সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে দ্রুত, ভারত মহাসাগরে তৈরি হচ্ছে মালদ্বীপের ভাসমান শহর
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে দ্রুত, ভারত মহাসাগরে তৈরি হচ্ছে মালদ্বীপের ভাসমান শহর
সমুদ্রপৃষ্ঠের উপর ভাসছে মালদ্বীপের এক শহর। পরিবেশগত সংকট এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এতটাই দ্রুতহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে যে, ভারত মহাসাগরে ভাসমান শহর তৈরি করা হচ্ছে। মালদ্বীপের মালে শহর রূপ নিচ্ছে ভাসমান শহর হিসেবে। মাত্র ১০ মিনিটের নৌকায় পৌঁছে যাওয়া যাবে এই ভাসমান শহরে। বিশ্ব উষ্ণায়নের আবহে এক নতুন পরিকল্পনার বাস্তবায়িত হতে চলেছে।
শহরটির নকশা করা হবে মস্তিষ্কের প্রবালের মতো
প্রযুক্তিবিদরা জানিয়েছেন, শহরটির নকশা করা হবে মস্তিষ্কের প্রবালের মতো। এতে ৫০০০টি ভাসমান ইউনিট থাকবে। সেইসব ইউনিটগুলির মধ্যে থাকবে বাড়ি, রেস্তোরাঁ, দোকান এবং স্কুল। প্রথম ইউনিটগুলি জুন মাসেই উন্মোচন করা হবে। মালদ্বীপের এই ভাসমান শহরে একটি স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টের দাম দেড় লক্ষ ডলার থেকে শুরু হবে। একটি বাড়ির দাম হবে আড়াই লক্ষ ডলার পর্যন্ত।
২০২৪ সালের শুরু থেকেই এই দ্বীপে বসবাস করা যাবে
এই শহরের নির্মাতারা আশা করছেন, বাসিন্দারা ২০২৪ সালের শুরু থেকেই এই দ্বীপে বসবাস করতে বা যেতে শুরু করবে। পুরো শহর গড়ার কাজ ২০২৭ সালের মধ্যে শেষ হবে। ডাচ ফার্ম ওয়াটারস্টুডিও এবং মালদ্বীপ সরকার যৌথভাবে মালদ্বীপ ফ্লোটিং সিটি তৈরি করছে। পাঁচ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ২০ হাজার জন লোকের বসবাসযোগ্য করে গড়ে তোলা হবে শহরকে।
বিশ্বের দ্বিতীয় ভাসমান শহর মালে, প্রথমটি কী
মালদ্বীপের এই মালে হবে বিশ্বের দ্বিতীয় ভাসমান শহর। প্রথম ভাসমান শহর হিসেবে এপ্রিলে দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বুসানে জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষণা করা হয়েছিল। ওশেনিক্স সিটি নামে পরিচিত ওই শহর ১২ হাজার লোকের বসবাসযোগ্য ছিল। ২০২৩ সালে ওই শহরকে এক লাখ মানুষের শহরে পরিণত করার কাজ শুরু হবে।
মালদ্বীপবাসী এই স্বপ্নের শহরের অপেক্ষায় রয়েছে
মালদ্বীপের ৫ লক্ষ বেশি মানুষের জন্য একটি নতুন আশা নিয়ে হাজির হয়েছে শহরটি। শহরটির ডিজাইনকারী আর্কিটেকচার ফার্ম ওয়াটার-স্টুডিওর প্রতিষ্ঠাতা কোয়েন ওলথুইস বলেছেন, "এই শহর প্রমাণ করবে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন, বৃহৎ জনগোষ্ঠী এবং জলের উপর স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যায়। এবং তা নিরাপদও। মালদ্বীপবাসী এই স্বপ্নের শহরের অপেক্ষায় রয়েছে।
রংধনু রঙের বাড়ি ভাসমান শহরের প্রধান আকর্ষণ
মালদ্বীপ ফ্লোটিং সিটির বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে রংধনু রঙের বাড়ি। এইসব বাড়ি স্থানীয় লোকেদের আকর্ষণ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। প্রশস্ত ব্যালকনি এবং সমুদ্রের তীরের দৃশ্য প্রতিটি বাড়ি থেকে দেখা যাবে। পরিবহনের জন্য নৌকা রাখা হয়েছে। বাসিন্দারা নৌকায় ঘুরে বেড়াতে পারে অথবা তারা হাঁটতে, সাইকেল চালাতে বা বৈদ্যুতিক স্কুটারও চালাতে পারে।
শহর উন্নয়নের ধারায় বিরাট পরিবর্তন আসবে বিশ্বজুড়ে
এই ভাসমান শহর গড়ে তুলতে প্রযুক্তি সমস্যা নয়, তবে এটি নিয়ন্ত্রক কাঠামো যা সামঞ্জস্য করতে সময় নেয় বলে ব্যাখ্যা করেন ওলথুইস। তিনি বলেন, "অর্থের দিক থেকেও সাশ্রয়ী। এই ভাসমান শহরের উন্নয়নের খরচ জলের তলদেশের অবকাঠামো এবং সম্পত্তি ধ্বংসের খরচের থেকে কম। এর ফলে শহর উন্নয়নের ধারায় বিরাট পরিবর্তন আসবে বিশ্বজুড়ে।"