অশান্ত পরিবেশেই প্রথম দফার ভোটগ্রহণ ছত্তিশগড়ে
বস্তার, রাজনন্দন গাও, সুকমা, দান্তেওয়াড়া, ছত্তিশগড়ের এই চার জেলা মাওবাদী ঘাঁটি বলে পরিচিত। ফতোয়া জারি হয়েছিল ভোট দিলে হাতের আঙুল কেটে নেওয়া হবে। হয়তো বা কেটে নেওয়া হবে গোটা হাতটাই। এমনকী ৭ থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত বনধেরও ঘোযণা করা হয়েছিল। কিন্তু সেসব ভয়কে দূরে সরিয়ে এসব অঞ্চলগুলিতেও মানুষের ভোট দেওয়ার উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো।
ছত্তিশগড়ের রাজনন্দগাঁওয়ের বাগডোঙ্গরির বুথে আইইডি বিস্ফোরণে আহত দুই জওয়ান
অশান্তি হতে পারে, এ আশঙ্কাতেই নির্বাচনের ৮ জেলাকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু তবু আটকানো গেল না মাওবাদী হামলা। প্রশাসনের সেই আশঙ্কা সত্যি করে রবিবার বিকেলে রাজনন্দগাঁওয়ের বাগডোঙ্গরিতে একটি বুথের ঠিক পাশেই আইইডি বিস্ফোরণ ঘটে৷ এই ঘটনার মূলে যে মাওবাদী রয়েছে তা বলাই বাহুল্য। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই জওয়ান৷ দান্তেওয়াড়ার বরসুর গ্রাম থেকে প্রায় ৪০ কিলোগ্রামের বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ কাঁকের জেলার কয়লাবেরা অঞ্চলের পাঁচ জায়গায় মাওবাদীদের পুঁতে রাখা বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়ও করা হয়েছে৷ এছাড়াও, বস্তারের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রচুর বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে৷ এদিকে, কাঙ্কেরের অতিস্পর্শকাতর দুটি বুথে মাওবাদীরা ইভিএম লুঠ করায় ভোটগ্রহণ শুরুই করা যায়নি৷ বিজাপুরের মুর্কিনার থেকে একটি ১০ কেজি ওজনের পাইপ বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ এদিকে মাওবাদী হামলার বাইরেও কংগ্রেস ও বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্য বাধে। কংগ্রেসের অভিযোগ বিজেপি কর্মীরা তাদের মারধর করে প্রথমে। যদিও বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করে।
ছত্তিশগড়ের ৯০টি বিধানসভার মধ্যে আঠেরোটিতে ভোট হল সোমবার। আঠেরোটি কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ঊনত্রিশ লক্ষের কিছু বেশি। আঠেরোটি কেন্দ্রে ভোটের জন্য এক লক্ষ সশস্ত্র বাহিনীর নিরাপত্তা বলয় তৈরি হয়। এই আঠারোটি জেলার মধ্যে ১২টি মাওবাদী উপদ্রুত বস্তার ডিভিশনে, বাকি ছ'টি কেন্দ্র রাজনন্দগাঁও জেলায়৷ নির্বিঘ্নে নির্বাচন শেষ করতে প্রচুর সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মীদের আনা হয়েছে রাজ্যে৷ ছত্তিসগড়ে পুলিশ ও আধা-সামরিক জওয়ান মোট এক লক্ষ ত্রিশ হাজার-- রাজ্য পুলিশের ৪৭,০০০, আগে থেকেই যাঁরা এখানে ছিলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সেই ২৭,০০০ এবং ভোটের জন্য নতুন করে আনানো ৫৬৪ কোম্পানির ৫৬,৪০০ জওয়ান৷ এ ছাড়াও বায়ুসেনার ১২টি হেলিকপ্টার আকাশপথে টহলদাড়ির জন্য রাখা হয়েছিল।