বিরাট থেকে রোহিত, তারপর? ভারত অধিনায়ক হিসেবে পছন্দের নাম সৌরভের বোর্ডকে জানালেন সানি
টি ২০ বিশ্বকাপের পর টি ২০ আন্তর্জাতিকে ভারত অধিনায়ক হতে চলেছেন রোহিত শর্মা। টি ২০ বিশ্বকাপে তাঁকেই ভারতীয় দলের সহ অধিনায়ক রাখা হয়েছে। এর আগে, ভারতকে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে নেতৃত্ব দিলেও পাকাপাকিভাবে রোহিত শর্মা দায়িত্ব পেতে চলেছেন এবার। সব কিছু ঠিকঠাক চললে দেশের মাটিতেই ফের ভারতকে টি ২০ আন্তর্জাতিকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যাবে রোহিত শর্মাকে। কেন না, টি ২০ বিশ্বকাপের পর টেস্ট ও টি ২০ সিরিজ খেলতে ভারতে আসার কথা নিউজিল্যান্ডের।
বিরাটের পর রোহিত
রোহিত শর্মার কোচ দীনেশ লাড ওয়ানইন্ডিয়া বাংলাকে বলেছিলেন, রোহিত যখন প্রত্যাশিত সাফল্য পাচ্ছিলেন না তখন তাঁর কেরিয়ারকে অন্য খাতে বইয়ে দেয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়কত্ব। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স রোহিতের নেতৃত্বে পাঁচবার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে আইপিএলের সফলতম দল হিসেবে প্রতিষ্ঠার ফাঁকে নিজের দক্ষতাকেও অন্য উচ্চতায় তুলে নিয়ে গিয়েছেন রোহিত। অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব উপলব্ধি করে তিনি নিজের ইনিংস সম্পর্কে আরও যত্নশীল হন। চলতি বছরে তো স্বপ্নের ফর্মে রয়েছেন রোহিত শর্মা। ভারতীয় দলে ব্যাটসম্যানদের মধ্যে বিগত কয়েকটি সিরিজ ধরে তিনিই সবচেয়ে ধারাবাহিক। সবচেয়ে বড়় কথা ক্যাপ্টেন্সি রোহিতের চাপ বাড়ায়নি। বরং অধিনায়কত্ব উপভোগ করে তিনি অনেক বেশি সাফল্য পাচ্ছেন তিন ফরম্যাটেই। ধারাবাহিকভাবে সাফল্য এবং ভরসা হিসেবে উত্তরণ এবার রোহিতকে টি ২০ দলের অধিনায়ক করতে চলেছে পাকাপাকিভাবে।
রোহিতের রেকর্ড
এবারের টি ২০ বিশ্বকাপে বিরাট কোহলি নেতৃত্ব দেবেন। আগামী বছর আবার টি ২০ বিশ্বকাপ রয়েছে। সব ঠিকঠাক চললে সেই বিশ্বকাপের রোহিতই দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পাবেন। ভারতের টি ২০ অধিনায়ক হিসেবেও রোহিতের রেকর্ড যথেষ্ট চমকপ্রদ। ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল অবধি রোহিত ভারতকে ১৯টি টি ২০ আন্তর্জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার মধ্যে জয় এসেছে ১৫টিতে, পরাজয় চারটিতে। ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে রোহিতের নেতৃত্বে ভারত ১০টি একদিনের আন্তর্জাতিক খেলেছে। তার মধ্যে জিতেছে আটটিতে, পরাজয় ২টিতে। রোহিতের একদিনের আন্তর্জাতিকে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি রয়েছে। তার মধ্যে মোহালিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে অধিনায়ক হিসেবে ১৫৩ বলে অপরাজিত ২০৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন রোহিত, ভারত সেই ম্যাচ জেতে ১৪১ রানে।
ভাবনায় রাহুল, পন্থ
তবে রোহিত শর্মার পাশাপাশি ভবিষ্যতের অধিনায়ক কে হতে পারেন সেটা নিয়েও জল্পনা চলছে। এক্ষেত্রে দুটি নাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তাঁরা হলেন লোকেশ রাহুল ও ঋষভ পন্থ। ঋষভ পন্থ দিল্লি ক্যাপিটালসকে এবারের আইপিএলেই প্রথম নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিন ফরম্যাটে আপাতত তাঁর জায়গা পাকা হলেও অধিনায়ক হিসেবে পরীক্ষিত নন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে আছেন লোকেশ রাহুল। রাহুল পাঞ্জাব কিংসকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আইপিএলে। ব্যাট হাতেও ফর্মে রয়েছেন। তিনি অস্ট্রেলিয়া সফরে বিরাট কোহলির দলে সহ অধিনায়ক ছিলেন। এমনও হয়েছে বিরাট ও রোহিত একসঙ্গে মাঠে নেই, এই অবস্থাতেও দলকে কয়েক ওভার নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাহুল।
গাভাসকরের পছন্দ
রাহুলকে ভবিষ্যতের অধিনায়ক হিসেবে তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন সুনীল গাভাসকরও। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সানির মতে, এটা দেখে ভালো লাগল যে বিসিসিআই আগামীর কথা ভেবে তৈরি হতে চাইছে। ভবিষ্যতের রূপরেখা ঠিক করে রাখা গুরুত্বপূর্ণও বটে। যদি নতুন অধিনায়ক হিসেবে কাউকে গ্রুম করতে হয় তাহলে লোকেশ রাহুলের কথা ভাবা উচিত। তিনি ভালো খেলছেন। ইংল্যান্ডেও তিনি যথেষ্ট ভালো ব্যাট করেছেন। আইপিএল কিংবা ৫০ ওভারের ক্রিকেটেও আন্তর্জাতিক ম্যাচে সাফল্য রয়েছে। ফলে রাহুলকেই দলের সহ অধিনায়ক করে দেওয়া দরকার। কর্নাটকের রাহুলের নেতৃত্বদানের দক্ষতার প্রশংসা করে গাভাসকর বলেন, আইপিএলে তিনি ভালোভাবেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অধিনায়কত্ব তাঁর ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে বোঝা হয়ে দাঁড়ায়নি। ফলে ভবিষ্যতের অধিনায়ক হিসেবে তাঁকেই ভাবা প্রয়োজন।
কোচ বাছাই প্রসঙ্গ
রবি শাস্ত্রীর পর ভারতের কোচ কে হবেন সে ব্যাপারে ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটির পরামর্শ নিয়ে বিসিসিআইয়েরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত বলে মনে করেন গাভাসকর। এ ব্যাপারে অধিনায়কের সঙ্গে আলোচনার দরকার নেই বলে সাফ জানিয়েছেন সানি। তিনি বলেন, এটা ঠিক কোচের সঙ্গে অধিনায়কের বোঝাপড়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে কোচ ঠিক করা উচিত নয়। যেমন প্রিন্সিপাল বা প্রফেসর ঠিক করার আগে ছাত্রের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন নেই, তেমনটাই করা উচিত দলের কোচ ঠিক করার ক্ষেত্রেও।