জীবসেবাই শিবসেবা, উদয়নারায়ণপুরের গ্রামে পশুপালন শিবির
জীবসেবাই শিবসেবা, উদয়নারায়ণপুরের গ্রামে পশুপালন শিবির
"নতুন ভারত বেরোক, বেরোক লাঙল ধরে, চাষার কুটির ভেদ করে, জেলে - মাল্লা - মুচি......" - নবভারতের রূপকার স্বামী বিবেকানন্দ এভাবেই নতুন ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন। স্বামীজীর জীবন ব্রতে দীক্ষিত হয়েই উদয়নারায়ণপুরের খিলা শ্রীরামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের পথচলা। শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব - সারদা মা - স্বামীজীর মহান ভাবধারা ও চিন্তভাবনাকে সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এই সেবাশ্রম। এবার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষকে পশুপালনে উদ্বুদ্ধ করতে ও বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে প্রাণী পালনের প্রশিক্ষণ দিতে এগিয়ে এলো খিলা শ্রীরামকৃষ্ণ সেবাশ্রম।
শনিবার সেবাশ্রমের পক্ষ থেকে গ্রামীণ হাওড়ার পেঁড়ো থানার খিলায় একটি প্রাণী পালনের প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়৷ শিবিরে অংশ নিয়েছিলেন আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের শতাধিক মানুষ। তাদের কাছে পশুপালন সম্পর্কে বিভিন্ন আলোচনা করেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত, কীভাবে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে পশুপালন করা যায়, পশুর রোগ সহ বিভিন্ন বিষয়ে এদিন আলোচকরা আলোকপাত করেন। পাশাপাশি, এদিনের এই প্রশিক্ষণ শিবির থেকে প্রাণীপ্রতিপালনকারীদের হাতে বিনামূল্যে কৃমিনাশক ওষুধ ও ভিটামিন মিক্সচার তুলে দেওয়া হয়। উদ্যোক্তারা জানান, উদয়নারায়ণপুর ব্লক কৃষি প্রধান ব্লক। বহু মানুষ কৃষির পাশাপাশি বাড়িতে গোরু, ছাগল সহ বিভিন্ন পশুপালন করেন। কিন্তু বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে কীভাবে পশুপালন করা প্রয়োজন সে সম্পর্কে প্রত্যন্ত গ্রামের অনেকেই জানেন না।
এবিষয়ে গ্রামাঞ্চলের মানুষকে সচেতন করতেই এই উদ্যোগ। এই প্রশিক্ষণ শিবিরে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক স্বপন মুখার্জী, সেবাশ্রমের সম্পাদক অরিন্দম সামন্ত, বিশিষ্ট পরিবেশবিদ সৌরভ দোয়ারী, শিক্ষক শ্যামল জানা সহ অন্যান্যরা। সেবাশ্রমের সম্পাদক অরিন্দম সামন্ত জানান, স্বামীজীর আদর্শে আমাদের পথচলা। স্বামীজীর আদর্শে নতুন ভারত গড়ে তোলাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনা মোতাবেক কাশফুল থেকে বালিশ তৈরিতে উদ্যোগী হাওড়ার সাঁকরাইলের মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী। জানা গেছে, কাশের মরসুমে বিভিন্ন জায়গা থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা কাশফুল সংগ্রহের কাজ চালাচ্ছেন। বালিশ ও তোষক তৈরির উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য সেগুলি রাখা হচ্ছে ধুলাগড়ের রাণী রাসমণি মহিলা সংঘে। জানা গেছে, কাশফুল তোলার পরই তা খুব দ্রুত নুয়ে পড়ে। ফলে খুব সন্তর্পণে তুলতে ও তা সযত্নে সংগ্রহ করতে হয়। কাশফুল তোলার পদ্ধতি ও তা সংগ্রহ ঠিকঠাক হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে জ্রলা ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল সেন্টার থেকে বিশেষ দলও আসে।
সূত্র মারফত জানা গেছে, ইতিমধ্যেই প্রায় ২৫ কেজি কাশফুল সংগ্রহ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছর হাওড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে এসে কাশফুলকে কাজে লাগিয়ে বালিশ তৈরির সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই কাশফুলকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে বালিশ তৈরি করা সম্ভব তা নিয়ে শুরু হয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী কিছুদিনের মধ্যেই হাওড়ায় কাশফুলকে কাজে লাগিয়ে বালিশ ও তোষক তৈরি করে তা বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। এর ফলে মহিলারা যেমন স্বনির্ভর হবেন তেমনই কাশফুলের ব্যবহারে নতুন দিশা দেখবে বাংলা।