ইমরান থেকে যুবরাজ, ৬ তারকা ক্রিকেটার যে বাঙালি নায়িকাদের প্রেমে হন মশগুল
ক্রিকেটের সঙ্গে বলিউড নায়িকাদের যোগ নতুন কিছু নয়। বাংলার শর্মিলা ঠাকুরের সঙ্গে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক মনসুর আলি খান পতৌদির প্রেম গড়িয়েছিল পরিণয়ে। কিন্তু চার বাঙালি নায়িকার সম্পর্কে পাঁচ ক্রিকেটারের সম্পর্ক নিয়েও শোরগোল পড়েছে বিভিন্ন সময়ে। ছয় ক্রিকেটারই আবার দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন। তবে তাঁদের এই সম্পর্ক পরিণতি পায়নি। বন্ধুত্ব, প্রেমের সীমানা ছাড়িয়ে পৌঁছাতে পারেনি বিয়ের আসর পর্যন্ত।
মুনমুন সেন
সুচিত্রা সেনের কন্যা মুনমুন সেন। বাংলা ছবির পাশাপাশি বেশ কয়েকটি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন। পরবর্তীকালে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদও হয়েছিলেন। সেই মুনমুন সেনের সঙ্গে দুই তারকার প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা গুঞ্জন ছড়িয়েছে। ইমরান খানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা এক সময় শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, অমৃতা সিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কের পাশাপাশি এক সময় মুনমুন সেনের সঙ্গেও জড়িয়ে গিয়েছিল বর্তমানে ভারতীয় দলের কোচ রবি শাস্ত্রীর নাম।
রিয়া-যুবরাজ
মায়ের মতোই কন্যা রিয়া সেনও দুই ক্রিকেটারের প্রেমে পড়েছিলেন। যদিও দিদি রাইমার সঙ্গে কোনও ক্রিকেটারের সম্পর্কের কথা কখনও শোনা যায়নি। রিয়ার সঙ্গে যে দুজন ক্রিকেটারের সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে এসেছিল তাঁরা দুজনেই ভারতের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন। একজন যুবরাজ সিং এবং অপরজন এস শ্রীসন্থ। দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে প্রেম ভেঙে যাওয়ার পর যুবরাজ সিংয়ের সঙ্গে রিয়া সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল বলে জানা গিয়েছিল। দুজনকে একসঙ্গে দেখাও যেত। যদিও এই সম্পর্ক খুব বেশিদিন টেকেনি। কিম শর্মার সঙ্গেও যুবির সম্পর্ক ছিল কয়েক বছর। তবে পরে হ্যাজেল কিচকে বিয়ে করেন যুবরাজ।
শ্রীসন্থ-রিয়া
ভারতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার এস শ্রীসন্থের সঙ্গেও রিয়া সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন বলে শোরগোল পড়েছিল। একটি গহনার বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ে দুজনের আলাপ। পরে সম্পর্ক এতটাই নিবিড় হয়েছিল যে শ্রীসন্থের খেলা থাকলে মিস করতেন না রিয়া। এমনকী ইডেনেও কোচি টাস্কার্সের খেলা দেখতে এসেছিলেন এবং শ্রীসন্থকে নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে এড়িয়ে যান। তবে পরে ম্যাচ গড়াপেটা কাণ্ডে শ্রীসন্থ জড়িয়ে পড়ার পর থেকেই রিয়া নিজেকে সরিয়ে নিতে থাকেন। বলেছিলেন, শ্রীসন্থের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের গুঞ্জন মিডিয়ার জল্পনা। কোচি টাস্কার্সের তিনটি ম্যাচেই মাত্র তিনি হাজির ছিলেন।
সন্দীপ ও দেবশ্রী
ভারতীয় ক্রিকেট মহলে অনেকেই মনে করেন সন্দীপ পাটিলের প্রথম বিয়ে ভেস্তে যাওয়ার কারণ দেবশ্রী রায়ের সঙ্গে তাঁর প্রেম। কভি আজনবি থে ছবির সেটে আলাপ। তখন থেকেই ঘনিষ্ঠতা বেড়েছিল বলে শোনা যায়। ওই ছবিতে সন্দীপ পাটিল অভিনয় করেছিলেন, নায়িকা ছিলেন পুনম ধিলোঁ ও দেবশ্রী রায়। ছবিটিতে অভিনয় করেছিলেন সৈয়দ কিরমানিও। গীত মেরে হোঁঠো কো দে গ্যায়া কোই গানটি হিট হয়েছিল সন্দীপ আর দেবশ্রীর সম্পর্কের রসায়নের জন্যই। ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ জয়ের পর ছবির শুটিং শুরু হয়। চোটের কারণ দেখালেও মূলত এই ছবির জন্যই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাননি পাটিল। ১৯৮৫ সালে ছবি মুক্তির পর এবং বক্স অফিসে ছবিটি মুখ থুবড়ে পড়ার পর অবশ্য সন্দীপের সঙ্গে দেবশ্রীর দূরত্ব বাড়ে। পরে সন্দীপ দীপাকে এবং দেবশ্রী প্রসেনজিৎকে বিয়ে করেন। গত বছর পূর্ব বর্ধমানে একটি ক্রিকেটের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাটিল। দেবশ্রীর সঙ্গে চিত্রায়িত তাঁর ওই গানটি বক্সে বাজতেই হাসির ঝিলিক দেখা গিয়েছিল সন্দীপ পাটিলের মুখে। গানটি শুনেই হয়তো ফিরে গিয়েছিলেন সেই দিনগুলিতে।
আক্রম ও সুস্মিতা
আরেক বাঙালি অভিনেত্রী সুস্মিতা সেনের সঙ্গে পাক স্পিডস্টার ওয়াসিম আক্রমের সম্পর্ক নিয়েও জোর চর্চা চলেছিল। এমনকী তাঁরা বিয়ে করছেন বলেও খবর রটে যায়। ২০০৮ সালে এক খিলাড়ি এক হাসিনা রিয়ালিটি সেটের মঞ্চে আক্রমের সঙ্গে আলাপ সুস্মিতার। তখন থেকেই তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন। দুজনকে বিভিন্ন জায়গাতে দেখাও যায়। পরের বছর আক্রমের প্রথম স্ত্রী হুমা প্রয়াত হলে দুজন আরও কাছাকাছি আসেন। ২০১৩ সালে অস্ট্রেলীয় শানিয়েরাকে বিয়ে করেন ওয়াসিম। আক্রম ও সুস্মিতা দুজনেই প্রকাশ্যে বিবৃতিতে দিয়ে তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক বা একসঙ্গে থাকার ভাবনার কথাকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন। আক্রম বলেছিলেন, গুজব অস্বীকার করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি। তবে আক্রম যে তাঁর ভালো বন্ধু সে কথা সুস্মিতা স্বীকার করেছিলেন, যদিও তাঁর সঙ্গে প্রেমের যাবতীয় জল্পনাকে স্রেফ গুজব হিসেবে উড়িয়ে দিয়ে।
ছবি- টুইটার ও ইউটিউব