কলেজের ইউনিয়ন রুমে ছাত্রীকে শারীরিক নিগ্রহ, অভিযুক্ত টিএমসিপির জিএস, ভাইরাল হল ভিডিও
হুগলির রিষড়ার বিধানচন্দ্র কলেজে ছাত্র সংসদের মহিলা পদাধিকারীকে ইউনিয়ন রুমে নিগ্রহের ঘটনায় এখনও অধরা কলেজের ছাত্র সংসদের জিএস। এদিকে অভিযুক্ত জিএসকে পদ ছাড়তে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টিএমসিপির প্রধান।
হুগলির রিষড়ার বিধানচন্দ্র কলেজে ছাত্র সংসদের মহিলা পদাধিকারীকে ইউনিয়ন রুমে নিগ্রহের ঘটনায় এখনও অধরা কলেজের ছাত্র সংসদের জিএস। এদিকে অভিযুক্ত জিএসকে পদ ছাড়তে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টিএমসিপির প্রধান জয়া দত্ত।
কলেজের ইউনিয়ন রুমে নিগ্রহ
হুগলির রিষড়ার বিধানচন্দ্র কলেজ। কলেজে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় রয়েছে টিএমসিপি। জিএস-এর নাম শাহিদ হাসান খান। তাঁর অবশ্য অন্য পরিচয়ও আছে। তিনি রিষড়া পুরসভার উপ-প্রধান জাহিদ হাসান খানের ছেলে। এহেন নেতার ছেলেই বিরুদ্ধেই কলেজের ইউনিয়ন রুমে কলেজেরই তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীকে মারধর, যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ শুধু নয়, ছবি ধরা পড়েছে কলেজেরই সিসিটিভি ক্যামেরায়।
নিগ্রহে অভিযুক্ত কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক
অভিযোগকারী ছাত্রী কলেজের ক্রীড়া সম্পাদকও বটে। তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে একই রকমের আচরণ করছে জি এস শাহিদ হাসান খান। তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীর অভিযোগ, তিনি ইউনিয়ন রুমে বসেছিলেন। সন্দেহের বশেই তাঁর ফোনটি দেখতে চান শাহিদ হাসান খান। কিন্তু তিনি তা না দেওয়ার ইউনিয়ন রুমেই ছাত্রীর ওপর হামলা চালায় শাহিদ। পেটে লাথি মারা হয়। চলে কিল-চড়-ঘুষি। গলায়ও হাত দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। এমন কী কাঁচের গ্লাস ভেঙে তাঁর পেটে ঢোকানোর চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ। টাকা নিয়ে জাল বিল করে টিচার-ইন-চার্জের কাছে দিয়ে জিএস টাকা নয়-ছয় করত বলে অভিযোগ। জিএস-এর কোনও কাজে বাধা দিতে গেলে বাবা জাহিদ হাসান খানের নাম করে ভয় দেখাত। বাড়িতে গুণ্ডা পাঠিয়ে খুন করে দেওয়ার হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ শাহিদের বিরুদ্ধে। ছাত্রীর বাবা-মাকেও বিষয়টি নিয়ে ফোন করা হয়।
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ
ছাত্রীর আরও অভিযোগ, কলেজের অধ্যক্ষ রমেশ কুমারকে জানিয়েও কোনও ফল মেলেনি। কেননা অধ্যক্ষ নিজেও তৃণমূল সমর্থক এবং তিনি রিষড়া পুরসভার উপ-প্রধান জাহিদ হাসান খানের বন্ধুও বটে। ফলে অভিযোগ সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থাই নেননি তিনি। অভিযোগে সত্যতার প্রমাণ মেলে ছবিটা দেখলেই। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সিসিটিভির মূল ইউনিটটি রয়েছে অধ্যক্ষের ঘরেই। বুধবার ওই ছাত্রী চন্দননগরের এসডিপির কাছে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি বলেই জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ। বিষয়টি নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ।
টিএমসিপি প্রধানের নিদান
রাজ্য টিএমসিপির প্রধান জয়া দত্ত জানিয়েছেন, কলেজের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে শাহিদ হাসান খানকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ছাত্রীর নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকেও ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
আইনজীবী মহলের মন্তব্য
কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে কে পদত্যাগ করলেন, তাতে সাধারণ মানুষের কিছু যায় আসে না বলে মন্তব্য করেছেন আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হওয়া উচিত। অভিযুক্তকে গ্রেফতার না করলে, প্রশাসনের ওপর থেকে সাধারণ মানুষের ভরসা চলে যাবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।