নির্বাচন কমিশনই তৃণমূলকে ৪২টি আসনে জেতার রাস্তা দেখিয়েছে, দেদার প্রশংসায় সুব্রত
তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা যখন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সমালোচনা করে নির্বাচন কমিশনের কাছে শো-কজ নোটিশ পাচ্ছেন, তখন সম্পূর্ণ বিপরীত দিকে হেঁটে নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানালেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি।
তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা যখন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সমালোচনা করে নির্বাচন কমিশনের কাছে শো-কজ নোটিশ পাচ্ছেন, তখন সম্পূর্ণ বিপরীত দিকে হেঁটে নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানালেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। মেদিনীপুর লোকসভা আসনে দলীয় প্রার্থী মানস ভুঁইয়ার সমর্থনে কর্মী সম্মেলনে বলেন, নির্বাচন কমিশনই তাদের ৪২টি আসন পাওয়ার দিকে এগিয়ে দিয়েছে।
শুধু কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভুমিকা নিয়েই নয়, রাজ্যে সাত দফায় নির্বাচন হওয়া নিয়েও অনেক তৃণমূল কংগ্রেস নেতাই প্রশ্ন তুলেছিলেন। আবার একাংশ দাবি করেছিল আরও বেশি দফাতে ভোট হলেও তাদের কোনও সমস্যা হবে না। শনিবার সুব্রত বক্সি কর্মিসভায় বলেন, ওরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর এবং নানা কেন্দ্রীয় সংস্থার জুজু দেখাচ্ছে। তাতে কিছু হবে না।
২০০৪ সালে রাজ্যে এক দফায় নির্বাচন হয়েছিল আর তৃণমূল কংগ্রেস জিতেছিল মাত্র ১ টি আসনে। ২০০৯ সালে তিন দফার ভোটে আমাদের আসন হয় ১৯ এবং ২০১৪ সালে এই রাজ্যে নির্বাচন হয়েছিল ৫ দফায় আর আমরা জিতেছিলাম ৩৪টি আসনে। এই নির্বাচনগুলি কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতেই হয়েছিল। এবারও তাই হবে।
তিনি বলেন, যত বেশি দফায় ভোট হয়েছে আমাদের আসন তত বেড়েছে। এবার এই রাজ্যে ৭ দফায় নির্বাচন হবে। তাই বলছি, নির্বাচন কমিশনই আমাদের ৪২টি আসনেই জেতার দিকে এগিয়ে দিয়েছে। এই রাজ্যের সব কয়টি লোকসভা আসনেই তারা জিতবেন বলে দাবি করেও কর্মীদের বলেন, এই লোকসভা নির্বাচন তাৎপর্যপূর্ণ হলেও কঠিন লড়াই নয়।
সুব্রত বক্সি আরও বলেনন, ৪২ টি আসনেই আমরা জিতব, আমরা এই বিষয়ে নিশ্চিত। কিন্তু তাই বলে আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। কেন্দ্রীয় সরকার নানা আর্থিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলেও তা যে রাজ্যের উন্নয়নকে দমিয়ে রাখতে পারেনি সেই কথা কর্মীদের প্রচারে বলার নির্দেশ দেন তিনি। তার মতে বোফর্স কেলেঙ্কারির জন্য কংগ্রেস হেরেছিল আর বিজেপি হারবে রাফাল কেলেঙ্কারির জন্য।
এদিনের সভায় মানস ভুঁইয়া বলেন, খড়্গপুরের যিনি বিধায়ক সেই দিলীপ ঘোষ এলাকার উন্নয়নের জন্য তিন বছরে বিধানসভায় কিছু বলেননি। সেই ব্যক্তি জিতে যাবে আর লোকসভায় এলাকা নিয়ে কী কথা বলবেন? প্রশ্ন তোলেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি বলেন, বিরোধীদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে আমি কিছু বলব না। তিনি অন্য দলের প্রতিনিধি। সেই হিসাবে তাকে শ্রদ্ধা করি। তিনি যতই উত্তেজনা পূর্ণ কথা বলুন, আমি কিছু বলব না। রাজনীতির রণাঙ্গনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
এদিকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের হাত মুচড়ে ভেঙে দিতে বলায় নির্বাচন কমিশনের তোপের মুখে পড়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অজিত মাইতি৷ পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্র থেকে এবারও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন অভিনেতা দীপক অধিকারী (দেব)৷ তাঁর সমর্থনেই ঘাটালে কর্মিসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর উদ্দেশ্যে বিতর্কিত মন্তব্য করেন তিনি৷ উসকানি দেওয়ার ভঙ্গিতে কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী রাস্তায় ঠিক আছে৷ কিন্তু তাঁরা যদি বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেয়, তবে হাত মুচড়ে দিতে হবে জওয়ানদের৷
তিনি আরও বলেন, এখানে সাংবাদিকরা রয়েছেন৷ যান গিয়ে অভিযোগ করুন৷ আমিও দেখব কত বড় ক্ষমতা রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর৷ অজিত মাইতির এই বক্তব্যের ভিডিও নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা পড়ে৷ তারপরই মেদিনীপুরের ডিএম পি মোহন গান্ধীর কাছে রিপোর্ট তলব করে কমিশন৷ অজিত মাইতির দাবি, বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুর একটি বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ওই মন্তব্য করেছেন৷ তবে খারাপ কিছু বলতে চাননি৷ তিনি বলেন, আমি একটি কারন দর্শানোর নোটিশ পেয়েছি। যথা সময়ে আমি তার উত্তর দিয়ে দেব।