ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ধেয়ে আসছে, পুরনো ঝড়ের স্মৃতিতে গত তিন দশকের ৮ টি সুপার সাইক্লোন
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ধেয়ে আসার মুহূর্তে পুরনো ঝড়ের স্মৃতি, একনজরে ৮ সুপার সাইক্লোন
২১ বছরের মধ্যে এত বড় ঘূর্ণিঝড় হয়নি বঙ্গোপসাগর উপকূলে। বাংলাতে তো এতবড় সাইক্লোন ধেয়ে আসেনি সুদূর অতীতে। এবার সুপার সাইক্লোন আম্ফানের অভিমুখ সরাসরি বাংলার দিকে। এই পরিস্থিতিতে ফিরে ফিরে আসছে পুরনো সব ঝড়ের স্মৃতি। বিশেষজ্ঞরা তাঁদের মতো করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন সুপার সাইক্লোন আম্ফান আসার পূর্ব মূহূর্তে। বিগত ৩০ বছরে অনেক বড় বড় ঝড়ের সাক্ষী থেকেছে বঙ্গোপসাগর। এবার বছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড়ই সাংঘাতিক রূপ নিয়ে ধেয়ে আসছে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান (কেউ উমপুন বা আমফান-ও বলছেন) এখন সুপার সাইক্লোনে পরিণত। আছড়ে পড়ার সময় এর সম্ভাব্য গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৭৫ থেকে ১৯৫ কিলোমিটার। এছাড়া তিন দশকে এর থেকেও বড় আটটি ঝড় দেখা দিয়েছে বঙ্গোপসাগরে।
পারাদ্বীপের ঝড়
তিন দশকের মধ্যে সবথেকে প্রবল ঝড়় আখ্যা দেওয়া হয় এই ঘূর্ণিঝড়কেই। ১৯৯৯ সালের অক্টোবরে ওড়িশার পারাদ্বীপ উপকূলে আছড়ে পড়েছিল এই ঝড়। বাংলার উপকূলেও এর ঝাপটা পড়েছিল সাংঘাতিক। এই ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার। নাম ছিল না ঝড়ের।
বাংলাদেশের ঝড়
এরপরই সাংঘাতিক যে ঘূর্ণিঝড়ের কথা আসে, তা হল বাংলাদেশে আছড়ে পড়া ১৯৯১ সালের এপ্রিল মাসের। এই ঝড় ২৩৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় গতিবেগ নিয়ে আছড়ে পড়েছিল বাংলাদেশের উপকূলে। তার জেরে তছনছ হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের বিস্তীর্ণঁ এলাকা। এই ঝড়ের কোনও নামকরণ হয়নি।
বাংলাদেশ-মায়ানমারের ঝড়
১৯৯৪ সালের মে মাসে বাংলাদেশ-মায়ানমার উপকূলে প্রবল বেগে আছড়ে পড়েছিল এই ঝড়। এই ঘূর্ণিঝড়েরও কোনও নামকরণ হয়নি। তবে ঝড়ের গতিবেগ ছিল সাংঘাতিক। ঘণ্টায় ২১৩ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়েছিল এই ঝড়। বাংলাদেশ ও মায়ানমার উপকূলে ত্রাহি ত্রাহি রব তুলে দিয়েছিল এই ঘূর্ণি।
ঘূর্ণিঝড় ‘সিডার’
এরপরই যে ঝড়ের নাম আসে, তা হল ঘূর্ণিঝড় ‘সিডার'। সিডার ২০০৭ সালের নভেম্বরে আছড়ে পড়েছিল বাংলাদেশে। ঘূর্ণিঝড় ‘সিডারে'র গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২১৩ কিলোমিটার। বাংলাদেশের প্রভূত ক্ষতি হয়েছিল এই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে। লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
ঘূর্ণিঝড় ‘পিলিন’
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘পিলিন' আছড়ে পড়েছিল ওড়িশার উপকূলে। সালটা ছিল ২০১৩। ২০১৩-র অক্টোবরে ঘণ্টায় ২১৩ কিলোমিটার বেগে এই ঝড় আছড়ে পড়েছিল। ওড়িশা উপকূলবর্তী অঞ্চলে তাণ্ডব চালিয়েছিন এই ঘূর্ণিঝড় ‘পিলিন'। সেই ঘা এখনও ওড়িশাবাসীর মান দগদগে।
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’
এরপর আরও এক ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছিল ওড়িশায়। ২০১৯ সালে মে মাসের সেই ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী'র ক্ষতচিহ্ন এখনও শুকোয়নি ওড়িশা থেকে। সমুদ্রের ধার বরাবর বৃক্ষরাজির অসহায় সমর্পণের দৃশ্য দেখলে মন ভারাক্রান্ত হয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী'র গতিবেগ ছিল ২০৫ কিমি প্রতি ঘণ্টায়।
ঘূর্ণিঝড় ‘গিরি’
এরপর যে ঝড়ের নাম আসবে তা হল ঘূর্ণিঝড় ‘গিরি'। ২০১০ সালের অক্টোবরে মায়ানমারের বুকে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘গিরি'। তার সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৯৪ কিলোমিটার। এই ঘূর্ণিঝড় ‘গিরি'ও প্রভুত ক্ষতিসাধন করেছিল মায়ানমারের।
ঘূর্ণিঝড় ‘হুদহুদ’
ঘূর্ণিঝড় ‘হুদহুদ'ও বিরাট শক্তি বাড়িয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আছড়ে পড়েছিল। ২০১৪ সালের অক্টোবরে ধেয়ে আসা সেই ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে অন্ধ্রপ্রদেশ ও প্রতিবেশী তেলেঙ্গানার প্রভুত ক্ষতি হয়েছিল। ক্ষতি হয়েছিল ওড়িশাতেও। এই ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই কাশ্মীরে সিঁধ কাটছে পাকিস্তান, শান্তি ভঙ্গে তৈরি রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট