ক্রমেই বসবাসের অযোগ্য হচ্ছে পৃথিবী, আবহাওয়া নিয়ে চূড়ান্ত সতর্কবার্তায় কী রিপোর্ট রাষ্ট্রপুঞ্জের
মাটির ক্ষয় পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। যার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা আগামিদিনে সহজ হবে না।
মাটির ক্ষয় পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। ফলে পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা আগামিদিনে সহজ হবে না। অর্থাৎ ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে চলেছে পৃথিবী। রাষ্ট্রপুঞ্জের আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারগর্ভনমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি) এমন ভয়ের কথাই রিপোর্টে তুলে ধরেছে। সেখানে বলা হয়েছে পরিবেশের বদল কীভাবে মাটি ও মানবসভ্যতায় প্রভাব ফেলছে এবং আগামিদিনে ফেলবে।
মাটির ক্ষয় হচ্ছে সবচেয়ে বেশি
রিপোর্ট বলছে, মাটির ক্ষয়ে সবচেয়ে বড় কারণ কৃষি। মোট ভূমির ৩৮ শতাংশ কৃষিকাজে ব্যবহৃত হয়। এবং এবং তা উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে গবাদি পশুর চাহিদা আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গিয়েছে।
চাষের জমির পরিমাণ কমেছে
রিপোর্ট বলছে, সেচ হয় এমন জমির পরিমাণ গত পঞ্চাশ বছরে পঞ্চাশ শতাংশ বেড়েছে। তাতে ব্যবহার হয়েছে পরিশ্রুত জল। এছাড়া এত বেশি মাটির ব্যবহারের ফলে মাটিক ক্ষয় অনেক বেড়ে গিয়েছে। যার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে সাব সাহারন আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়।
মাটির ওপরে চাপ
শুধু চাষ বেশি হওয়া নয়, ব্যাপক হারে গাছ কাটাও মাটির ওপরে চাপ তৈরি করছে। এর পাশাপাশি যোগ হয়েছে সারের ব্যাপক প্রয়োগ। ৫০০ শতাংশ হারে বেড়েছে সারের প্রয়োগ। যার ফলে মাটির স্বাস্থ্য আরও খারাপ হয়েছে।
চাল উৎপাদন কমবে
অন্যদিকে তাপমাত্রা বাড়ার ফলে বিভিন্ন মরসুমে ফসলের পরিমাণ কমছে। ২০৫০ সালের মধ্যে ভারতে চাল উৎপাদন ১১ শতাংশ কমতে চলেছে বলে রিপোর্ট বলছে। যার মূল কারণ পরিবেশ, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাড়বে রোগের প্রাদুর্ভাব
গোটা এশিয়ায় পরিবেশের বদলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ, লাওস ও চিনের মতো দেশের। উৎপাদন কমে যাওয়া, দুর্বল পরিকাঠামো, বন্যা, রোগের প্রাদুর্ভাব, পরজীবীর উৎপাতে ফসলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে।
বাড়বে আত্মহত্যা
খাদ্য উৎপাদন কমে গেলে খাদ্য সুরক্ষা ভালো করে হবে না। ফলে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে। এছাড়া আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় ফসল ভালো না হওয়ায় আত্মহত্যার সংখ্যা ভারতে বাড়বে। কারণ এক্ষেত্রে ধারের টাকা শোধ করতে না পেরেই সকলে আত্মহননের পথ বেছে নেন।
এশিয়ায় বিপদ বেশি
বাতাসে যেভাবে কার্বনের পরিমাণ বাড়ছে তাতে এশিয়ার দেশগুলির ক্ষতির আশঙ্কা আরও বেশি। পরিবেশের বদলের ফলে ফসলে প্রোটিন, পুষ্টি, ভিটামিন বি-র মতো উপাদান কমছে। যার ফলে এশিয়ায় ৬০ কোটি মানুষের সামনে সমূহ বিপদ।
বেড়েছে খরা
এশিয়ার ৪৮টি দেশের মধ্যে বর্তমানে ৩৮টি দেশে খরার প্রভাব রয়েছে। ভারতে গত কয়েক দশকে খরার পরিমাণ অনেক বেড়েছে। উত্তর ভারত, মধ্য মহারাষ্ট্র, দক্ষিণ উপকূলে খরার প্রভাব গত কয়েক দশকে অনেক বেড়েছে। যার ফলে খাদ্য নিরাপত্তার অভাব অনেক বড় করে দেখা দিয়েছে। ফলে সবমিলিয়ে ভারত সহ নানা দেশের সামনে সমূহ বিপদ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।