জগদ্ধাত্রীর পুজোর আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি কুমোরপাড়ায়
দুর্গাপুজোর পরে কালি পুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই কলকাতায় শুরু হয়ে গেছে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রস্তুতি। এদিকে কাজের ঠেলায় একপ্রকার নিঃশ্বাস ফেলার ফুরসৎ পাচ্ছেননা কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা। ক্রেতাদের হাতে ঠাকুর তুলে দেওয়ার জন্য হাতে সময় আর মাত্র একদিন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে দিনরাত এক করে ফেলেছেন প্রতিমা নির্মাতারা।
চন্দননগর, কৃষ্ণনগরের মতো জায়গায় জগদ্ধাত্রী পুজো পাঁচদিন ধরে পালিত হলেও কলকাতায় পুজো হয় মাত্র দুদিন। শাস্ত্র মেনে নবমী আর দশমীতেই মহাসমারোহে জগদ্ধাত্রী আরাধনায় মেতে ওঠে তিলোত্তমা। এই বছর চলতি মাসের ৬ তারিখে পুজো শুরু হবে কলকাতায়। তাই পুজোর আগে এবার মণ্ডপে প্রতিমা নিয়ে যেতে কুমোরটুলির পথে শহরের একাধিক পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা। শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততায় তাই নাভিশ্বাস ওঠার জোগার কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীদের ।
কুমোরটুলির এক মৃৎ শিল্পীর কথায়, "পুজো উদ্যোক্তাদের হাতে প্রতিমা তুলে দেওয়ার বড্ড কম সময় পাই আসলে। এদিকে মাটির প্রতিমা ভিজে থাকায় খারাপ আবহাওয়ার কারণে রোদে শুকনো হতে অনেকদিন সময় লাগে। তাই দিন রাত এক করে গ্যাস বাতি জ্বেলে প্রতিমা শুকনোর কাজে লেগে থাকতে হয় আমাদের"
জগদ্ধাত্রী প্রতিমার দামের প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে এক মৃৎশিল্পী বলেন, "ঠাকুরের দাম তার উচ্চতা এবং আকারের উপর নির্ভর করে। কলকাতায় খুব বড় আকারের জগদ্ধাত্রী ঠাকুর বিশেষ কেউ নেয়না। আমাদের এখানে মোটামুটি ২০,০০০ থেকে শুরু করে ৪০,০০০ টাকার মধ্যেই মাঝারি আকারের প্রতিমা পাওয়া যায়।"
কিভাবে তৈরি করা হয় প্রতিমা এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হলে উত্তরে এক শিল্পী বলেন, “ প্রথমে বাঁশের কাঠামো তৈরি করে তাতে খড় দিয়ে জড়িয়ে প্রতিমার আকার দেওয়া হয়। তারপর তার উপর মাটির প্রলেপ দেওয়া হয়। মাটি শুকিয়ে যাওয়ার পর রং করা হয় প্রতিমাতে। অবশেষে অলঙ্করণের পর্ব শেষের পর মূর্তি গুলি পাড়ি দেয় মণ্ডপের উদ্দেশ্যে ।”
তবে বছরভর ক্রমেই জগদ্ধাত্রী ঠাকুরের চাহিদা বাড়ছে বলেই মনে করছে কুমোরটুলির শিল্পীরা। অপর এক মৃৎশিল্পীকে এই বিষয়ে বলতে শোনা যায়, " চলতি বছরে ইতিমধ্যেই আমরা প্রায় ১০০০টা প্রতিমা বানাতে পেরেছি বিক্রির জন্য। প্রায় ১০০টির বেশি প্রতিমা ইতিমধ্যেই কুমোরটুলি থেকে চন্দননগরের বিভিন্ন মণ্ডপে চলে গেছে। বাকি প্রতিমা সোমবার ও মঙ্গলবারের মধ্যেই বিক্রি হয়ে যাবে বলেই আমরা আশাবাদী।”