মুকুল-ঘনিষ্ঠ সব্যসাচী ফিরতেই কি পুরনো বিবাদের সূত্রপাত, তৃণমূলে সুজিতকে নিয়ে জল্পনা
মুকুল-ঘনিষ্ঠ সব্যসাচী ফিরতেই কি পুরনো বিবাদের সূত্রপাত, তৃণমূলে সুজিতকে নিয়ে জল্পনা
পুজোর আগেই মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ সব্যসাচী দত্ত তৃণমূলে ফিরেছিলেন বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে। সেইসঙ্গে রাজনৈতিক মহল মনে করেছিল সুজিত বসুর সঙ্গে পুরনো দ্বন্দ্ব ফের শুরু হবে। কিন্তু পুজোর মুখে উভয় পক্ষই নরম ছিল। পুজো শেষ হতেই ফের তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে চলে এল। এবং এমনই পর্যায়ে তা পৌঁছল যে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে দলে ভাঙন নিয়েও।
দলত্যাগী নেতাদের ফেরাতে কুণ্ঠা বোধ ছিল তৃণমূলের
একুশের নির্বাচনে বিপুল জন সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল দলত্যাগী নেতাদের ফেরাতে কুণ্ঠা বোধ করেছিল শুধু একটাই কারণে। তাঁরা দলে এলে যদি ফের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়। তৃণমূলের একটা অংশ যদি তাঁদের মানতে না চায়! তাই একটু ধীরে চলো নীতি নিয়েছিল তৃণমূল। আর জানিয়েছিল, কোনও নেতাকে নিয়ে যদি নিচুতলায় সমস্যা না থাকে, তাঁকে ফেরাতে কোনও আপত্তি নেই দলের।
তৃণমূলে সুজিত বনাম সব্যসাচী যুদ্ধ সামনে চলে এল
এই ইস্যুতেই তৃণমূলে ঘরওয়াপসি আটকে ছিল সব্যসাচী দত্ত বা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার মধ্যে রাজীব এখনও লাইন ক্লিয়ার করতে না পারলেও সব্যসাচী দত্ত তৃণমূলের ফিরে পড়লেন। কিন্তু তার পর এক মাস কাটতে না কাটতেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠল পুরনো বিবাদ। পুজো কাটতেই সুজিত বনাম সব্যসাচী যুদ্ধ সামনে চলে এল।
সুজিতের পুজোয় একের পর এক বাধার পিছনে রহস্যের গন্ধ!
সুজিত বসু এতদিন ব্যস্ত ছিলেন তাঁর শ্রীভূমি স্পোর্টিংয়ের পুজো নিয়ে। সেখানে বুর্জ খলিফরা আদলে প্যান্ডেল এবার কলকাতার নজর কেড়ে নিয়েছে। সব ভিড় টেনে নেওয়ার পথে পদে পদে বাধা পেয়েছে মন্ত্রী সুজিতের পুজো। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধনে না যাওয়া থেকে শুরু করে একের পর এক বাধার পিছনে রহস্যের গন্ধ পেতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহল।
সুজিতের পুজোয় ঘটনা পরম্পরা কিন্তু ভাবিয়ে তুলেছে
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার সুজিতের পুজো উদ্বোধনে যাননি। শ্রীভূমির পুজো উদ্বোধনে চাঁদের হাট বসলেও ডাক পাননি সদ্য দলে ফেরা সব্যসাচী দত্ত। তারপর ষষ্ঠী থেকেই সমস্যার পর সমস্যা। প্রথমে পাইলটদের অভিযোগ বন্ধ লেজার শো। সপ্তমীতে মণ্ডপে ঢোকার একদিকের পথ বন্ধ করে প্রশাসন। অষ্টমীতে বন্ধ হয় প্রতিমা দর্শন। নবমী থেকে পূর্ব রেলের সিদ্ধান্ত মতো বিধানগর স্টেশনে লোকাল ট্রেন দাঁড়ানো বন্ধ হয়। এর মাঝে তৃণমূল সাংসদ আবার সুজিত বসুর পুজোর সমালোচনাও করেন।
শাসকদলের অন্দরের সমীকরণ নিয়ে শুরু হয়ে গেল চর্চা
আর দশমীতে যা ঘটল, তাতে ফের মাথাচাড়া দিল সুজিত বনাম সব্যসাচী বিবাদ। সুজিত পুত্র সমুদ্র বসুর বিরুদ্ধে এফআইআর করলেন সব্যসাচী অনুগামী নেতা। এরপরই তুষের আগুন ধিকিধিকি জ্বলে উঠল। মমতা-অভিষেকের পোস্টার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে বিধানগর উত্তর থানায় এফআইআর দায়ের হল সমুদ্রের বিরুদ্ধে। ফের সরগরম বিধানগর। শাসকদলের অন্দরের সমীকরণ নিয়ে শুরু হয়ে গেল চর্চা।
সব্যসাচী দলে ফিরে তাঁকে পাল্টা দেওয়ার চেষ্টা করছেন!
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, পুজো পর্বে সুজিত বসুর সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। একের পর এক ঘটনা পরম্পরা মেলালে সেটাই মনে হয় সাদা চোখে। তবে অন্দরের সমীকরণ অন্যরকমও হতে পারে। তবে দশমীর দিন যে ঘটনা ঘটল, তা মন্ত্রী সুজিত বসুর ভাবাবেগে আঘাত বৈকি! সব্যসাচীকে হারিয়ে তিনি বিধায়ক ও মন্ত্রী হয়েছেন। সেই সব্যসাচী দলে ফিরে তাঁকে পাল্টা দেওয়ার চেষ্টা করছেন, অনেক বিশেষজ্ঞ এমনভাবেও ব্যাখ্যা করেছেন দশমীর ঘটনাকে।