শোভন ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছেন একুশের লড়াইয়ে! তৃণমূল দিল যোগদানের ‘শর্ত’
শোভন চট্টোপাধ্যায় প্রায় দু-বছর সক্রিয় রাজনীতিতে নেই। আর কবে তিনি সক্রিয় হবেন, সে বার্তাও তিনি স্পষ্ট করে বলেননি। শুধু স্পষ্ট করেছেন কেন তিনি তৃণমূলে ফিরতে পারছেন না। তাঁর তৃণমূলে ফিরতে কোথায় বাধা।
শোভন চট্টোপাধ্যায় প্রায় দু-বছর বাংলার সক্রিয় রাজনীতিতে নেই। আর কবে তিনি সক্রিয় হবেন, সে বার্তাও তিনি স্পষ্ট করে বলেননি। শুধু স্পষ্ট করেছেন কেন তিনি তৃণমূলে ফিরতে পারছেন না। তাঁর তৃণমূলে ফিরতে কোথায় বাধা। তাঁর এই বার্তার পরই পাল্টা দিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল জানিয়ে দিয়েছে, কী হলে তিনি ফের ঘরে ফিরতে পারবেন!
তৃণমূলে ফিরতে হলে নিঃশর্তে ফিরতে হবে শোভনকে
শোভন বিজেপিতে যাওয়ার এক বছর পর জানিয়েছেন বৈশাখীকে নিয়ে তাঁর আবেগই তৃণমূলে ফেরার পথে বাধার প্রাচীর হয়ে গিয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার পর শোভন জানিয়েছেন সে কথা। আর তারপরই তৃণমূলের সাফ করে দিয়েছে, কোনওরকম শর্ত নয়, তৃণমূলে ফিরতে হলে নিঃশর্তে ফিরতে হবে তাঁকে।
আগে নিঃশর্তে তৃণমূলের পতাকা নিতে হবে শোভনকে
সেইসঙ্গে তৃণমূল বার্তা দিয়েছে, শোভন আগে নিঃশর্তে তৃণমূলের পতাকা তুলে নিক, তারপর যাবতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। এবং তাঁর শর্ত নিয়েও ভাবা হবে। শর্ত পূরণের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে প্রকারান্তরে। তবে আগে নয়, শোভন তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরই তৃণমূল এই যাবতীয় আলোচনায় রাজি। অন্যথায় শোভনের এন্ট্রি চায় না তৃণমূল।
শোভনের শর্ত নিয়ে ভ্রু-কুঁচকেছিল তৃণমূল
তৃণমূল কংগ্রেস এর আগে শোভনের শর্ত নিয়ে ভ্রু-কুঁচকেছিল। তৃণমূলের একটা বড় অংশ চায় না, রত্নাকে সরানোর শর্তে শোভনকে ফেরাতে। শোভনকে তৃণমূলে ফিরতে হলে রত্নাকে মেনে নিয়েই ফিরতে হবে। রত্না তৃণমূল পরিবারের একটা অংশ, তাঁকে বসিয়ে শোভনকে আনার প্রশ্নে সায় নেই প্রশান্ত কিশোরেরও।
বৈশাখীর অপমানই শোভনের কাছে ফ্যাক্টর
এখন আবার রত্নাকে সরানোর প্রশ্ন ছাড়িয়ে বৈশাখীর অপমানই শোভনের কাছে ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে। তিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তাঁর আবেগই তৃণমূলে ফিরতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বৈশাখীকে যেভাবে সরানো হয়েছে তাঁর চাকরি থেকে, তাতে তাঁর মর্যাদার হানি করা হয়েছে।
'বৈশাখীকে যা সহ্য করতে হয়েছে, সেটা অনভিপ্রেত'
শোভন বলেন, কেবল আমার জন্য বৈশাখীকে যা সহ্য করতে হয়েছে, সেটা অনভিপ্রেত। আবার আমার ফেরার শর্তে বৈশাখী সব ফিরে পাবে, তা হোক চাইনি। তাহলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না। আমার অসময়ে বৈশাখী যা করেছে, সেই ঋণ আমি শোধ করকে পারব না। তাই আমার জন্য তাঁর অপমান মোটেও অভিপ্রেত নয়।
ঘরওয়াপসি নিয়েই যত আলোচনা, শোভনের ভবিষ্যৎ কী
শুক্রবার জনপ্রিয় এক টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে শোভন স্পষ্ট করে দিয়েছেন কেন তাঁর তৃণমূলের প্রতি বৈরাগ্য। তারপরও অবশ্য জোর দিয়ে তিনি বলেননি তিনি বিজেপিতেই থাকছেন এবং সক্রিয় হচ্ছেন। আর তাঁর ঘরওয়াপসি নিয়ে যত আলোচনাই চলুক না কেন, কীসের উপর নির্ভর করে আছে শোভনের ভাগ্য, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা শোভনকে নিয়ে
বিগত তিন-চারদিন ধরে রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনায় পারদ চড়েছে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে। জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তিনি প্রকাশ্যে এসেছেন। মেননের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি কী অবস্থান নিচ্ছেন তা জানিয়ে দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় যোগাযোগ করেছিলেন। তাঁকেও তিনি স্পষ্ট উত্তর দিয়েছেন।
তৃণমূল চায় বিজেপি ছেড়়ে ফিরে আসুন শোভন
আর এরপরই তৃণমূলও শোভনকে পাল্টা জানিয়ে দেয়, তৃণমূলকে ফিরতে হলে তাঁকে কী করতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ইতিমধ্যেই ডাক দিয়েছেন, যাঁরা ভুল করে তৃণমূল ছেড়েছেন, তাঁরা ফিরে আসুন। অর্থাৎ তৃণমূল চায় বিজেপি বা অন্য দল থেকে ফের ফিরে আসুন শোভনরা। কিন্তু তাঁদেরও কিঞ্চিৎ নমনীয় হতে হবে।