একটানা লকডাউনের জেরে স্তব্ধ বাংলার টোটো উপজাতিদের জনজীবন
একটানা লকডাউনের জেরে স্তব্ধ বাংলার টোটো উপজাতিদের জনজীবন
একটানা লকডাউনের জেরে এবার তীব্র সঙ্কটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বাংলার টোটো উপজাতির মানুষেরা। এই কঠিন সময়ে তারাও তীব্র অর্থকষ্টে ভুগছেন বলে জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের টোটাপাড়ার হাজারেরও বেশি মানুষ। পাশাপাশি পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় গ্রামে উত্পাদিত ফসলও বিক্রি করতে পারছেন না কৃষকেরা।
রয়েছে ১৬০০ টোটো উপজাতির বাস
সূত্রের খবর, এই লকডাউনে পশ্চিমবঙ্গের তিনটি উপজাতি গোষ্ঠী সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। যার মধ্যে উত্তরবঙ্গের প্রায় ১৬০০ টোটো উপজাতি মানুষেরা রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। আলিপুরদুয়ার জেলার এই ছোট পাহাড়ী গ্রামটি ভারত-ভুটান সীমান্তে তাদিং পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। গ্রামটি ভারতের একটি নৃতাত্ত্বিক পর্যটনস্থল হিসাবেও পরিচিত।
সারা বিশ্বে টোটেো উপজাতির একমাত্র আবাসস্থল
সারা বিশ্বে টোটো উপজাতির এটিই একমাত্র আবাসস্থল । এ গ্রাম ছাড়া বিশ্বের অন্য কোথাও এ উপজাতির বসবাস নেই। নিকটবর্তী শহর মাদারিহাট থেকে প্রায় ১৬ কিমি দূরে অবস্থান গ্রামটির। ১৯৪১ সালে তৈরি জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের বর্তমান প্রবেশদ্বার হিসাবেও এই গ্রামটির ব্যবহার করেন পর্যটকেরা। এর উত্তরেই রয়েছে ভুটানের সীমান্ত তথা তাদিং পাহাড়ের পাদদেশ, পূর্বে তোরষা নদী এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে হাওরি নদী এবং তিতি বনাঞ্চল যাকে হাওরি নদী বিভক্ত করেছে।
দিন মজুরের কাজে গিয়ে লকডাউনে অনেকেই আটকে ভুটানে
এই অঞ্চলে মোট পাঁচটি পাঁচটি পার্বত্য নদীও রয়েছে। যেখানে শুধুমাত্র বর্ষাতেই জল থাকে। রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চল থেকে ভুটানের সীমান্ত অঞ্চল কাছে হওয়ায় এখানকার অনেক বাসিন্দাই ভুটানের সীমান্ত লাগোয়া একাধিক জায়গায় দিনমজুরের কাজ করেন বলে খবর। বর্তমানে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে টোটোপাড়ার অভিবাসী শ্রমিকরা কাজের জন্য ভুটান যেতে পারছেন না। পাশাপাশি লকডাউনের কারণে আগে যারা ভুটানে কাজ করতেন তারাও সেখানে আটকে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান সুগ্রিব টোটো।
লকডাউনের জেরে বিক্রি হচ্ছে না ফসল
বর্তমানে জীবনধারণের জন্য টোটোপাড়ার বাসিন্দারা কেবল পিডিএসে সরবরাহ করা চাল ও ময়দার উপর নির্ভরশীল বলে জানিয়েছেন। লকাডউনের জেরে অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী গ্রামে আসছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পাশাপাশি এই সময় গ্রামের সুপারি বাদাম এবং আদার চাষ হয়। কিন্তু লকডাউনের জেরে পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় গ্রামের কৃষকরা সেগুলি মাদারিহাটের পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতে পারছেনা বলে জানিয়েছেন। তার ফলে বাড়িতেই নষ্ট হচ্ছে ফসল।
কঠিন সময়, চ্যালেঞ্জ জিতবেনই! আত্মবিশ্বাসী মুখ্যমন্ত্রী জানালেন ইদের শুভেচ্ছা