৯০ কিমি বেগে আছড়ে পড়ল বিধ্বংসী কালবৈশাখী! স্তব্ধ হল মেট্রো, বন্ধ উড়ানও
প্রবল গরমে পুড়ছে বাংলা! গত কয়েক সপ্তাহ আগে নিম্নচাপের কারনে কয়েকদিন বৃষ্টি দেখলেও স্বস্তি পায়নি বাংলার মানুষ। বরং নিম্নচাপের প্রভাব কাটতেই চড়চড় করে বাড়তে থাকে তাপমাত্রা। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলাতে হু হু করে তাপমাত্রা বাড়
শনিবাসরীয় বিকেলে শহরের বুকে চলল ঝড়ের প্রবল তাণ্ডব। দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামার আগেই এ দিন কার্যত সন্ধ্যা নেমে আসে শহরে। কালো আকাশেই পাওয়া যায় দুর্যোগের পূর্বাভাস। আর তারপরই শুরু হয় ঝড়ের দাপট। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যায় বিধ্বংসী চেহারাটা।
বৃষ্টির পরিমাণ খুব বেশি না থাকলেও কয়েক মিনিটের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় শহরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। শুধু কলকাতা কিংবা শহরতলি নয়, গোটা দক্ষিণবঙ্গের ছবিটা কার্যত একই। একাধিক জায়গাতে ভেঙে পড়েছে গাছ। ভেঙে পড়েছে একাধিক ছোট বাড়িও।
৯০ কিমি বেগে ঝড়
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে এ দিন ঝড়ের গতিবেগ ছিল সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। অর্থাৎ কালবৈশাখীর তুলনায় এবারের ঝড়ের দাপট ছিল অনেকটাই বেশি। শুধু কলকাতা নয়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় একই পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। বিকেল থেকে টানা ঝড় আর বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৪ টে নাগাদ ঝড়ের গতিবেগ ছিল সবথেকে বেশি। অন্তত সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত এই পরিস্থিতি থাকবে বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
রাস্তাঘাটে বিপজ্জনক পরিস্থিতি
ঝড়ের গতিবেগ এতটাই বেশি ছিল যে, শহরের একাধিক জায়গায় গাছ পড়ে যাওয়া ঘটনা ঘটেছে। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একট গাড়ির ওপর গাছ পড়ে গিয়েছে। দেশপ্রিয় পার্কের কাছেও একই অবস্থা। রাস্তার ওপর পড়ে রয়েছে বড় গাছ। ফলে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। যাদবপুর সুকান্ত সেতু থেকে শুরু করে ফোর্ট উইলিয়ামের সামনে, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে, এ পি সি রোডে, রাজভবনের সামনে একাধিক জায়গায় গাছ পড়ে গিয়েছে।
থমকে গিয়েছে মেট্রো
ব্যাপক ঝড়ে ব্যাহত হয় মেট্রো পরিষেবাও। নেতাজি এবং মহানায়ক উত্তম কুমার মেট্রো স্টেশনের মাঝে আপ লাইনের ওপর একটি গাছ ভেঙে পড়ে গিয়েছে। আর তার জেরে কবি সুভাষ থেকে সব মেট্রোই বন্ধ করে দেওয়া হয়। দক্ষিণেশ্বর মেট্রো থেকে মহানায়ক উত্তম কুমার অর্থাৎ টলিগঞ্জ পর্যন্ত আপ এবং ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল করছে। এ ভাবে পরিষেবা ব্যাহত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই সমস্যায় পড়েছেন অফিস ফেরত যাত্রীরা।
ট্রেন বিভ্রাট
আপ দত্তপুকুর লোকাল পরিষেবা থেমে গিয়েছে। হৃদয়পুর স্টেশনে ঢোকার পর প্যাণ্টোগ্রাফে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়ে। তার জেরে ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়েছে। আপ লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে ট্রেন। আরও একাধিক জায়গায় প্রভাব পড়েছে রেল পরিষেবায়। ফলে যারা অফিস ফেরত যাত্রীরা রয়েছেন ট্রেনই যাদের বাড়ি ফেরার একমাত্র ভরসা তাঁরা ব্যাপক দুরভগে পড়তে চলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বিমানেরও উড়তে বাধা
বিমান চলাচলের ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়েছে কালবৈশাখীর। বিকেল সাড়ে ৪ টে থেকে ঝড় শুরু হয়, আর তখন থেকে কলকাতা বিমানবন্দরের পরিষেবা থেমে যায়। একাধিক বিমান কলকাতায় অবতরণ করতে পারেনি বলে সূত্রের খবর। এ দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত কোনও বিমান উড়বে না বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
জটিল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
অন্যদিকে বিধ্বংসী এই ঝড়ের কারণে এটিকে মোহনবাগান ও বসুন্ধরা কিংস ম্যাচ কিছুক্ষণ বন্ধ ছিল। প্রায় ৫০ মিনিট ধরে বন্ধ ছিল খেলা। অন্যদিকে যুবভারতীর প্রেস বক্সে জল ঢুকে বিপত্তি দেখা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, ঝড়ের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইডেন গার্ডেনের লাইট । এমনকি মাঠও পুরো ঢেকে দেওয়া হয়। জটিল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।