বিদ্যার 'শেরনি' কি কোনও সত্যি ঘটনার কথা মনে করাচ্ছে! বিতর্ক চড়ছে কিছু অভিযোগ ঘিরে
সোশ্যাল মিডিয়া বলছে, ২০২১ সালের সেরা ছবি 'শেরনি'। বিদ্যার দাপুটে অভিনয় ক্ষমতাকে পরিচালক বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজে লাগিয়ে এক অসামান্য কাহিনি উপহার দিয়েছেন। কার্যত বলিউডে হালফিলের ছবিতে এই অসামান্য স্টোরি লাইন আজ পর্যন্ত সেভাবে দাগ কাটেনি। পরিচালকের সাহসিকতা ও বিদ্যার অভিনয়ের পাশাপাশিই এই ছবি ঘিরে আচমকা নজর কাড়তে শুরু করেছে বেশ কিছ বিতর্ক। প্রশ্ন উঠছে আদৌ কি বিদ্যা বালনের ছবি 'শেরনি' বাস্তবের এক সত্যি ঘটনাকে তুলে ধরছে? আর সেই ঘটনা কি মহারাষ্ট্রে মানবঘাতী বাঘিনী অবনীর কাহিনি?
'শেরনি' ছবির শুরুতেই অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে
প্রসঙ্গত, বিদ্যা বালনের অভিনীত ছবি 'শেরনি'র শুরুতেই নির্মাতারা জানিয়ে দিয়েছেন ছবির গল্পের সঙ্গে কোনও সত্যি ঘটনার যোগ নেই। ছবির গল্প সম্পূর্ণ একটি 'ফিকশন'। তবে ছবির নির্মাতাদের বক্তব্যের পরও ছবিতে দেখানো বেশ কিছু ঘটনার সঙ্গে মহারাষ্ট্রের ইয়াবতামাল জেলার রালেগাঁও এলাকার জঙ্গলে উদ্ধার হওয়া বাঘিনী অবনীর ঘটনা অনেকেরই মনে পড়েছে। 'শেরনি' ছবিতে বিদ্যাকে বনদফতরের ডিএফওর ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। বাস্তবের তথ্য বলছে মহারাষ্ট্রের জঙ্গলে যখন বাঘিনী অবনীর মৃত্যু হয়, তখন আইএফএস অফিসার কে এম অবর্ণা ছিলেন সেখানের দায়িত্বে । যে অবর্ণার চরিত্রের সঙ্গে অনেকটাই মিলে যাচ্ছে 'শেরনি'র বিদ্যা বালান।
অবনীর মৃত্যুর সময়ের ঘটনা ও অবর্ণার বক্তব্য
মহারাষ্ট্রের জঙ্গলে যখন বাঘিনী অবর্ণা মারা যায়, তখন সবে মাত্র সেখানে ২০১৭ সালে দায়িত্বে আসেন আইএফএস অফিসার কে এম অবর্ণা। অবনী সেই সময় টি ওয়ান নামে পরিচিতি পায়। এদিকে, 'শেরনি' ছবিতে দেখানো হয়েছে 'টি ১২' নামের এক বাঘিনীর খোঁজে বুঁদ বিদ্যারা। ছবিটি নিয়ে আইএফএস অফিসার অবর্ণা জানিয়েছেন যে "শেরনি'র সঙ্গে বাস্তবের ঘটনার অনেকংশেই মিল নেই। তবে শেরনিই সম্ভবত ভারতের প্রথম ছবি যা অই সমস্যাকে তুলে ধরেছে। ছবির নির্মাতারাও শ্রীমতি কে এম অবর্ণার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেননি ছবি নিয়ে , বলে জানান এই আইএফএস অফিসার। তিনি জানান, ছবিতে যদি বাঘিনীর সঙ্গে তাদের সন্তানরা কীভাবে বেঁচে থাকে ওই রকম জঙ্গলে , তা দেখানো হত, তাহলে ভালো হত।
শ্যুটার আসগার আলি খান ক্ষুব্ধ!
'শেরনি' ছবিতে দেখানো হয়েছে, বনদফতরের অফিসারের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই শ্যুটার মেরে দিয়েছিলেন মানুষ খেকো বাঘিনীকে। যে ঘটনা রীতিমতো ভয়ঙ্কর। এদিকে, মহারাষ্ট্রে অবনীকে মারেন শ্য়ুটার আসগার আলি খান। ২০১৮ সালের সেই ঘটনার পর ২০২১ সালের ছবি 'শেরনি' তে শ্যুটারের চরিত্র ও গল্পের বিন্যাস নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে নির্মাতাদের নোটিস পাঠান অসগর।
'শেরনি' নির্মাতাদের উত্তরেও অসন্তোষ অব্যাহত
অসগর আলি খান জানিয়েছেন, ছবিতে দেখানো শ্যুটারের চরিত্রটি ও গল্পের বিন্যাসে অবনী হত্যা ঘিরে বহু তথ্য ভুল দেখানো হয়েছে। এই মর্মে তিনি "শেরনি' নির্মাতাদের আইনি নোটিস পাঠালেও তার উত্তরে সন্তুষ্ট নন। ফলে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার পথে তিনি হাঁটতে চলেছেন। তাঁর মতে , তাঁর মতো শ্যুটারের ভাবমূর্তি ক্ষু্ণ্ণ করেছে "শেরনি'র কাহিনি বিন্যাস। তাঁর দাবি অবনি হত্যা নিয়ে এখনও আদালতে মামলা চলছে। ফলে এই ছবি সেই মামলায় বিতর্ক ডেকে আনতে পারে।