বায়ুসেনার শীর্ষ পদে বসলেন বঙ্গসন্তান অরূপ রাহা
জওহরলাল নেহরুর সময় বঙ্গসন্তান সুব্রত মুখোপাধ্যায় ছিলেন বায়ুসেনার শীর্ষ পদে। এতদিন পর আবার কোনও বাঙালি সেই পদে আসীন হলেন। ১৯৭৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর বায়ুসেনায় কমিশনড অফিসার হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন অরূপ রাহা। এখন এয়ার চিফ মার্শালের দায়িত্ব নেওয়ায় একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হল।
পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার বৈদ্যবাটিতে অরূপ রাহার জন্ম হয় ১৯৫৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর। বাবা ছিলেন নামকরা ডাক্তার। পুরুলিয়ার সৈনিক স্কুলে লেখাপড়া করেছেন অরূপবাবু। তাঁর কর্মজীবন যথেষ্ট আকর্ষণীয়। ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাসে তিনি এয়ার অ্যাটাশে হিসাবে কাজ করেছেন। এছাড়া ওয়েস্টার্ন এবং সেন্ট্রাল এয়ার কমান্ডের দায়িত্ব সামলেছেন। প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আকাশপথ সুরক্ষিত রাখা ওয়েস্টার্ন এয়ার কমান্ডের দায়িত্ব। এই কমান্ডের দায়িত্ব পাওয়া ভারতীয় বায়ুসেনার যে কোনও অফিসারের কাছে স্বপ্ন।
৩৯ বছর ধরে বায়ুসেনায় কর্মরত অরূপবাবু আমাদের বায়ুসেনার আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়া শুরুর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছেন। লজঝড়ে মিগ বিমানের জায়গায় যে তেজস, মিরাজ বোমারু বিমানকে জায়গা দিতে হবে, সেটা প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে বোঝাতে হয়েছে অরূপবাবুকে। ৩৪০০ ঘণ্টার বেশি বিমান ওড়ানোর রেকর্ড আছে তাঁর। পরমবিশিষ্ট সেবা মেডেল, অতিবিশিষ্ট সেবা মেডেল, বায়ুসেনা মেডেল ইত্যাদি সম্মানে ভূষিত হয়েছেন অরূপ রাহা।
অরূপবাবুকে মূলত তিনটি চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে। প্রথমত, বায়ুসেনার আধুনিকীকরণের কাজ সম্পূর্ণ করা। ১২৬টি এমএমআরসি (মাল্টি-মিডিয়াম রোল কমব্যাট) বিমান যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বায়ুসেনার হাতে তুলে দেওয়া। দ্বিতীয়ত, সংখ্যাতত্ত্বের বিচারে বায়ুসেনা পিছিয়ে আছে। ভারতের দরকার ৪৭টি কমব্যাট স্কোয়াড্রন। সেখানে রয়েছে ৩৪টি। এই ঘাটতি পূরণে কাজ করতে হবে। তৃতীয়ত, চীনের মোকাবিলায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তেজপুরের বিমানঘাঁটিকে ঢেলে সাজানো। অরুণাচলপ্রদেশের সামদুরং-চু উপত্যকার সুরক্ষায় বিশেষ নজর দেওয়া। ওয়াকিবহাল মহলের আশা, অরূপবাবু এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সফল হবেন।