অনুভূতি এক হলেও গল্প আলাদা 'ভুল ভুলাইয়া ২'–এর, কার্তিক আরিয়ানের সিনেমায় শো স্টপার টাবু
অনুভূতি এক হলেও গল্প আলাদা 'ভুল ভুলাইয়া ২'–এর, কার্তিক আরিয়ানের সিনেমায় শো স্টপার টাবু
২০০৭ সালে অক্ষয় কুমার–বিদ্যা বালান অভিনীত ভুল ভুলাইয়া এক কথায় একাধিকভাবে ভৌতিক রহস্যের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। স্ত্রী ও প্যারিস অফ দ্য ওয়ার্ল্ড–এর আগে এই সিনেমায় একটি লোককাহিনী রীতিমতো গায়ে কাঁটা বসিয়ে দিয়েছিল। আর এটা বলা ভুল হবে না যে ভবিষ্যতের রুহি ও স্ত্রীদের জন্য মঞ্জুলিকা অনেক আগেই রাস্তা তৈরি করে গিয়েছেন।
২০২২ সালে ভুল ভুলাইয়ার দুনিয়ায় পুনরায় সফরের পর বোঝা যায় এটা অনেকটাই আলাদা। সিনেমায় যে হাস্যরস রয়েছে, তা অনেকটা স্ট্যান্ড–আপ কমেডির মতো, সিনেমার সঙ্গীত সেভাবে মন জয় করেনি এবং অভিনেতা যাঁরা এই আধুনিক প্রজন্মের কাছে খুব প্রিয়, কার্তিক আরিয়ান ও কিয়ারা আদবাণী। গল্পের পটভূমি সেই হাভেলি এবং মঞ্জুলিকা তা ছেড়ে কোথাও যায়নি। প্রায় ১৮ বছর ধরে একটা ঘরেই বন্ধ রয়েছেন মঞ্জুলিকা এবং কেউ তাঁকে মুক্ত করেনি এতদিন।
সিনেমার কাহিনী
সিনেমার শুরুতে দেখা যায় রুহান রান্ধাওয়া (কার্তিক আরিয়ান) ও রীত (কিয়ারা আদবাণী)-এর দুর্ঘটনাবশত বন্ধুত্ব হয়। রুহান হ্যাপি গো লাকি ধরনের ব্যক্তিত্ব এবং রীত রাজস্থান ছেড়ে মেডিক্যাল পড়ার জন্য মানালি গিয়েছেন। যদিও রীত এখন তাঁর বাড়ি ফিরছেন, যেখানে তাঁর বিয়ের প্রস্তুতি চলছে। মানালিতে রুহানের সঙ্গে পরিচয় হওয়া রীত, তাঁর কথায় রাজস্থানের বাস মিস করে দেন, যেটা পরে খাদে পড়ে যাওয়ার খবর আসে। এরকম অবস্থায় রীতের মৃত্যুর খবর তাঁর পরিবারের কাছে পৌঁছে যায়। রীত যখন তাঁর সুস্থতার জন্য বাড়িতে ফোন করে, তখন সে জানতে পারে যে তাঁর বোন তাঁর বাগদত্তার প্রেমে পড়েছে। তখন রীত তাঁর মৃত্যুর গুজবকে আরও কিছুদিন চলার সিদ্ধান্ত নেন। এখান থেকেই গল্প সামনের দিকে এগোয়। রীতকে সাহায্য করার জন্য, রুহান তাঁর সাথে রাজস্থানে যায়, যেখানে সে জানতে পারে যে মঞ্জুলিকার আত্মা গত ১৮ বছর ধরে হাভেলির একটি ঘরে বন্দি রয়েছে। সিনেমায় আপনাকে অনেক টুইস্ট, টার্ন এবং সাসপেন্স সহ একটি রোমাঞ্চকর সফরে নিয়ে যায়। যা জানতে ও বুঝতে হলে যেতে হবে সিনমা হলে।
ভুল ভুলাইয়া থেকে আলাদা এর সিক্যুয়েন্স
২০০৭ সালে প্রিয়দর্শনের সাইকোলজি থ্রিলার ভুল ভুলাইয়া-এর মতো এই সিনেমা সেভাবে মনোরঞ্জন দিতে না পারলেও কিছু মজার জিনিস ও একটু আলাদা রকমের গল্প আপনাদের অবশ্যই আনন্দ দেবে। ভুল ভুলাইয়ার সিক্যুয়েন্সে আগের সিনেমার অনুভূতি পেলেও গল্প একেবারে আলাদা ধরনের। তবে কিছু ক্ষেত্রে অযথা বেশ কিছু দৃশ্য আপনার বিরক্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে।
পরিচালকের সফলতা–ব্যর্থতা
কমেডি
চলচ্চিত্র
নির্মাণের
বাদশা,
আনিস
বাজমি
প্রথমবারের
মতো
হরর
কমেডি
ঘরানার
ছবি
তৈরির
চেষ্টা
করেছেন
এবং
তিনি
এই
প্রচেষ্টায়
অনেকাংশে
সফল
হয়েছেন
বলে
প্রমাণিত
হয়েছে।
ছবির
অনেক
দৃশ্যই
আপনাকে
হাসিয়ে
হাসিয়ে
পাগল
করবে
আবার
কিছু
দৃশ্যে
আপনি
ভয়ে
চোখ
বন্ধ
করে
নিতেও
বাধ্য
হবেন।
কমেডি
ও
ভৌতিকের
সংমিশ্রণ
আপনাকে
বিনোদনের
একটি
সুন্দর
সফরে
নিয়ে
যাবে।
এই
ছবির
সংলাপ
ও
ওয়ান
লাইনারই
হল
জীবন।
তবে
কিছু
ক্ষেত্রে
পরিচালক
আকর্ষণ
তৈরি
করতে
ব্যর্থ
হয়েছেন।
অযথা
অনেক
দৃশ্যের
উৎপত্তি
হয়েছে।
অভিনয়
রুহ বাবার চরিত্র নিয়ে কার্তিকের ওপর মারাত্মক চাপ ছিল, কারণ তাঁর তুলনা অক্ষয় কুমারের সঙ্গে করা হবে। যদিও পুরো সিনেমায় কার্তিক তাঁর চরিত্রটিকে পুরো আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। হতে পারে এই সিনেমাটি কার্তিকের কেরিয়ারে টার্নিং পয়েন্ট। সিনেমায় কিয়ারা আদবাণীকে অভিনয়ের সুযোগ সেভাবে দেওয়া হয়নি। তবে এই সিনেমার প্রাণ ছিলেন টাবু। অনেক টুইস্ট ও টার্নের সঙ্গে টাবু তাঁর দমদার অভিনয় দিয়ে আপনাকে সারপ্রাইজ করতে পারেন। ভুল ভুলাইয়া থেকে আসা একমাত্র ছোটা পণ্ডিত তথা রাজপাল যাদব আপনাকে পুরনো সিনেমার কথা মনে করিয়ে দিতে পারেন। জ্যোতিষী বাবা হিসাবে, সঞ্জয় মিশ্র এবং তার স্ত্রী অশ্বিনী কালসেকরের জুটি অসাধারণ বিনোদন করে। মিলিন্দ গুনাজি, রাজেশ শর্মা, অমর উপাধ্যায়ের মতো অভিনেতারা তাদের চরিত্রের প্রতি সম্পূর্ণ সুবিচার করেছেন।
বলিউড মশলাদার সিনেমা
তবে কার্তিক আরিয়ানের ভক্তদের জন্য ভুল ভুলাইয়া ২ একেবারে মশলাদার সিনেমা এবং আপনার স্বাদকে পূরণ করার জন্য এতে সবকিছুই রয়েছে। তাই দর্শকদের মনোরঞ্জনের জন্য এই সিনেমা দেখাই যায়।