সারদা কেলেঙ্কারি :কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের ভূমিকা কী?
কলকাতা, ২৩ ডিসেম্বর : সারদা কেলেঙ্কারির মামলায় ইতিমধ্যেই তৃণমূলের একাধিক নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি জেলেও ভরেছে সিবিআই। এবার পালা কলকাতার পুলিশ কমিশনার সুরজিৎকর পুরকায়স্থর। তাঁকেও খুব শীঘ্রই জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছে সিবিআই।
অভিযোগ, সারদা গোষ্ঠীর একাধিক অনুষ্ঠানে মদন মিত্রের পাশাপাশি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকেও দেখা গিয়েছে। তাছাড়া 'সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস' এসএফআইও-র রিপোর্টে আমলা ও রাজনৈতিক নেতা মিলিয়ে প্রায় ২২ জনের নাম সারদা মামলায় দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এসএফআইও-র তরফে জানানো হয়েছে, বহু সরকারি আধিকারিক এবং রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে অসহযোগিতার কারণে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি।
কলকাতার নগরপালকে বেপরদা করেছেন কুণাল ঘোষ?
তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষ সারদা কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হিসাবে প্রথম কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং মদন মিত্রের নাম দিয়েছিলেন। এসএফআইও তাদের রিপোর্টে এও জানিয়েছিল, বহু হাই প্রোফাইল ব্যক্তিত্ব সারদা কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত।
এসএফআইও রিপোর্টের অধ্যায় ৪ অনুযায়ী, তদন্তকারী পৃষ্ঠপোষকতা এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে যুক্ত হাউ প্রোফাইল ব্যক্তিদের বিষয়টি দেখছিল, এবং বলেছিল, সারদা গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে একইমঞ্চে ওই সমস্ত হাই প্রোফাইল ব্যক্তিজের দেখে কোথাও একটা ভরসার জায়গা তৈরি হয়েছিল বিনিয়োগকারীদেরক মধ্যে।
এসএফআইও রিপোর্ট এও বলছে যে, এভাবেই সারদা গোষ্ঠী বিনিয়োগ টানতে সফল হয়েছিল।
সারদা কাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন নগরপাল
এসএফআইও রিপোর্ট বলছে সারদা কেলেঙ্কারিতে পোষকতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার সপরজিৎ কর পুরকায়স্থ। অভিযোগ রয়েছে, সুরজিৎবাবু প্রাক্তন পুলিশকর্তা রজত মজুমদার সহ অন্য আধিকারিকদের সঙ্গে মিলে সারদা কেলেঙ্কারিকে চাপা দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
কুণাল ঘোষ জানিয়েছিলেন পুলিশ কমিশনারকে সারদা গোষ্ঠীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে, এবং সারদা গোষ্ঠীর থেকে তিনি ঘুষ নিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন কুণাল।
সবাইকে প্রশ্ন করা হবে
ওয়ানইন্ডিয়াকে এক সিবিআই আধিকারিক জানিয়েছেন, সারদা গোষ্ঠীর মঞ্চে বড় বড় হাই প্রোফাইল ব্যক্তিত্বকে নিয়ে যাওয়ার পিছনে মূল উদ্দেশ্যটা ছিসল বিনিয়োগকারীদের মনে একটা বিশ্বাসের জন্ম দেওয়া। সারদা গোষ্ঠীর সদস্যরা পশ্চিমবঙ্গে এই গোটা অপারেশনে আমলা এবং রাজনৈতিক নেতাদের যুক্ত করতে প্রচুর পরিমাণে ঘুষ দিয়েছে।
ওই সিবিআই আধিকারিক এও জানিয়েছেন যে এসএফআইও রিপোর্টকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে সিবিআই। প্রস্তাবনা রয়েছে যাতে আমরা আরও বেশ কয়েকজন হাই প্রোফাইল ব্যক্তিত্বকে জিজ্ঞাসাবাদ করি।
অন্যদিকে তদন্ত করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে অসহায় বোধ করেছে এসএফআইও, যখন কিছু ব্যক্তি নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে তদন্ত বন্ধ করার প্রচেষ্টা করেছে। কখনও তারা সহযোগিতা করতে অস্বীকার করেছে, কখনও প্রয়োজনীয় ফাইল দেখাতে অস্বীকার করেছে।
যদিও সিবিআই একথা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, "প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, সে যতই হাই প্রোফাইল হোন বা সাধারণ, পুরুষ হোন বা মহিলা। কাউকে ছাড়া হবে না।"