গণধর্ষণের পর দলিত কিশোরীর গায়ে আগুন, লখনউতে মৃত্যু নির্যাতিতার
গণধর্ষণের পর দলিত কিশোরীর গায়ে আগুন, লখনউতে মৃত্যু নির্যাতিতার
উত্তরপ্রদেশের গণধর্ষণ ও পুড়িয়ে মারার চেষ্টায় গুরুতর আহত দলিত কিশোরীর সোমবার লখনউয়ের একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। ১৬ বছরের দলিত কিশোরীকে দুই ব্যক্তি গণধর্ষণ করে। এরপর তাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অভিযুক্ত দুই তরুণকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। উত্তরপ্রদেশের আদালত দুই অভিযুক্তকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
নাবালিকার সঙ্গে কী হয়েছিল
মৃত নাবালিকার বাবা জানান, ৭ সেপ্টেম্বর মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তিনি বা তাঁর স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। বাড়িতে নাবালিকা একাই ছিল। সেই সময় দুই তরুণ নাবালিকার ওপর হামলা করে। তাকে গণধর্ষণ করে। এরপর প্রমাণ লোপাটের চেষ্টায় নাবালিকাকে খুন করার চেষ্টা করে। নাবালিকার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। উত্তরপ্রদেশের পিলিভীতের মাধোতান্ডা এলাকায় মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। নাবালিকা লখনউয়ের কিং জর্জ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সেখানেই সোমবার ভোররাতে দলিত নির্যাতিতার মৃত্যু হয়েছে।
ভাইরাল নাবালিকার অভিযোগ
তিন দিন পরে নজরে আসে ঘটনাটি। একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে নির্যাতিতা নাবালিকা নিজের মুখে সমস্ত ঘটনার বিবরণ দেন। তিনি শরীরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ারও বিবরণও ভিডিওটিতে দেন। শনিবার এই ভিডিও ভাইরাল হতেই দেশের মানুষ শিউরে ওঠেন। দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি উঠতে থাকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।
পুলিশ সূত্রে দাবি
পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার প্রভু জানিয়েছেন, অভিযুক্ত রাজীব (১৯) ও তারাচাঁদ তরুণ কুমার (২৫) নামের দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে তারা জেল হেফাজতে রয়েছে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, নাবালিকার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধের বিরুদ্ধে শিশুদের সুরক্ষা (পকসো) আইন এবং তফসিলি জাতি/তফসিলি উপজাতি আইনের অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট (সদর) যোগেশ কুমার মেয়েটির জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
হাথরাসের ঘটনার পুনরাবৃত্তি
দুই বছর আগে ২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশে হাথরাসে একই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। উচ্চবর্ণের চার ব্যক্তি ১৯ বছরের এক দলিত মহিলাকে গণধর্ষণ করে। প্রমাণ লোপাটের চেষ্টায় ওই তরুণীকে অভিযুক্তরা পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে। তাঁকে প্রথমে উত্তরপ্রদেশের হাসপাতালে পরে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ২৯ সেপ্টেম্বর চিকিৎসা চলাকালীন ওই দলিত তরুণীর মৃত্যু হয়। ঘটনার নৃশংসতায় সারা দেশ শিউরে উঠেছিল। দোষীদের শাস্তির দাবিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ স্বোচ্ছার হয়ে উঠেছিল।