শহিদ দিবসের মঞ্চে বক্তব্য রেখে বিতর্ক উসকে দিলেন সেই কবীর সুমন
কলকাতা, ২১ জুলাই : মাঝে তৃণমূল কংগ্রেস ও দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্ক প্রায় ছিন্ন হতে বসেছিল। দল ও দলনেত্রী সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করে প্রায় কোপের মুখে পড়েছিলেন একসময়ের যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ। ৬ বছর আগে দলত্যাগ করতে করতেও ফিরে আসেন। [এদিন শহিদ দিবসের মঞ্চে দাঁড়িয়ে যে বক্তব্য রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়]
এদিন শহিদ দিবসের মঞ্চে অনেক বড় বড় নেতাকে পিছনে ফেলে মাইকে বক্তৃতা করতে চলে আসেন কবীর সুমন। আর এসে যা বললেন তা ব্যক্তিগত মত হলেও অবশ্যই বিতর্কিত। [শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেতারা যে বক্তব্য রাখলেন]
কবীর সুমন এদিন সারদা চিটফান্ড মামলায় জেলবন্দি মদন মিত্রর প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তিনি এদিন তাঁর না থাকা নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন। বলেন, আমি রাজনীতির লোক না। মমতা ও যুগের নির্দেশে আমি ভোটে দাঁড়িয়েছি। আমি মদন মিত্রকে ব্যক্তিগতভাবে মিস করছি। মদনের মতো ছেলে হয় না। আমি চাই, এ যেন তাড়াতাড়ি ছাড়া পায়। [শহিদ দিবসে বিরোধী দলে ভাঙন, বাম-কংগ্রেস ছেড়ে দলে দলে যোগ তৃণমূলে]
তাঁর আরও বক্তব্য ছিল, সিপিএমের অত্যাচারের বিরুদ্ধে মমতা একা দাঁড়িয়ে লড়াই করেছেন। মুকুল রায়, মদন মিত্ররা পাশে থেকেছেন। মদনের মতো লোক পাওয়া কঠিন। কবীর সুমন রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির আর্জিও জানান মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তাঁর কথায়, আজ থেকে তিনশো বছর পরে মমতার নামে পুজো-আচ্চা হবে।
প্রসঙ্গত, মহাশ্বেতাদেবীর অনুরোধে ২০১০ সালে দল থেকে বেরিয়ে না গেলেও মাঝের কয়েকবছর দলের সঙ্গে সেভাবে যোগাযোগ ছিল না বাংলা আধুনিক গানের প্রথিতযশা এই গায়কের। এছাড়া শারীরিক কারণও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল। ফলে দলে ব্রাত্য হয়ে কবীর সুমন খানিক দূরেই ছিলেন অভিমান করে।
তবে গতবছর থেকে পরিস্থিতি কিছুটা পাল্টায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় নিজে উদ্য়োগ নিয়ে কাছে টেনে নেন কবীর সুমনকে। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গীদের তালিকাতেও তিনি ছিলেন। এরপর সরকারে তরফেও কবীর সুমনকে সম্মানিত করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আর এদিন শহিদ দিবসের মঞ্চে একেবারে অনেককে পিছনে ফেলে বক্তব্য রাখতে চলে আসেন কবীর সুমন। আর তাতে দলের ভাবমূর্তি হয়ত ক্ষুণ্ণ হয়নি, তবে হঠাৎ করে তাঁর কথায় কিছুটা তাল কেটে যায় সভার। তবে আগাগোড়া স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই ছিলেন কবীর সুমন। তিনি নিজেকে অরাজনৈতিক বলে দাবি করেছেন, ফলে দলের কী মনে হল তাতে কিছু কি যায় আসে?