বড়সড় দুর্যোগের মুখে বাংলা ! সুপার সাইক্লোন ‘আম্ফানে’র জেরে ‘সতর্কতা’ জারি
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলার দিকে ধেয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন। সমুদ্রে গতিপথ পরিবর্তন না করলে বাংলাই দুর্যোগের মুখে দাঁড়িয়ে।
বাংলার দিকে ধেয়ে আসছে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর থেকে উৎপন্ন হওয়া সুপার সাইক্লোন। সমুদ্রে গতিপথ পরিবর্তন না করলে বাংলাই দুর্যোগের মুখে দাঁড়িয়ে। তবে একটু পূর্ব বা পশ্চিম দিকে সরলেই আবার বাংলাদেশ বা ওড়িশায় আছড়ে পড়তে পারে সাইক্লোন। এই আশঙ্কার কথা জানিয়েই সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস।
গতিপথ পরবির্তন করে বাংলা অভিমুখে
হাওয়া অফিসের সহ অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রাথমিক অভিমুখ উত্তর-পশ্চিম দিকে থাকলেও, তা সমুদ্রের মাঝেই বাঁক নিয়ে গতিপথ পরবির্তন করেছে। উত্তর-পশ্চিম থেকে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অভিমুখ বদল করেছে আম্ফান। ফলে বঙ্গোপসাগরের পশ্চিম উপকূল, এমনকী অন্ধ্র-ওড়িশা উপকূলে হানা না দিয়ে বাংলা ও বাংলাদেশ উপকূলে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনাই প্রবল হচ্ছে।
সুপার সাইক্লোন আম্ফানের টার্গেট যেন বাংলাই
বর্তমান পরিস্থিতি যা তাতে সুপার সাইক্লোন আম্ফান বাংলাকেই টার্গেট করে যেন এগিয়ে আসছে। একেবারে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের সোজাসুজি অবস্থান করছে আম্ফান। এগিয়ে আসছে সোজা উত্তর দিকে। অর্থাৎ বাংলার দিকে স্পষ্ট অভিমুখ সাইক্লোনের। সোমবার থেকেই বাংলায় দুর্যোগের পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস।
হাওয়া অফিস সূত্রে পূর্বাভাস
হাওয়া অফিস জানিয়েছে সমুদ্রে সুপার সাইক্লোনের তাণ্ডবে বাংলার উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হবে। আলিপুর হাওয়া অফিস সূত্রে পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা ও দুই মেদিনীপুর ভারী বৃষ্টি হবে। বইবে ঝড়ও। সোমবার কিংবা মঙ্গলবার থেকেই বদলে যাবে বাংলার আবহাওয়া।
৯০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইবে বাংলার উপকূলে
হাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, ১৯ ও ২০ মে অর্থাৎ মঙ্গল ও বুধবার ৬৫ থেকে ৯০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইবে বাংলার উপকূলবর্তী এলাকায়। সেজন্য কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রবল বৃষ্টির জন্য জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা। আর মৎস্যজীবীদের জন্য জারি হয়েছে লাল সতর্কতা। সমুদ্র নামতে নিষেধ করা হয়েছে।
আম্ফান আর কতদূরে
হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী রবিবার থেকেই ঘূর্ণিঝড় শক্তি বাড়িয়ে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হতে শুরু করবে। এবং এগিয়ে আসবে বাংলার দিকে। বর্তমানে আম্ফান ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ১১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। আর পশ্চিমবঙ্গের দিঘা থেকে আম্ফানের দূরত্ব ১২৫০ কিলোমিটার। আর বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ১৩৩০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে।
আম্ফানের অভিমুখ হঠাৎ করে বদল না হলে...
হাওয়া অফিস জানিয়েছে ১৮ থেকে ২০ মে অর্থাৎ সোম থেকে বুধবারের মধ্যে আছড়ে পড়তে পারে ঝড়। তারপরও দুদিন ঝড়ের তাণ্ডব অব্যাহত থাকবে। ২১ মে থেকে ঝড়ের প্রভাব কমতে শুরু করবে। আম্ফানের অভিমুখ হঠাৎ করে বদল না হলে বাংলার উপরই নেমে আসতে পারে তাণ্ডবলীলা।