চালিয়েছেন।
ভোটের ময়দানে নেই রাহুল গান্ধী
কিন্তু এই ভোটের ময়দানে রাহুল গান্ধী মধ্যপ্রদেশে যাবেন বলে কোনও খবর নেই। যদিও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী একটি রোড শো করবেন কমল নাথের হয়ে। কিন্তু রাজ্যে ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার লড়াইতে কমল নাথ কার্যত ওয়ান ম্যান শো। এবং নিজের 'বেচারা' ভাবমূর্তি তুলে ধরতে সেটাকেই কাজে লাগাচ্ছেন তিনি।
দলের স্বার্থেই সরে দাঁড়িয়েছেন দিগ্বিজয় সিং
এদিকে দিগ্বিজয় সিং স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, জনসভায় দলীয় প্রচার চালালে বা ভাষণ দিলে দল হেরে যায়। এর জন্য কোনও প্রচারে আমি যাব না। এই বিষয়ে দিগ্বিজয় সিং নিজেই বলেন, যারা টিকিট পাচ্ছেন তাদের উচিত দলকে জেতানো। আমি এবার কোনও দলীয় প্রচার যাব না বা ভাষণ দেব না। কারণ ভাষণ দিলে কংগ্রেসের ভোট কমে যায়।
দিগ্বিজয় সিংকে বিজেপি কটাক্ষের সুরে 'বান্টাধর' বলে
এই কারণে অবশ্য দিগ্বিজয় সিংকে বিজেপিও কটাক্ষের সুরে 'বান্টাধর' বলে অভিহিত করে। অর্থাৎ, যে সব নষ্ট করে দেয়। তবে কংগ্রেসের এই নেতা যে পুরোপুরি অ্যাকশনের বাইতে, তেমনটা কিন্তু নয়। তিনি দলের হয়ে এই উপনির্বাচনে ব্যাকরুম অপারেশন এবং পরিকল্পনা অঙ্কনের মধ্যে রয়েছেন।
মায়াবতীর বিদ্বেষ
উল্লেখ্য এর আগে মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না হওয়ার কারণ হিসেবে বহুজন সমাজ পার্টির সুপ্রিমো মায়াবতী দাবি করেছিলেন, দিগ্বিজয় সিং চান না এই জোট হোক। দিগ্বিজয়কে বিজেপির অ্যাজেন্ট বলেছিলেন তিনি। কিন্তু মায়াবতীর এই দিগ্বিজয় বিদ্বেষ কংগ্রেসের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।
নির্বাচন পরবর্তী সময়ের কথা মাথায় রেখে...
প্রসঙ্গত, নির্বাচনের পর সপা, বিএসপি ও নির্দলদের সমর্থন ফের প্রয়োজন হতে পারে কমল নাথের। এর আগেও ২০১৮ নির্বাচনের পর সপা, বিএসপি ও নির্দল মিলিয়ে ৭ জন বিধায়ক কংগ্রেসকে সাহায্য করেছিল। তাই আরও বেশি করে পর্দার আড়ালেই রাখা হচ্ছে দিগ্বিজয় সিংকে। যাতে পরবর্তীতে জোট গঠনে কংগ্রেসের কোনও সমস্যা না হয়।
বিহার নির্বাচন যেন রাজনৈতির জগাখিছুড়ি, নীতীশ-তেজস্বীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জোটের ছড়াছড়ি