মঙ্গল গ্রহ থেকে প্রথম ধুলোর নমুনা আসছে পৃথিবীতে, অসাধ্য সাধন করল নাসা
মঙ্গল গ্রহ থেকে প্রথম ধুলোর নমুনা আসছে পৃথিবীতে। মহাকাশ বিজ্ঞানে অসাধ্য সাধন করে ফেলল নাসা। নাসার পারসিভারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে।
মঙ্গল গ্রহ থেকে প্রথম ধুলোর নমুনা আসছে পৃথিবীতে। মহাকাশ বিজ্ঞানে অসাধ্য সাধন করে ফেলল নাসা। নাসার পারসিভারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। মঙ্গলগ্রহের রেগোলিথ অর্থাৎ শিলা ভাঙা ধুলো সংগ্রহের পর সংরক্ষণ করা হয়েছে। তা শীঘ্রই পৃথিবীতে এসে উপস্থিত হবে।
জেট প্রপালশাল ল্যাবরেটরি বা জেপিএলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নাসার পারসিভারেন্স রোভার ডিসেম্বর ২ ও ৬ চারিখে মঙ্গল পৃষ্ঠের দুটি নমুনা বোতলে সংরক্ষণ করেছে। ওই নমুনাগুলি সিলা কোর নিয়ে গঠিত। বায়ু প্রবাহিত বালি ও ধুলোর স্তূপ থেকে তা নেওয়া হয়েছিল। এই দুটি নমুনার মধ্যে একটিকে মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠে জমা দেওয়ার জন্য বিবেচনা করা হবে। সেগুলি যাতে মঙ্গলের নমুনা প্রত্যাবর্তন অভিযানের অংশ হিসেবে পৃথিবীতে আনা যায়, সেই চেষ্টাও করা হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা প্রাচীন মাইক্রোবায়াল জীবনের লক্ষণগুলি সন্ধান করতে শক্তিশালী বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম-সহ পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা মঙ্গলগ্রহের নমুনাগুলি পর্যবেক্ষণ করবেন। সংগৃহীত বেশিরভাগ নমুনাই পাথরের। গবেষকরা মঙ্গল গ্রহের রেগোলিথ পরীক্ষা করে ওই লাল গ্রহের ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াগুলি সম্পর্কে জানার চেষ্টা চালাচ্ছে।
সম্প্রতি মঙ্গল গ্রহে একটি মিশনে নেমেছে নাসা। সর্বশেষ ধুলোর নমুনাগুলি অদ্যাবসায়ের রোবোটিক হাতের একটি ড্রিল ব্যবহার করে সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে একটি বিশেষ ড্রিল বিটা ব্যবহার করে উপাদান সংগ্রহ করতে এক প্রান্তে ছোটো গর্ত-সহ একটি স্পাইকের মতো দেখায়।
নাসার বিজ্ঞানীরা এক বিবৃতিতে জানিয়ছেন, রেগোলিথ থেকে আমরা যা কিছু জানতে পারব, তা ভবিষ্যৎ মিশনের জন্য কাজে লাগবে। এই রেগোলিথ পরীক্ষা নাসার বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়ারদের ভবিষ্যৎ মঙ্গল মিশনের পাশাপাশি সরঞ্জামগুলি ডিজাইন করতে সহায়তা করবে। রেগোলিথ মহাকাশযান ও যন্ত্রপাতি উভয়েরই ক্ষতি করতে পারে। যন্ত্রের সংবেদনশীন উপাদানগুবিতে জ্যাম করতে পারে। এবং মঙ্গল পৃষ্ঠের উপর রোভারগুলির গতি মন্থর করে দিতে পারে।
বিজ্ঞানীরা জানান, শুধু মহাকাশযান বা সাজ সরঞ্জানের নয়, মহাকাশচারীদেরও ক্ষতি করতে পারে রেগোলিথ। অ্যাপোলো মিশনের সময় জানা যায়, চন্দ্রপৃষ্ঠের রেগোলিথটি স্পেসসুটের মাইক্রোস্কোপিক ছিদ্র ছিঁড়ে ফেলার জন্য যথেষ্ট তীক্ষ্ণ ছিল। মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠে পারক্লোরেট নামে পরিচিত, একটি বিষাক্ত রাসায়নিক মহাকাশচারীদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক।
মঙ্গল অভিযান নিয়ে নাসা এখন পরিকল্পনা করেছে। আর্টমিস মিশনেই চাঁদের পর মঙ্গল অভিযান করবে নাসা। তাই তার আগে মঙ্গল নিয়ে, মঙ্গলের এই রেগোলিথ নিয়ে গবেষণা জরুরি। এই ধূলিকণাগুলির মধ্যে কিছু সিগারেটের ধোঁয়ার মতো সূক্ষ্ম হতে পারে এবং তা মহাকাশচারীর শ্বাসযন্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করে ক্ষতিসাধন করতে পারে।