ভাঙড়ে যে গুজবের কারণে পাওয়ার গ্রিডের জমি নিয়ে আন্দোলনে গ্রামবাসীরা
ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড ঘিরে তৈরি হওয়া আন্দোলনের নেমপথ্যে রয়েছে কিছু গুজব। এমনটাই দাবি কিছু মহলের। কি কি গুজবের ফলে দানা বাঁধল এই আন্দোলন তা জেনে নেওয়া যাক।
রাজারহাট, ১৮ জানুয়ারি : ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিডের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। তবে গতবছরের শেষেদর দিক থেকে সেখানে দানা বাঁধে আন্দোলন। আর সেই আন্দোলনের কারণেই মঙ্গলবার রণক্ষেত্র হয়ে উঠল গোটা এলাকা। তবে শোনা যাচ্ছে গোটা ঘটনার পিছনে যে জিনিসের সবচেয়ে বেশি উসকানি ছিল তা নেহাতই গুজব।[পুলিশের পোশাকে গুলি চালিয়েছে বহিরাগত দুষ্কৃতীরাই! উদ্ধার পুলিশের উর্দি]
আর এই গুজবের কারণেই ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড প্রকল্প ঘিরে গ্রামবাসীদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ ও যার জেরে দুজন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও গুলিবিদ্ধ গ্রামবাসীদের পুলিশ গুলি করেনি বলে দাবি। পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, বহিরাগতরাই হামলা চালিয়েছে। যদিও গ্রামবাসীদের দাবি পুলিশ গোটা ঘটনার পিছনে ছিল।[ভাঙড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত ২ গ্রামবাসী]
এবার আসা যাক গুজব প্রসঙ্গে। ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিডের কাজ যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে তখন শুরু হয় প্রতিবাদ-প্রতিরোধ। দাবি, জমি ফেরত দিতে হবে। কারণ কেউ বা কারা ততদিনে গ্রামবাসীদের প্রচার করেছে, এলাকায় বিদ্যুৎ প্রকল্প মানে মহিলারা আশু ভবিষ্যতে বন্ধ্যা হয়ে পড়বেন, তাদের সন্তান হবে না। পুরুষদেরও ক্ষতি হবে।[মুখ্যমন্ত্রী বা বিদ্যুৎমন্ত্রীকে এসে পাওয়ার গ্রিড বন্ধের আশ্বাস দিতে হবে, নতুবা আন্দোলন চলবে]
এর পাশাপাশি জীবিকার উপরেও ভয়ানক প্রভাব পড়তে পারে। ভাঙড় এলাকার বহু মানুষ ভেড়িতে মাছের চাষের কাজে যুক্ত। বলা হয়েছে, পাওয়ার গ্রিডের ফলে ভেড়ির জলের মাছ মরে যাবে, বহুফসলি জমি একফসলি হয়ে যাবে। ফলে জীবন-জীবিকা ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।[অশান্ত ভাঙড়, নিজের এলাকায় ঢুকতেই পারলেন না রেজ্জাক]
এই কথা ছড়িয়ে যাওয়ার পরই জমি-জীবিকা-বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি নামে একটি সংগঠন তৈরি হয় এলাকায়। তারাই মূলত পাওয়ার গ্রিডের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যেতে থাকে। তাদের দাবি ছিল অবিলম্বে ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিডের কাজ বন্ধ করতে হবে।[জোর করে জমি অধিগ্রহণ নয়, প্রয়োজনে পাওয়ার গ্রিড সরানো হবে : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়]
এদিকে বিক্ষোভ দেখে সরকারের তরফেও জানানো হয় যে পাওয়ার গ্রিডের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রাতে লুকিয়ে পাওয়ার গ্রিডের কাজ করছে সরকার। ফলে এলাকায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় আশ্বাস না দিলে এই আন্দোলন চলবে। আর এই প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।