ভারত সফরে এসে বিদেশমন্ত্রী ওয়াং লি কথা বলুক মোদীর সঙ্গে চেয়েছিল বেজিং, সম্মতি দেয়নি কেন্দ্র
বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই ভারত সফরে চলে এসেছিলেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং উই। আশা করা হয়েছিল, তাঁর ভারত সফরে দুরত্ম কমবে দুই দেশের। কূটনৈতিক পথে একাধিক সমস্যার সমাধানসূত্র খুঁজবে ভারত-চিন। ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন তিনি। তবে অতিথি হয়ে আসা ওয়াংয়ের সমস্ত আবদার পূরণ করল না নয়াদিল্লি৷
২০২০ সালের জুন মাসে গালওয়ান উপত্যকার রক্তাক্ত স্মৃতি এখনও তাজা। লাদাখে সীমান্ত বিবাদে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন দুই দেশের সেনা আধিকারিকরা। সেই সংঘাতের পর আর কোনও সংঘর্ষ না হলেও চাপ থেকেই গিয়েছে সীমান্তে। দুই দেশই সীমান্তে নিজেদের সামরিক শক্তি বাড়িয়েছে। সামরিক চাপের পাশাপাশি অর্থনৈতিক দিক থেকেও চিনকে চাপে ফেলেছে ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আত্মনির্ভরশীল ভারত উদ্যোগে সাড়া দিয়ে চিনা পণ্য বয়কট করেছে গোটাদেশ। ভারত সরকারও বহু চিনা অ্যাপ ব্যান করেছে।
এমতাবস্থায় ওয়াংয়ের ভারত সফরের গুরুত্ব অপরিসীম ছিল৷ ২০১৯ এর পর এই প্রথম তিনি ভারতে এলেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতে নেমেছিলেন ওয়াং। সূত্রের খবর, ভারতের প্রধান নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন চিনা মন্ত্রী। জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা জানিয়েছিল, শীঘ্রই ওয়াংয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন ডোভাল৷ তবে এরপরের আবদার আর রাখা সম্ভব হয়নি৷
ওয়াং অনুরোধ করেছিলেন, যদি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করা সম্ভব হয়। এ নিয়ে সাউথ ব্লকের কাছে আর্জিও জানিয়েছিলেন তিনি। তবে বেজিংয়ের এই অনুরোধ মেনে নেয়নি নয়াদিল্লি। শুক্রবার উত্তরপ্রদেশে ব্যস্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সে রাজ্যে দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছেন যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানেই উপস্থিত ছিলেন মোদী৷ তাই তাঁর পক্ষে যে দেখা করা সম্ভব নয়, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে দিল্লি। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর, মুখ্য নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে দেখা হলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আর দেখা হয়নি ওয়াংয়ের।
প্রসঙ্গত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝেই ভারত ও চিন দু'দেশই সরাসরি রাশিয়া বিরোধিতার রাস্তায় হাঁটেনি৷ এমনকি রাষ্ট্রসংঘে আমেরিকার ও মিত্রশক্তির আনা রাশিয়া বিরোধী প্রস্তাবগুলিতে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে ভারত। যদিও চিন অনেকক্ষেত্রেই রাশিয়াকে সরাসরি সমর্থন জানিয়েছে কিন্তু সে রাস্তায় হাঁটেনি ভারত। তাই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে চিনের বিদেশমন্ত্রীর ভারত সফর এবং দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাওয়া নিয়ে কৌতুহল তৈরি হয়েছে৷