নির্দল হয়ে দলের প্রার্থীকে হারালে কাটা পড়বে নাম, চরম হুঁশিয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
নির্দল হয়ে দলের প্রার্থীকে হারালে কাটা পড়বে নাম, চরম হুঁশিয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
নির্দল হয়ে দলের প্রার্থীকে হারানো হচ্ছে। এই বিশৃঙ্খলা কখনই মানব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে দলের সাংগঠনিক বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন, দলের প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও কেন ব্যক্তিগত কাউকে সমর্থন করা হচ্ছে। কেন নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করা হচ্ছে। কয়েকজন আবার প্রেসকে বিবৃতি দিচ্ছে দলের বদনাম করতে। তাঁদের চরম হুঁশিয়ারি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নির্দলরা তো বটেই, যাঁরা তাঁদের সমর্থন করবেন, সেইসব নেতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁর সাফ কথা, কিছু নেতা নির্দলকদের নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাঁদের গাড়িতে নিয়ে ঘুরছে, ছবি তুলছে, নানা বিবৃতি দিচ্ছে। এঁদের বারবার বলা সত্ত্বেও কাজ হচ্ছে না। এমন সাত-আট জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এঁদের নাম ডিসিপ্লিনারি কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মমতার সাফ কথা যাঁরা নির্দল হয়েছেন, যাঁরা নির্দলদের সঙ্গে ঘুরছেন, তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে। শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাঁরা শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছেন তাঁদের প্রথমে সতর্ক করা হবে। তারপর শোকজ করা হবে। দুবার শোকজ হয়ে গেলেই সাসপেন্ড করা হবে। সোজা নাম কেটে দেওয়া হবে তৃণমূল থেকে।
মমতা এদিন নজরুল মঞ্চ থেকে বার্তা দেন, যাঁরা নির্দলদের ইন্ধন দিচ্ছেন তাঁরা সাবধান। তিনি বলেন, তৃণমূল ভদ্রতা করে বলে অনেকে আমাকে দুর্বল ভাবতে শুরু করেছিল। প্রত্যেকের খবর আমার কাছে আছে। কীসের জন্য নির্দলকে সমর্থন? যেখানে দলের প্রার্থী নেই, সেখানে নির্দলকে সমর্থন করুন ঠিক আছে। কিন্তু দলের প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও ওই কাজ কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। নির্দল হয়ে দলের প্রার্থীকে যাঁরা হারিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মমতা বলেন, টিকিট কাকে দেওয়া হবে, তা ঠিক করবে দল। আর টিকিট না পেলেই নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়া। হুটহাট বিবৃতি দিয়ে ভাইরাল হওয়া চলবে না। এসব শৃঙ্খলাভঙ্গ বলেই ধরে নেওয়া হবে। মমতা জানিয়ে দেন, আপনাদের শেষ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূল করলে আদর্শ নিয়ে করতে হবে। লড়াই করতে হবে। ভোটে জিতে মানুষের সঙ্গে থাকতে হবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি করে দেন। তিনি পাঁচজনের কমিটিতে রাখেন সুব্রত বক্সি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এই কমিটিকে তিনি অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান। তিনি এদিন বিজেপিকেও একহাত নেন। বিজেপি বিধানসভায় চূড়ান্ত অসভ্যতা করেছে। লড়ার ক্ষমতা নেই, শুধু ষড়যন্ত্র করছে কয়েকজন নেতা। পুরভোটে হেরে গিয়েও লজ্জা নেই বিজেপির। সরকারকে কাজ করতে না দেওয়ার পরিকল্পনায় গোলমাল পাকানো হচ্ছে। তৃণমূল ৫ মে থেকে ২১ জুলাই তিন ধাপে জনসংযোগের বার্তা দিয়েছেন। মমতা বলেন, সব সময় কাজ করতে হবে। সময় নষ্ট করা যাবে না। ভোটে জিতেই ভুলে গেলে চলবে না।