জলবায়ু পরিবর্তনে পৃথিবীর ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে, ইকো-উদ্বেগে মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব পড়ছে কতটা
জলবায়ু পরিবর্তনে পৃথিবীর ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে, ইকো-উদ্বেগে মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব পড়ছে কতটা
জলবায়ু পরিবর্তন ঘটে চলেছে অবিরত। তা রোধ করা ক্রমেই দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে। এর ফলে পৃথিবীর ভবিষ্যৎও প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে। এই ইকো-উদ্বেগ প্রভাব ফেলছে মনস্তত্ত্বেও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি পরিবশগত প্রভাব তৈরির পাশাপাশি মানুষকে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত করে তুলছে। সেটাই ইকো-অ্যাংজাইটি বা জলবায়ু-উদ্বেগ নামে পরিচিত।
জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে বিশ্ব নেতাদের পরামর্শ মতো কর্মীরা প্রভাবশালী কর্মসূচি কার্যকর করার চেষ্টা চালাচ্ছে। পরিবেশগত ক্ষতি বা পরিবেশগত বিপর্যয়ের একটা সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। এই যে উদ্বেগ, কখ কী হয়, সেটাকেই ইকো-অ্যাংজাইটি বলে গণ্য করা হয়েছে। এটি ঠিক রোগ নয়, মানসিক ব্যাধি, যা উচ্চতর উদ্বেগের কারণে হয়।
আমেরিকান সাইকোলজি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, পরিবেশগত বিপর্যয়ের দীর্ঘস্থায়ী ভয় যা জলবায়ু পরিবর্তনের একটি প্রভাব তা গ্রাস করে মানুষকে। নিজের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংশ্লিষ্ট উদ্বেগই হল ইকো-অ্যাংজাইটি। প্রকৃতির উপর আবহাওয়াজনিত প্রভাব, জীবন, জীবিকার উপর প্রত্যাঘাত, বাসস্থানের ক্ষতি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ভয়ের করাণ হয়ে ওঠে। একটা অসহায় অনুভূতির ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি গ্রাস করে বসে মানুষের মনে।
ইকো-অ্যাংজাইটি বর্তমানে ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিক্যাল ম্যানুয়াল অফ মেন্টাল ডিসঅর্ডার-এর তালিকাভুক্ত নয়। এর মানে হল, ডাক্তাররা আনুষ্ঠানিকভাবে এটিকে এখনও রোগের পর্যায়ে ফেলছেন না। একটি নির্ণয়যোগ্য অবস্থা হিসেবে এই ইকো-অ্যাংজাইটিকে বিবেচনা করা হচ্ছে না।
মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এটিকে মানসিক অসুস্থতার পরিচায়ক বলে ব্যাখ্যা করেন। এর ফলে মানসিক সুস্থতা বিঘ্নিত হয় এবং তা স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ-এ প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনে প্রত্যক্ষ প্রভাবিত দেশগুলিতেই এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
ইউনিভার্সিটি অফ বাথ, স্ট্যানফোর্ড মেডিসিন সেন্টার ফর ইনোভেশন ইন গ্লোবাল হেলথ, অক্সফোর্ড হেলথ এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট, অন্যান্য শিক্ষাবিদ এবং পেশাদারদের নেতৃত্বে গবেষণাটি ১০টি দেশে ১৬ থেকে ২৫ বছর বয়সি ১০ হাজার যুবকের উপর করা হয়েছিল। ফিলিপিন্সের ৯২ শতাংশ যুবক বলেছিলেন, তারা ভবিষ্যৎকে ভীতিকর বলে মনে করেছে। ফিনল্যান্ডে মাত্র ৫৬ শতাংশ এই কথা বলেছিলেন।
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রকৃতিতে পরিবেশগত-উদ্বেগ বা জলবায়ু-উদ্বেগ থাকবেই। এর হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ গড়ে তুলতে হবে, যাতে প্রকৃতিকে নিয়ে অনুভূতি জাগতে পারে। প্রকৃতিতে ধ্যান করাও সহায়ক হতে পারে। আর ফোর্স অফ নেচারের গবেষণায় বলা হয়েছে, তাদের উদ্বেগগুলি অবশ্যই একজনের সঙ্গে ভাগ করে নিতে হবে। উদ্বেগগুলি নিজের মধ্যে জমা করে রাখতে চলবে না।
মঙ্গল গোচরের কারণে বাড়তি খরচে লাগাম দিন ও মাথা ঠাণ্ডা রেখে চলুন এই রাশির ব্যক্তিরা