অল্প জ্বরে অ্যান্টিবায়োটিক হিতে বিপরীত হতে পারে, নয়া নির্দেশিকা আইসিএমআরের
অল্প জ্বরে অ্যান্টিবায়োটিক হিতে বিপরীত হতে পারে, নয়া নির্দেশিকা আইসিএমআরের
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ সম্প্রতি এক নিষেধাজ্ঞায় অল্প জ্বর ও ভাইরাল জ্বরে অ্যান্টিবায়োটিক এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। আইসিএমআরের চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আইসিএমআর জানিয়েছে, ত্বক এবং নরম টিস্যু সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিকগুলি পাঁচ দিনের, নিউমোনিয়া সংক্রান্ত সংক্রমণের ক্ষেত্রে পাঁচ দিন, হাসপাতাল থেকে হওয়া নিউমোনিয়া সংক্রমণের জন্য আট দিন খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
আইসিএমআরের তরফে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, রোগ নির্নয় করে সেই অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া উচিত। কোনও রকম পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। আইসিএমআরের তরফে জানানো হয়েছে, গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপি সীমিত করা হয়েছে। আইসিএমআরের তরফে জানানো হয়েছে, গুরুতর অসুস্থ রোগীদের মধ্যে সেপসিস এবং সেপটিক শক, নিউমোনিয়া, ভেন্টিলেটর সংক্রান্ত নিউমোনিয়া, নেক্রোটাইজিং ফ্যাসাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যেতে পারে। আইসিএমআরের তরফে জানানো হয়েছে, প্রথমে রোগ নির্নয় করার ওপর জোর দিতে হবে। তারপরেই সেই রোগের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন কি না চিকিসকদের বুঝতে হবে বলে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে।
২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আইসিএমআর একটি সমীক্ষা চালায়। সেই সমীক্ষায় দেখা যায়, ভারতীয় রোগীদের একটা বড় অংশ কার্বাপেনেম ব্যবহার করে। যার ফলে রোগীদের শরীরে অন্য ওষুধ সেভাবে কাজ করে না। কার্বাপেনেম একটি শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক যা মূলত নিউমোনিয়া এবং সেপ্টিসেমিয়া রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই অ্যান্টিবায়োটিকটি অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধ গড়ে তোলে। যার ফলে অন্য চিকিৎসার ওপর প্রভাব পড়ে।
আইসিএমআরের তরফে জানানো হয়েছে, অ্যান্টিবায়োটিক নির্দিষ্ট রোগের ক্ষেত্রে কার্যকর হয়। হালকা জ্বর বা ভাইরাল জ্বরের ক্ষেত্রে এই ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক নিলে তা ভবিষ্যতে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ইমিপেনেমের ব্যবহার ২০১৬ সালে ১৪ শতাংশ ছিল। ২০২১ সালে তা বেড়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। এই অ্যান্টিবায়োটিকটি কোলাই ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
আইসিএমআর জানিয়েছে, Staphylococcus aureus বিভিন্ন ক্লিনিক্যাল রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ত্বকের সংক্রমণ যেমন ফোঁড়া ছাড়াও নিউমোনিয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায় এই গ্রাম পজেটিভ ব্যাকটেরিয়া। আগে যে ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক এসব ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হতো। বর্তমানে সেই ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা অনেক কমে গিয়েছে। নতুন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের শরনাপন্ন হতে হচ্ছে। সেই কারণে চিকিৎসকদের পরামর্শ ছাড়া আইসিএমআর অ্যান্টিবায়োটিক না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।