উৎসবের উপহার, বাগনানের গ্রামে পুজোয় সামিল দৃষ্টিশক্তিহীনরা
উৎসবের উপহার, বাগনানের গ্রামে পুজোয় সামিল দৃষ্টিশক্তিহীনরা
ওদের কেউ এসেছেন ডায়মন্ডহারবার থেকে, আবার কেউ এসেছেন নদীয়া থেকে কেউবা সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে। ওরা প্রত্যেকেই দৃষ্টিহীন। ওদের কেউ বাসে-ট্রেনে গান গেয়ে পেট চালান আবার কেউ ভিক্ষে করে সংসার চালান। এরকমই কিছু দৃষ্টিহীন মানুষের পাশে দাঁড়াল গ্রামীণ হাওড়ার বাগনানের অন্যতম পুজো কমিটি হারোপ জাতীয় পাঠাগার।
ঐতিহ্যবাহী সংগঠন
বাগনানের হারোপ গ্রামের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন হারোপ জাতীয় পাঠাগার। এবার তাদের দুর্গোৎসব ৮০ তম বর্ষে পদার্পণ করল। পুজোয় যেমন চমক থাকে তেমনই প্রত্যেক বছরই বেশ কিছু সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করে তারা। এবার পঞ্চমীতে সেরকমই উদ্যোগে কিছু দৃষ্টিশক্তিহীন মানুষকে হাজির করিয়েছিল তারা। তাদের সাথে পঞ্চমীর দুপুরে একসাথে মধ্যাহ্নভোজ সারেন সংগঠনের সদস্যরা। বেশ কিছুটা সময় তাদের সাথে গানে, আড্ডায় কাটান নির্মল, পার্থ, তপনরা।
পুজোর উপহার
সবশেষে তাদের হাতে পুজোর উপহার হিসাবে নতুন বস্ত্র তুলে দেওয়া হয়। সংগঠনের কর্তা নির্মল পাল, প্রত্যেক বছরের মতো এবারও আমরা পুজোর আনন্দকে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সাথে ভাগ করে নিতে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছি। তারই অঙ্গ হিসাবে আজ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের ৩০ জন দৃষ্টিশক্তিহীন মানুষের সাথে বেশ কিছুটা খুশি আমরা ভাগ করে নিলাম। উল্লেখ্য, হারোপ জাতীয় পাঠাগার প্রতিবছর গ্রামের বুকে রকমারি থিমের প্রকাশ ঘটায়। এবার তাদের ভাবনা 'আটের স্বপ্ন আশিতে, নারায়ণের হাত ধরে আমরা এবার ছেলেবেলাতে'।
ব্রেইল ডিসপ্লে
এই ব্রেইল ডিসপ্লে বোর্ডের পৃষ্ঠে স্পর্শ করে তাঁরা সজ্জা এবং প্রতিমা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে সক্ষম করবে। হাজরা পার্ক দুর্গোৎসব কমিটি, ঠাকুরপুকুরের স্টেট ব্যাঙ্ক পার্ক এবং চিৎপুর এলাকায় ইয়াং বয়েজ ক্লাব একটি করে ব্রেইল ডিসপ্লে স্ট্যান্ড স্থাপন করছে যা প্যান্ডেলের একপাশে স্থাপন করা হবে।
দক্ষিণ কলকাতার ক্লাব
দক্ষিণ কলকাতার লেক টেম্পল রোডে শিব মন্দির সার্বজনীন আরেকটি জনপ্রিয় পূজা, টানা পঞ্চমবারের জন্য মণ্ডপে ব্রেইল বোর্ড স্থাপন করা হবে। দক্ষিণ কলকাতার লেক টেম্পল রোডের হাজরা পার্ক সার্বজনীনের জয়েন্ট সেক্রেটারি, আরেকটি জনপ্রিয় পূজা, শিবমন্দির সার্বজনীন, টানা পঞ্চম বছরের জন্য একটি ব্রেইল বোর্ড স্থাপন করবে।
হাজরা পার্ক সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সায়ান দেব চ্যাটার্জী বলেন, "দুর্গা পূজার সময় সবাই আনন্দ করতে চায়, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী মানুষদেরকেও উৎসবের আমেজ দিতে। ব্রেইল ঘড়ি, ব্রেইল ক্যালকুলেটর, এবং ব্রেইল থার্মোমিটার তৈরি করা হয়েছে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের দৈনন্দিন কাজে সাহায্য করার জন্য এই ভাবনা। এটাই তো সময়, যখন মানুষ বাংলার সবচেয়ে বড় উৎসবে অংশগ্রহণ করতে চায় সেই থেকেই এই ভাবনা।"
পুজোর সঙ্গে মানবিকতাও, বিলি হল স্টুডেন্ট কার্ড , অর্থ দান হল অনাথ আশ্রমেও