এভাবে আর কতদিন! জতুগৃহ কলকাতা আছে কলকাতাতেই
জতুগৃহ রয়েছে জতুগৃহেই। কলকাতা শহর জুড়ে পাতা রয়েছে আগুনের ফাঁদ। তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে নন্দরাম মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনায়।
জতুগৃহ রয়েছে জতুগৃহেই। কলকাতা শহর জুড়ে পাতা রয়েছে আগুনের ফাঁদ। তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে নন্দরাম মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনায়। ১৩ তলা বাড়িতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ৪ হাজার দোকান পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল। কোটি কোটি টাকার জিনিস পুড়ে ছাই হয়েছিল। তবে কেউ মারা যাননি। শীতের রাতের আগুন কেড়ে নিয়েছিল অনেকের সর্বস্ব।
সেই ঘটনা এতটাই বড় প্রভাব ফেলেছিল কলকাতায়, যে সেইসময় শহরের সমস্ত বাজার বিশেষভাবে পরিদর্শন করা হয়। তৈরি করা হয় তদন্ত কমিটি। বিশেষজ্ঞ কমিটিতে ছিলেন কলকাতা পুলিশ, দমকল, কলকাতা পুরসভা থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কর্তারা।
কলকাতার বিভিন্ন বাজার ও এলাকা পরিদর্শন করে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা করে কমিটি। তাতে দেখা গিয়েছিল, কলকাতা জুড়ে এক জতুগৃহের মতো ভয়ঙ্কর অবস্থা তৈরি হয়েছে। তাতে আগুনের একটু ফুলকিতেই পুরোটা ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না।
এরজন্য দায়ী করা হয়েছিল কলকাতার অপরিকল্পিত ইলেকট্রিক সাপ্লাই ও কেবল সহ বিভিন্ন পরিষেবার তারের জটলা ও বিভিন্ন বাজারে প্রচুর পরিমাণে মজুত রাখা রাসায়নিক ও দাহ্য পদার্থকে। এর পাশাপাশি কলকাতার সরু রাস্তাঘাটের কথাও রিপোর্টে বলা হয়। সেখানে আগুন লাগলে প্রতিরোধ করা কার্যত অসম্ভব হয়ে ওঠে।
বিশেষজ্ঞদের এই আশঙ্কাকে সত্যি করে তারপরে সূর্যসেন স্ট্রিটে, পার্কস্ট্রিটে স্টিফেন কোর্টে আগুন লাগে। যার জেরে গোটা কলকাতা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এর পাশাপাশি আমরি হাসপাতালেও আগুন লেগে প্রায় ৯০ জন মানুষ মারা যান। কলকাতায় সাম্প্রতিক সময়ে আগুনে এত মানুষ মারা যাননি।
এর পাশাপাশি হাতিবাগান বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাতেও সকল আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এই ঘটনাগুলিই বারবার প্রমাণ করেছে যে কলকাতা জতুগৃহ হয়ে রয়েছে। তপসিয়া, তিলজলা, পার্ক সার্কাস, কসবা, ট্যাংরা এলাকাগুলি জতুগৃহ হয়ে রয়েছে। প্রতিবারই বিশেষজ্ঞ কমিটি বসে। তার রিপোর্টও জমা পড়ে। উদ্যোগও নেওয়া হয়। তবে কলকাতা থাকে কলকাতাতেই। বাগরি মার্কেটের অগ্নিকাণ্ড সেই ঘটনাই ফের প্রমাণ করে দিল।