বিশ্বে মহাসাগর পাঁচটি, জানেন কি এই পৃথিবীতেই রয়েছে ছ’নম্বরটিও! এতদিনে এল নজরে
বিশ্বে মহাসাগর পাঁচটি, জানেন কি এই পৃথিবীতেই রয়েছে ছ’নম্বরটিও! এতদিনে এল নজরে
সেই কবে থেকে আমরা পড়ে আসছি মহাদেশ সাতটি আর মহাসাগর পাঁচটি। কিন্তু পাঁচটি নয়, বিশ্বে মহাসাগর রয়েছে ছ'টি। সম্প্রতি এই তথ্য সামনে এনেছেন সমুদ্র বি্জ্ঞানীরা। দুনিয়ার ছ-নম্বর মহাসাগরের সন্ধান দিয়ে অজানাকে জানার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। কিন্তু কী করে মিলল এই ষষ্ঠ মহাসাগরের সন্ধান, তাও কম বিস্ময়ের নয়!
ছ-নম্বর মহাসাগরটি রয়েছে এই ধরার বুকেই
এত দিন যা ধরা পড়েনি মানুষের চোখে, সমুদ্র বিজ্ঞানীরা বলছেন ছ-নম্বর মহাসাগরটি রয়েছে এই ধরার বুকেই। তাঁর সন্ধান পেয়েছেন জার্মানি, ইতালি ও আমেরিকার কয়েকজন বিজ্ঞানী। ষষ্ঠ মহাসাগর নিয়ে তাঁদের গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি ছাপা হয়েছে নেচার জার্নালে। সেখানেই দাবি করা হয়েছে, এই পৃথিবীতে এত বছর ধরে রয়েছে ছয় নম্বর মহাসাগারটি। সেটি মানুষের নজরেই আসেনি।
পৃথিবীতে মহাসাগরের সংখ্যা পাঁচ, ভুল প্রমাণিত!
ফলে এতদিন যা আমরা পড়ে এসেছি, তা ভুলে পরিণত হতে চলেছে। আমরা জেনে এসেছি পৃথিবীতে মহাসাগরের সংখ্যা পাঁচ। কিন্তু এই আবিষ্কার তাকে ভুল প্রমাণিত করে দিয়েছে। আমরা পড়ে এসেছিল পাঁচটি মহাসাগর হল- প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিক মহাসাগর, ভারত মহাসাগর, সুমেরু (উত্তর) মহাসাগর ও কুমেরু (দক্ষিণ) মহাসাগর। সেই জানা এখন ভুল বলে পর্যবষিত হয়ে চলেছে।
কোথায় রয়েছে পৃথিবীর ষষ্ঠ মহাসাগর
পৃথিবীর একেবারে উপরের আবরণে এবং কেন্দ্রের মধ্যবর্তী একটি স্তরের মধ্যে রয়েছে এই মহাসাগর। ভূতল থেকে ৪১০ কিলোমিটার থেকে ৬৬০ কিলোমিটার গভীরতার মধ্যে এই মহাসাগর রয়েছে। বাকি পাঁচটি মহাসাহর যেখানে উপরের আবরণে রয়েছে, সেখানে এই মহাসাগর রয়েছে নীচে। আর সেই কারণেই এটির অস্তিত্ব এতদিন টের পাওয়া যায়নি।
এই মহাসাগর ভূগর্ভে কী অবস্থায় রয়েছে
পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে কেন্দ্রের মধ্যে বিরাট অংশ রয়েছে, সেখানে বইছে পৃথিবীর ষষ্ঠ সমুদ্র। কেমন অবস্থায় রয়েছে এই মহাসাগর। এখানে কি পৃথিবীর উপরিভাগের সমুদ্রের মতোই জল বইছে, নাকি এখানে জল রয়েছে অন্য রূপে। সমুদ্র বিজ্ঞানীরা জানান, এই স্তরে পাথরের মাঝে আটকে রয়েছে জল। কিন্তু এতটাই জল রয়েছে যে তা কোনও মহাসাগরের থেকে কম নয়। সেই কারণেই এটিকে ষষ্ঠ মহাসাগর বলে চিহ্নিত করা উচিত বলে গবেষণা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
সমুদ্র বিজ্ঞানীরা মিরাকেল ঘটালেন
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, কী করে ভূগর্ভে এমন মহাসমুদ্রের সন্ধান পেলেন সমুদ্র বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি একটি বিরল গোত্রের হিরের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এই হিরে নিয়ে পরীক্ষা করতে গিয়ে অদ্ভুত এক তথ্য পান বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানতে পারেন এই হিরে প্রায় ৬১০ কিলোমিটার গভীর থেকে উঠে এসেছে। মাত্র ১.৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের হিরে সম্পর্কে বি্জ্ঞানীদের মত, মারাত্মক চাপের কারণে এই হিরের সৃষ্টি। তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেন এই হিরের মধ্যে বেশিরভাগটাই জল। সেখানে আরও অনুসন্ধান চালাতে চালাতে ষষ্ঠ মহাসাগরের সন্ধান পেয়ে যান বিজ্ঞানীরা।
তবে কি বদলে যাবে ভূগোল?
এখন প্রশ্ন, আগামী দিনে কি বদলে যাবে ভূগোল। কারণ বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই মহাসাগরে যে পরিমাণ জল থাকতে পারে, তা পৃথিবীর উপরিভাবে অবস্থিত যে কোনও মহাসাগরের থেকে বেশি। ফলে এটিকে মহাসাগরের হিসেবে ধরে নেওয়ার পিছনে যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। এবার ভূ-বিদরা সিদ্ধান্ত নেবেন এটিকে ষষ্ঠ মহাসাগর হিসেবে গণ্য করা হবে কি না।