কালো হয়ে গিয়েছে ব্রহ্মপুত্রের জল, গোপনে বাঁধ দিচ্ছে কি চিন! ষড়যন্ত্র নিয়ে কী বলছে ভারত
ফের একবার চিনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠছে। কারণ অরুণাচলপ্রদেশের লাইফলাইন বলে পরিচিত সিয়াং নদীর শ্বেতশুভ্র জল হঠাৎ করেই কালো হয়ে গিয়েছে।
ব্রহ্মুপুত্র নদীতে বাঁধ দিয়ে ভারতকে শিক্ষা দিতে চায় চিন। এই খবরে বেশ কিছু আগেই উত্তাল হয় সংবাদমাধ্যম। ব্রহ্মপুত্র নদী নিয়ে ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বারবার উত্তাল হয়েছে। ডোকলাম বিতর্কের পর তা আরও ফুলে-ফেঁপে ওঠে। উত্তর-পূর্ব ভারতে অচলাবস্থা তৈরি করতে চিন ব্রহ্মপুত্র নিয়ে কূটনৈতিক অবস্থান নিচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও চিন জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্রের জল বন্ধ করার কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। পঞ্চশীল নীতি মেনেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা হবে।
কালো হয়ে গিয়েছে সিয়াংয়ের জল
যদিও ফের একবার চিনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠছে। কারণ অরুণাচলপ্রদেশের লাইফলাইন বলে পরিচিত সিয়াং নদীর শ্বেতশুভ্র জল হঠাৎ করেই কালো হয়ে গিয়েছে। যা নিয়ে এলাকাবাসীর চিন্তার শেষ নেই। বাপের জন্মে কেউ কোনওদিন এমন ঘটনা দেখেননি বা শোনেনি বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
[আরও পড়ুন:ডোকলামে সুবিধা করতে না পেরেই কি ব্রহ্মপুত্রের জল আটকাতে তৎপর চিন]
তিব্বত থেকে ভারতে
এই সিয়াং নদী তিব্বতে উৎপন্ন হয়ে অসম হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে। তিব্বতে এর নাম ইয়ারলাং সাঙ্গপো। অসমে প্রবেশ করে আরও দুই ছোট নদীর সঙ্গে মিশে তা ভারতে ব্রহ্মপুত্র নামে প্রবাহিত হয়েছে।
চিনের পরিকল্পনা
এই নদীর জলই হঠাৎ করে কালো হয়ে গিয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের জলকে বাঁধ দিয়ে ঘুরিয়ে নেওয়ার যে পরিকল্পনা চিন করেছে, সেইজন্যই কি সিয়াংয়ের জল রাতারাতি কালো মাটিতে ভরে গিয়েছে? সেই প্রশ্নও উঠছে।
সিমেন্ট মিশেছে জলে
এই ঘটনা দেখে পূর্ব সিয়াং প্রদেশের জেলা প্রশাসন নদীর জল পরীক্ষা করে দেখেছে, এই জল মানুষের ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে গিয়েছে। বলা হচ্ছে, সিমেন্টের মতো গাঢ় মাটি জলের মধ্য মিশে নদীর জল কালো করে দিয়েছে। নদীর জলের মাছ মরে গিয়েছে।
কয়েকমাস ধরে কালো জল
এই ঘটনা ঘটেছে দুইমাস আগে থেকেই। তখন ভাবা হয়েছিল, বৃষ্টির জলে আশপাশের এলাকার মাটি ধুয়ে নদীর জল কালো করে দিয়েছে। তবে বর্ষার মরশুম চলে গেলেও নদীর জলের রঙ কালোই রয়ে গিয়েছে। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সিয়াং বা ব্রহ্মপুত্রের জল স্বচ্ছ্ব থাকে। তবে এবছর নভেম্বর শেষ হতে চললেও জল কালোই রয়েছে।
ব্যবহারের অযোগ্য নদীর জল
পূর্ব সিয়াং জেলার ডেপুটি কমিশনার তাময়ো তাতক বলেছেন, কেন্দ্রীয় জল কমিশন জলের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের সন্দেহ চিনের দিকেই। মনে করা হচ্ছে, নদীর উপরিভাগে অর্থাৎ চিনের দিকে সিমেন্ট দিয়ে কিছু তৈরি করা হচ্ছে। সেগুলিই জলের স্রোতে বেয়ে নেমে এসে জল কালো করে দিয়েছে।
চিনের কূটনীতি
এর আগে শোনা গিয়েছিল তিব্বত থেকে ব্রহ্মপুত্রের জলকে শুকনো ঝিজিয়াং প্রদেশে নিয়ে যেতে ১ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ টানেল তৈরি করছে চিন। যে খবর সামনে আসার পর চিন তা মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। তবে গোপনে সেই কাজ চিন চালিয়ে যাচ্ছে বলেই এখন অভিযোগ উঠছে।
মোদীর হস্তক্ষেপ দাবি
সোমবার চিনের বিরুদ্ধে অরুণাচলে বিক্ষোভ দেখিয়েছে অল বোরং স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। সিয়াং নদীর জল নিয়ে সাবধান করা হয়েছে চিনকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক ফোরামে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। এখন দেখার কেন্দ্র কী পদক্ষেপ করে।