তৃণমূলের লোককে আসতেই সরতে হল! একুশের আগে বিজেপিতে ‘বিদ্রোহী’ রাহুল সিনহা
মুকুল রায় বিজেপির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি হওয়ার দিনেই পদ হারাতে হয়েছে রাহুল সিনহাকে। মুকুল রায়ের পদপ্রাপ্তির দিনেই বঙ্গ বিজেপিতে বিদ্রোহের সুর চওডা হল। পদ হারিয়ে 'বিদ্রোহ' করলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা। কেন্দ্রীয় সম্পাদকের পদ হারানোর পর রাহুল বলেন, ১০-১২ দিনের মধ্যেই তিনি যা বলার বলবেন।

৪০ বছর দলকে সেবা করার পুরস্কার
রাহুল এদিন বিদ্রোহোর সুরে বলেন, ৪০ বছর দলকে সেবা করার এটাই পুরস্কার! বিজেপির কর্মী হিসেবে কাজ করেছি। জন্মলগ্ন থেকে বিজেপিকে সেবা করার পুরস্কার দিল দল। পার্টি যে পুরস্কার দিল তার পক্ষে বিপক্ষে কিছু বলতে চাই না। যা বলার ১০-১২ দিনের মধ্যে বলব। রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও বিশেষ ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন রাহুল।

তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা আসতে আমাকে সরতে হল
রাহুল সিনহা দুঃখের সঙ্গে বলেন, যে দলের ৪০ বছর সেবা করেছি, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা আসতে আমাকে সরতে হবে সেই দল থেকে। এর থেকে বড় দুর্ভাগ্যের বিষয় হতে পারে না। উল্লেখ্য, তৃণমূল ছেড়ে আসা অনুপম হাজরকে কেন্দ্রীয় সম্পাদক করা হয়েছে রাহুল সিনহাকে সরিয়ে। মুকুল-ঘনিষ্ঠকে জায়গা করে দিতেই তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন রাহুল সিনহা।

কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক রাহুল সিনহা বাদ
বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে যখন বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে মুকুল রায়-সহ তিনজনকে পদ দেওয়া হল, তখন দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক রাহুল সিনহাকে বাদ পড়তে হল। তাঁকে কেন্দ্রীয় সম্পাদক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। রাহুলের এই অপসারণে বঙ্গ বিজেপিতে ফের সিঁদুরে মেঘ দেখা দিয়েছে।

রাহুল সিনহা অপমানিত বোধ করছেন
রাহুল সিনহা এখন নেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কমিটিতে। আবার নেই রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কমিটিতে। শুধু রাজ্য কর্মসমিতির সদস্য হিসেবে তাঁর নাম রয়েছে। বিজেপিতে এই পদস্পখলন রাহুল সিনহা তাঁর অপমান বলে মনে করছেন। তাই তিনি এবার ভেবেচিন্তে একটা সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন বলে দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন।

বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন রাহুল সিনহা
শনিবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে রদবদল করেন। নতুন তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায় সেই তালিকায় নাম নেই রাহুল সিনহার। কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক পদ থেকে তাঁকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে। তার জায়গায় বাংলা থেকে ঢুকেছে মুকুল-ঘনিষ্ঠ অনুপম হাজরার নাম। তার ফলে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন রাহুল সিনহা!

রাহুলের গুরুত্ব হ্রাসের পিছনে কে
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে রাহুল সিনহাকে নিয়ে। যদি বাংলাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েই থাকে ২০২১-এর নির্বাচনকে লক্ষ্য করে, তাহলে রাহুল সিনহার ডানা ছাঁটা হল কেন। তাঁকে কেন সরিয়ে দেওয়া হল কেন্দ্রীয় পদ থেকে? রাজনৈতিক মহলে তা নিয়ে চর্চা চলছে। রাহুলের গুরুত্ব হ্রাসের পিছনে তাঁর সাম্প্রতিক ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় বিজেপি ক্ষুণ্ণ রাহুলের প্রতি, কেন
সম্প্রতি রাহুল সিনহা খুল্লামখুল্লা সমর্থন জানিয়ে বসেছিলেন তথাগত রায়কে। তথাগত রায় টুইট করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মুখ হতে চেয়েছিলেন। তখন পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন রাহুল সিনহা। তারপর মেঘালয়ের রাজ্যপালের পদ ছেড়ে বাংলার ফিরে আসতেই বিমানবন্দরে তথাগত রায়কে সাদর সম্ভাষণ জানাতে হাজির হয়েছিলেন রাহুল অনুগামীরা। তাতেই কেন্দ্রীয় বিজেপি ক্ষুণ্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।