তৃণমূল-বিজেপির পাখির চোখ উপজাতি ভোটে, ১৬ কেন্দ্রের লড়াইয়ে এখন কে এগিয়ে
তৃণমূল-বিজেপির পাখির চোখ উপজাতি ভোটে, ১৬ কেন্দ্রের লড়াইয়ে এখন কে এগিয়ে
সংখ্যালঘু ভোট সিংহভাগ তৃণমূলের দিকে। এবার উপজাতি ভোট নিজেদের দিকে টানতে তুল্যমূল্য লড়াই শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি। আদিবাসী মন পাওয়ার জন্য তাই উঠেপড়ে লেগেছে তারা। তা নিয়েই দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে তৃণমূল-বিজেপির। কিন্তু কেন এত আদিবাসী-প্রীতি দু-দলের। আসলে নয় নয় করে ১৬টি কেন্দ্রের ভাগ্য আদিবাসী ভোটের উপর নির্ভরশীল।
৬ শতাংশ উপজাতি ভোটেই পাখির চোখ তৃণমূল-বিজেপির
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে পশ্চিমবঙ্গে ৫২ লক্ষ উপজাতি জনগোষ্ঠী রয়েছে। সামগ্রিক ভোটারদের ৬ শতাংশ। জঙ্গলমহল একসময় বামেদের দুর্গ ছিল। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর- তিন জেলা ছাড়াও ঝাড়গ্রাম এবং বীরভূমের কিছু অংশে রয়েছে উপজাতি সম্প্রদায়। মোট ১৬টি বিধানসভা আসন সংরক্ষিত রয়েছে তফশিলিদের জন্য। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে বিধানসভার আসনে ফল বিজেপির পক্ষে ১৩-৩।
২০১৯-এ তফশিলি সংরক্ষিত দুই আসনই বিজেপির দখলে
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় উপজাতি সম্প্রদায়ের ভোট বিজেপিকে অপরিসীম সমর্থন দিয়েছে। তফশিলি সংরক্ষিত আসনের দুটিতেই বিজেপি জয়লাভ করেছে। একটি হ'ল উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার এবং অন্যটি দক্ষিণবঙ্গের ঝাড়গ্রাম। এই ভোটের নিরিখে অন্তত ১৩টি কেন্দ্রে বিজেপি এগিয়ে থাকছে তৃণমূলের থেকে।
তৃণমূল বনাম বিজেপির আদিবাসী ভোট-অঙ্ক
বিজেপি চাইছে তাদের আদিবাসী ভোট ধরে রাখতে। আর তৃণমূল চাইছে সেই ভোট ফিরে পেতে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রাধান্য পেতেই উপজাতি ভোট নিয়ে এত কাড়াকাড়ি শুরু হয়েছে। উপজাতিদের জন্য উন্নয়ন চিন্তার পিছনেও রয়েছে ভোটের অঙ্ক। এই অবস্থায় আরও একটা সমীকরণ তৈরি হচ্ছে, বিজেপি যদি মমতাকে সংখ্যালঘুপন্থী বলে আখ্যায়িত করতে চায়, তৃণমূল তাদের উপজাতিবিরোধী বলে অভিযুক্ত করবে।
উপজাতি ভোট টানতে উন্নয়নের লড়াই দুই দলের
বর্তমানে রাজ্যে সাতটি একলব্য বিদ্যালয় রয়েছে। সাত জেলায় একটি করে স্কুল। আড়াই হাজার আবাসিক শিক্ষার্থী রয়েছে। বাংলা এই সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। তৃণমূল উপজাতি সম্প্রদায়ের জন্য এত ভাবার পরেও ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের বাংলার উপজাতীয় ভোট বিজেপিতে স্থানান্তরিত হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় সহায়তা গ্রহণ করতে অস্বীকার মমতার
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের মোদী সরকার ফেডারেল কাঠামোয় বুলডোজ চালিয়ে উপজাতি কল্যাণের উদ্যোগ নিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদী সরকারের বিরুদ্ধে এই পরিপ্রেক্ষিতেই অভিযোগ এনেছেন। আদিবাসী উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সহায়তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছেন। এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে কেন্দ্র এক্তিয়ার লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ।
সংখ্যালঘুদের মতো আদিবাসীদের উন্নয়নে উদ্যোগী রাজ্য
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমি যদি সংখ্যালঘুদের যত্ন নিতে পারি, তবে আমি আমাদের আদিবাসী ভাই-বোনদেরও যত্ন নিতে পারব। তাঁদেরকে কেন্দ্রের সামনে মাথা নত করতে হবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি এক বিবৃতিতে মোদী সরকারকে একহাত নিয়েছেন।
ফেডারেল স্ট্রাকচার ভেঙে অযথা নাক গলাচ্ছে কেন্দ্র, অভিযোগ
মমতা বলেন, "আমরা আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য একলব্য বিদ্যালয় স্থাপন করেছি, আমরা তাদের বৃত্তি দিচ্ছি। আমাদের সহায়তা সত্ত্বেও কেন্দ্র সেখানে নাক গলাচ্ছে। আমাদের তালিকা প্রস্তুত করতে বলছে, অন্যথায় তারা আমাদের তহবিল দেবে না। তারা বলছে একলব্য বিদ্যালয়গুলি কেন্দ্রীয় বোর্ডের অধীনে থাকতে হবে।
কেন্দ্রের বিরোধিতা করে রাজ্যের মানুষকে আঘাত মমতার! হিংসার কারণে বিনিয়োগে ভয়, বিস্ফোরক নির্মলা