For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

ছবির ক্যানভাসের মতো হিমালয়ের কোলের এক গ্রাম, ঘুরে আসুন গোর্খে

পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম-এর সীমানার অন্যতম গ্রাম এই গোর্খে। উপত্যকার মতো অংশে এই গ্রাম। পাহাড়ের ধাপ ধরে নেমে গেলে ঢোকা যায় গোর্খেতে।

Google Oneindia Bengali News

লম্বা পাইনের মাথা আর নীল আকাশটা যেন নিজেকে ছুঁয়ে ফেলতে চায়। দেখলে মনে হবে পাহাড়ের ধাপে ধাপে উঠে যাওয়া পাইনের জঙ্গলটা যেন নাছোড়। যেভাবেই হোক সে আকাশটা ছুঁয়ে ফেলবে। আর নীলাকাশটাও যেন ততোধিক রসিক। পাইন গাছের মাথাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সে ও যেন আরও উঁচুতে তুলে নেয় তার সীমানাটাকে। পাইন আর আকাশের এই খেলার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দেয় হিমালয়ের উর্তুঙ্গ সব শৃঙ্গ। সূর্যের চকচকি আলোয় হিমালয় তখন যেন রাংতায় মোড়া এবড়ো-খেবড়ো চকোলেট। আসলে গোর্খের মজাটাই এমন। হিমালয়ের কোলে হাজার আট ফিট উপরে এক পাহাড়ি গ্রাম। দার্জিলিং জেলার মধ্যে পড়া গোর্খ-কে বাংলার কাশ্মীর বলে কিন্তু বোধ হতেই পারে।

সিকিম-বাংলার সীমানা

সিকিম-বাংলার সীমানা

পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম-এর সীমানার অন্যতম গ্রাম এই গোর্খে। উপত্যকার মতো অংশে এই গ্রাম। পাহাড়ের ধাপ ধরে নেমে গেলে ঢোকা যায় গোর্খেতে। এই যাত্রা পথে আপনাকে স্বাগত জানাতে তৈরি হয়ে আছে পাহাড়ের বুক থেকে নেমে আসা এক নদী। আর আছে একাধিক পাহাড়ি ফুলের সমাহার। ঘন পাইনের জঙ্গল।

রিনঝিন করা শব্দে আপনাকে ডাকবে গোর্খে খোলা

রিনঝিন করা শব্দে আপনাকে ডাকবে গোর্খে খোলা

পাহাড়ের উপর থেকেই শোনা যায় তার আওয়াজ। জলের এমন আওয়াজে মনে করতেই পারেন সামনে রয়েছে কোনও বিশালাকৃতির নদী। কিন্তু, চোখের পথে সে নজরে এলে বিস্মিত হতেই পারেন। কারণ, আকার-আকৃতিতে এটাকে একটা বড়সড় ঝর্নার ধারা বলেই মনে হতে পারে। যে পাহাড়ে পাহাড়ে ধাপ ধাপ ধরে নিজেও যেন মিলিয়ে গিয়েছে গোর্খে উপত্যকার কোলে। আসলে পাহাড়ের মজাই এটা। এখানে সামান্য আওয়াজও প্রতিধ্বনি হয়ে এমনভাবে কানে বাজে যে মনে হবে না জানি কী বিশাল বিস্ময় অপেক্ষা করছে। গোর্খের ঢোকার মুখে জলের এই আওয়াজই সত্যিকারেই মায়াবী।

কী এই গোর্খে খোলা

কী এই গোর্খে খোলা

পাহাড়ি শব্দ 'খোলা' মানে নালা। হ্যাঁ, গোর্খের এই নদীকে একটা বড়-সড় নালা বললে ভ্রম হতেই পারে। কিন্তু, হিমালয়ের কোলে প্রকৃতির সাজে সেজে থাকা গোর্খে গ্রামের যেন বিউটি স্পট হয়ে আছে এই গোর্খে খোলা। বড়-বড় সব পাথর, আর তারমধ্যে দিয়ে নেমে আসছে জলের ধারা। তীব্র কন-কনে ঠান্ডা এই জলে। পাথরের উপরে বসে জলে পা-ডুবিয়ে রাখতে রাখতে মজে যান প্রকৃতির রূপে। একটা সময় ওই জলের আওয়াজটা যেন বড় আপন হয়ে ওঠে।

গোর্খে ব্রিজ

গোর্খে ব্রিজ

বিশাল কোনও আকৃতি নেই এর। আমাদের সমতলে দেখা একদম ছোট্ট কালভার্ট-এর সঙ্গে এর তুলনা হতে পারে। কিন্তু, গোর্খের মানুষের কাছে এটা হল ব্রিজ। যা পাহাড়ের উপর থেকে নেমে আসা মানুষদের জন্য গোর্খের প্রবেশদ্বার। কয়েক বিগত সিমেন্টের ঢালাই করা এই ব্রিজের নিচে তাকালে বোঝা যায় এর গুরুত্ব। কারণ, পাহাড়ির নালার এবড়ো-খেবড়ো ধাপগুলো এমনভাবে বেরিয়ে আছে, যে সমতলের কোনও মানুষের পক্ষে এই ছোট্ট ব্রিজ ছাড়া গোর্খে-তে প্রবেশ করা কঠিন। সিমেন্টের ঢালাই-এ বিবর্ণ হতে বসা ব্রিজের দু'পাশে রয়েছে লোহার দুটো পাইপ। যা- রেলিং মতো করা আছে। গোর্খের মাধুর্য উপভোগে এই ব্রিজও উপরটাও একটা অসামান্য স্থান।

গোর্খের কাউন্ট-ডাউন

গোর্খের কাউন্ট-ডাউন

ঘন পাইনের জঙ্গল ধরে যখন আসবেন তখনই মাঝে-মাঝে ডাল-পালার ফাঁক গলে উঁকি মারবে গোর্খে। নয় থেকে ১০ হাজার ফুট উপর থেকে গ্রামটাকে মাঝে-মধ্যে এসে হাজির হয় চোখের সামনে। মনে হবে কোনও সিনেমা হলে বসে তার পর্দায় ভেসে ওঠা ছবি প্রত্যক্ষ করছেন। দেখলেই মনে হবে ঝপাং করে লাফ দিয়ে ধরে ফেলা যাবে ছবির ক্যানভাসের মতো ওই দৃশ্যপটকে। কিন্তু, এতটা সহজ নয় সে রাস্তা। যতই পাহাড়ি রাস্তা ছেড়ে ঢাল বেয়ে গোর্খে পৌঁছনোর চেষ্টা করুন না কেন আপনাকে অন্তত কিলোমিটার চারেক রাস্তা হাঁটতেই হবে। ঘন পাইনের জঙ্গল শেষ হলে সামনে পড়বে পাহাড়ি ক্ষেত। তার পাশ গলে যবের বড় বড় জঙ্গল ঠেলে আপনি যখন গোর্খের উপকন্ঠে হাজির হবেন তখনও আপনার সামনে অপেক্ষা করবে কয়েক শ'ফুট নিচে যাওয়ার রাস্তা। আর সেই রাস্তার শেষেই অপেক্ষা করছে গোর্খে ব্রিজ।

গরিবী থাকলেও আছে একমুখ হাসি

গরিবী থাকলেও আছে একমুখ হাসি

গোর্খে-তে পা রাখলেই বুঝতে পারবেন নির্মল হাসি সৌন্দর্য কেমন হতে পারে। চারিদিকেই চোখে পড়বে আর্থিক দূরাবস্থার ছবিটা। কিন্তু, তার জন্য আপনাকে দেখে কেউ বিরক্ত হবে না। বরং হাসি মুখেই আপনাকে স্বাগত জানাবে। কুশল তো জিজ্ঞেস করবেই, তার সঙ্গে তাঁদের জিজ্ঞাস্য আপনার স্থায়ী ঠিকানা। তেমন হলে দাওয়ায় বসে চা-পানেরও নিমন্ত্রণ পেয়ে যেতে পারেন। আসলে পাহাড়ের মানুষ একটা কথা বড় করে জানে, 'অতিথি দেব ভব'। থাকার জায়গা না থাকলেও কুছ পরোয়া নেই। কেউ কেউ না কেউ আপনাকে ঘরে তুলে নেবেন। পাহাড়ের মানুষ অন্ধকার নামলে মাথা গোজার ঠাঁই না মেলা অতিথিকে ফিরিয়ে দেয় না।

গোর্খে খোলার পাশেই রয়েছে নাসপাতির গাছ, আর নীল পাখীর কুজন

গোর্খে খোলার পাশেই রয়েছে নাসপাতির গাছ, আর নীল পাখীর কুজন

পাহাড়ের ধাপ ধরে ধরে গোর্খের খোলার পাশে চলে যেতে পারেন। খোলার যেদিকটা আরও নিচে নেমে হারিয়ে যাচ্ছে পাহাড়ের বাঁকে, সেখানে পৌঁছতে হবে আপনাকে। এই রাস্তায় পেয়ে যাবেন টমাটো ক্ষেত থেকে শুরু করে লঙ্কা, ফুল-কপি-র ক্ষেত। এই চাষের জমির পাশ দিয়ে নেমে যান খোলার ভিতরে। বড় বড় পাথর গুলো এখানে যেন আরও বিশালাকার। জলের তীব্র নির্ঘোষ। আর তার পাশ দিয়েই দেখবেন উঁকি মারছে নাসপাতির গাছ। পাহাড়ের এই সৌন্দর্যে আপনার কানে আসবে অনবরত শিস দেওয়ার শব্দ। কখনও পাইনের জঙ্গল ভেদ করে ছুটে আসে সেই শব্দ। কখনও নাসপাতির গাছের কোনও ডাল থেকে পাবেন সেই ধ্বনি। চোখ খুব ভালো হলে দেখবেন এই শিস ধ্বনি যার মুখ থেকে বের হচ্ছে তার আকৃতি খুব ক্ষুদ্রাকার- নীল রঙের এক পাখি। গোর্খের মানুষ নানা নামে ডাকে এই পাখিকে।

চাষবাস আর পশুপালনেই চলে গোর্খের সংসার

চাষবাস আর পশুপালনেই চলে গোর্খের সংসার

চাষবাস আর পশুপালন-ই গোর্খের মানুষের মূল জীবিকা। আর পর্যটনের সিজনে হোম-স্টে-র ব্যবসা। গোর্খে-তে সর্বাধিক ৪০টি পরিবারের বসবাস। এঁদের অধিকাংশই নানা ধরনের মরশুমি চাষের উপরে জীবন-ধারন করেন। এছাড়া রয়েছে মুরগি পালন থেকে শুরু করে ঘোড়া পালন-এর কাজ।

গোর্খে-তে থাকবেন কোথায়

গোর্খে-তে থাকবেন কোথায়

রয়েছে একাধিক হোম-স্টে-র ব্যবস্থা। এছড়া রয়েছে সরকারি ট্রেকার্স হাট। এই ট্রেকার্স হাট-এর বুকিং-এর জন্য জিটিএ-র দফতরে যোগাযোগ করতে হবে। কলকাতাতেও জিটিএ-র দফতর আছে। সেখানে যোগাযোগ করে এই ট্রেকার্স হাট-এর বুকিং পাওয়া যায়। হোম-স্টে তে থাকতে গেলে সাহায্য নিতে হবে কোনও ট্র্যাভেল এজেন্টের।

কী ভাবে পৌঁছবেন

কী ভাবে পৌঁছবেন

গোর্খে মূলত ট্রেকার্স ডেস্টিনেশন। বাংলা ও সিকিম-এর সীমানায় এই স্থানে পৌঁছতে গেলে কম করেও ৮ কিলোমিটার রাস্তা হাঁটতে হবে। সিকিমের রিব্ধি থেকে ৮ কিলোমিটার হাঁটলে গোর্খে। তবে এই রাস্তার অধিকাংশটাই পাহাড়ি চড়াই। এছাড়াও সিঙ্খোলা দিয়ে রামনাম হয়ে রিমবিম। সেখান থেকেও কয়েক কিলোমিটার হাঁটাপথ। তবে, এই রাস্তায় চড়াই-এর পরিমাণ অপেক্ষাকৃত কম। ফালুট থেকেও হেঁটে পৌঁছানো যায়। ট্রেকার্সরা মূলত ফালুট হয়েই গোর্খে-তে আসে। তবে, এর জন্য ভাঙতে হবে ১৬ কিলোমিটার পাহাড়ি রাস্তা।

English summary
Gorkhey is a beautiful village in the above 8,000 height in The Himalaya. It has a small river called Gorkhey Khola.
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X