স্টিভ স্মিথ নন, ধোনিই পুনের আসল অধিনায়ক! কেন? জানতে হলে চোখ রাখুন এই প্রতিবেদনে
উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে নিঃশব্দে ধোনি যে ভূমিকা পালন করছেন তা অবিশ্বাস্য। অধিনায়ক স্মিথের সিংহভাগ সমস্যা ধোনি নিজেই সমাধান করে দিচ্ছেন। ফলে বুঝতে অসুবিধা নেই, পুনের অসাধারণ সাফল্যের নেপথ্য নায়ক কে?
এবছর আইপিএল শুরুর আগে যখন মহেন্দ্র সিং ধোনিকে সরিয়ে স্টিভ স্মিথের নাম অধিনায়ক হিসাবে ঘোষণা হয়েছিল তখন সারা দেশে হইচই পড়ে যায়। ভারতের সর্বকালের সবচেয়ে সফল অধিনায়ককে এভাবে সরিয়ে দেওয়ায় ধোনি ভক্তরা পুনে টিম ম্যানেজমেন্টের মুণ্ডপাত করেন স্বাভাবিকভাবেই।
এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন অনেক ভারতীয় ক্রিকেটারই। অনেকেই ধোনির পাশে দাঁড়ান। তবে গোলমাল আরও বাঁধে পুনে স্মিথের নেতৃত্বে প্রথম ম্যাচ জেতার পরে।
পুনে দলের মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কার ভাই হর্ষ গোয়েঙ্কা টুইটারে মহেন্দ্র সিং ধোনির সমালোচনা ও স্টিভ স্মিথকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন। সেই ঘটনায় ফের একবার সারা ক্রিকেটজগত উত্তাল হয়ে ওঠে।
এরপরে পুনে পরপর তিনটি ম্যাচ হারে। এবং সমালোচনা যেন তখন থামতেই চাইছিল না। তবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে পুনে ঘুরে দাঁড়ায়। এবং আশ্চর্যজনকভাবে সেদিন মাঠে অধিনায়ক ধোনিকে ফের সক্রিয় মনে হচ্ছিল। স্মিথ নাকি ধোনি, কে অধিনায়ক তা গুলিয়ে যাচ্ছিল।
কোহলি, গেইল, শ্যেন ওয়াটসনদের থামাতে বোলার, ফিল্ডারদের পরামর্শদাতা তখন ধোনি নিজে। স্মিথও তখন ধোনির স্মরণ নিয়েছেন বলা যায়।
অনেকে ভেবেছিলেন, অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়ার পর মাঠে নেমে ততটা আগ্রাসী হবেন না ক্যাপ্টেন কুল। গা ছাড়া ভাবে খেলবেন পুনের হয়ে। তবে তা হয়নি। তিনি যে ভারতের সফলতম অধিনায়ক। মাঠে নেমে দলের দুর্দশায় কীভাবে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারেন আদ্যন্ত পেশাদার হয়ে? তা হয়ওনি। স্মিথের অধিনায়কত্বকে সম্মান জানিয়ে ধোনি নিজের মতো করে ফিল্ডিং সাজিয়েছেন, স্মিথকে পরামর্শ দিয়েছেন। স্মিথও ধোনির কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনেছেন ও হাতেনাতে ফল পেয়েছেন।
দ্বিতীয়বার আইপিএল খেলেই পুনের নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি আইপিএল ফাইনালে উঠেছে। এবং তাদের দলে রয়েছেন এমন একজন কিংবদন্তি যিনি তার আগে ৬ বার আইপিএল ফাইনাল খেলে ২ বার ট্রফি জিতেছেন।
কোয়ালিফায়ারের শেষ ম্যাচে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে পিচে বল পড়ে থমকে আসছিল। ধোনিই স্মিথকে পরামর্শ দেন ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে শর্ট মিড উইকেটে দাঁড়াতে। আর ওখানে দাঁড়িয়েই অম্বাতি রায়াডু ও পোলার্ডের ক্যাচ ধরেন স্মিথ ও দৌড়ে যান ধোনির কাছে অভিনন্দন জানাতে।
উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে নিঃশব্দে ধোনি যে ভূমিকা পালন করে চলেছেন তা অবিশ্বাস্য। অধিনায়ক স্মিথের সিংহভাগ সমস্যা ধোনি নিজেই সমাধান করে দিচ্ছেন। ফিল্ডার পরিবর্তন, বোলিং পাল্টানো, কোন ব্যাটসম্যানের জন্য কী পরিকল্পনা করতে হবে তা বাতলে দেওয়া, সবই করে চলেছেন ধোনি।
একথা পুনের দুই খেলোয়াড় বেন স্টোকস ও মনোজ তিওয়ারিও স্বীকার করে নিয়েছেন। স্টোকস বলেছেন, ধোনির দরজা সকলের জন্য খোলা। ফিল্ড প্লেসমেন্টে তিনি সেরা। স্মিথ ক্যাপ্টেন ঠিকই তবে সেই জানে ধোনির আইডিয়ার জুড়ি নেই। ফলে সবজায়গাতেই স্মিথ ধোনির সাহায্য নিয়েছে।
মনোজও আগের ম্যাচে দলকে ফাইনালে তুলে জানিয়েছেন, স্মিথকে ফ্র্যাঞ্চাইজি অধিনায়ক বেছেছে। তবে ভারতীয় খেলোয়াড়রা কে কেমন খেলে তা নিয়ে স্মিথের তত ধারণা নেই। ফলে ধোনি তাঁকে সাহায্য করছেন। মাঠে ধোনিই ফিল্ডিং সাজাচ্ছেন। ফলে স্মিথের কাজ সহজ হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া ধোনি প্রতিটি খেলোয়াড়কে আলাদা করে সাহায্য করছেন।
ফলে বুঝতে কোনও অসুবিধা নেই, পুনের অসাধারণ সাফল্যের নেপথ্য নায়ক কে!